সেলিম রেজা সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি ; সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগে নুরুজ্জামান নামে এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই স্কুলছাত্রী বর্তমানে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
আজ শনিবার বিকেলে সহকারী শিক্ষক নুরুজ্জামানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তিনি চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুরের মাঝগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা মাসুদ পাভেজ জানান, চৌহালী উপজেলার এনায়েতপুরের মাঝগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নুরুজ্জামান একই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে প্রায় সাড়ে ৫ মাস আগে স্কুল ছুটির পর কথা আছে বলে ক্লাসরুমে ডাকে। এরপর তার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে।
ওসি জানান, এ সময় ছাত্রীটি কান্নাকাটি শুরু করলে শিক্ষক নুরুজ্জামান তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ১০০ টাকা দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেন। ঘটনাটি কাউকে বললে তাকেসহ পরিবারের সবাইকে খুন করার হুমকি দেয়। ভয়ে ওই ছাত্রী ঘটনাটি কাউকে জানায়নি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তার বাবা-মা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। গত ২৭ মে বেলকুচি বিসমিল্লাহ্ আধুনিক হাসপাতালে মেয়েটির আলট্রাসনোগ্রাফি করা হয়। সেই রিপোর্টে মেয়েটি ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে উল্লেখ করা হয়।
ওসি আরও জানান, এ বিষয়ে স্কুলছাত্রীর বাবা আজ দুপুরে এনায়েতপুর থানায় নুরুজ্জামানকে প্রধান আসামি করে মামলা করলে বিকেলে পুলিশ বিদ্যালয় থেকে ওই শিক্ষক নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে।
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী দৈনিক আমাদের সময়কে বলেন, ‘স্কুল ছুটির পর নুরুজ্জামান স্যার আমাকে ভালো ভাবে ডাকে। ক্লাসে নিয়ে মুখ চেপে ধরে নির্যাতন করে। পরে ১০০ টাকা দিয়ে এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্য বলে। ঘটনাটি তার পরিবারকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়।’
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, ‘দিনমুজুরি করে খাই। আমাদের কোনো লোকজন নাই। শিক্ষক বিত্তশালী হওয়ায় অনেকেই বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার ন্যায় বিচার চাই।’
এ বিষয়ে এনায়েতপুর বিসমিল্লাহ আধুনিক হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রিমা আক্তার জানান, মেয়েটির আলট্রাসনোগ্রাফি করার পর ৫ মাস ৪ দিনের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার রিপোর্ট এসেছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্মসাধারণ সম্পাদক রুখছানা ইসলাম জয়া বলেন, ‘এ ঘটনার সুষ্ঠু ও ন্যায় বিচার নিশ্চিতে নির্যাতিতা ওই স্কুলছাত্রীকে আমাদের পক্ষ থেকে সকল প্রকার আইনি সহায়তা দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর ফিরোজ জানান, একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উদ্বেগ ও দুঃখজনক। দোষী প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Comment here