নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ ৩৭ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪০ থেকে ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর।
নিজের ও সহযোগীদের ওপর হওয়া হামলার ঘটনায় এ মামলা করেন ডাকসু ভিপি। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তার পক্ষে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান। গণমাধ্যমকে তিনি জানান, নুরুল হকের মামলার সঙ্গে পুলিশের করা মামলার এজাহার সমন্বয় করার জন্য বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হবে।
মামলার এজাহারে ভিপি নুর বলেছেন, গত ২২ ডিসেম্বর আনুমানিক দুপুর ১২টার দিকে আমি, আমার সংগঠনের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমার কক্ষে অবস্থান করছিলাম। হঠাৎ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতা-কর্মীরা আমার কক্ষে প্রবেশ করে অতর্কিতভাবে লাঠি-সোঁটা নিয়ে হামলা করে চলে যায়। তারা যেন আবারও হামলা করতে না পারে, তাই ডাকসুর কর্মচারীদের সহায়তায় ডাকসুর মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু এর কিছুক্ষণ পরই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর এজিএস সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ডাকসু কর্মচারীদের সরিয়ে মূল ফটকের তালা খুলে আমার কক্ষে প্রবেশ করেন। তারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে দ্বিতীয় দফা হামলা চালান।
এজাহারে বলা হয়, তারা আমার কক্ষের বাতি নিভিয়ে দিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ও আমার সংগঠন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। হামলায় আমার ডান হাত ও ডান পাঁজর মারাত্মকভাবে জখম হয়। আমাকে বাঁচাতে গিয়ে আমার সংগঠনের নেতা-কর্মী ফারুক হাসান, মুহাম্মদ রাশেদ খান, এ পি এম সুহেল, হাসান আল মামুন, আমিনুর ইসলাম, তুহিন ফারাবী, মেহদী হাসান, নাজমুল হাসান, আয়াতুল্লাহ বেহেশতী, রবিউল হোসেন, মশিউর রহমান, সাইফুল ইসলাম, আবু হানিফ ও আরিফুর রহমানসহ ৩০ জন গুরুতর আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়ে ফারাবী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে আছেন। অন্যরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই অতর্কিত হামলায় প্রকাশ্যে নেতৃত্ব দেন সনজিত চন্দ্র দাস ও সাদ্দাম হোসেন।
মামলা এজাহারে উল্লেখ করা নামগুলো হলো, সনজিত চন্দ্র দাস, সাদ্দাম হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তূর্য, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন বিন সাত্তার, মাস্টারদা সূর্যসেন হল সংসদের ভিপি মারিয়াম জাহান খান, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ তানিন, স্যার এ এফ রহমান হল সংসদের ভিপি আবদুল আলীম খান, জিএস আব্দুর রহিম সরকার ও সাহিত্য সম্পাদক তানজিল ইমরান তালাশ, বিজয় একাত্তর হল সংসদের এজিএস আবু ইউনূস, ডাকসুর সদস্য রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য ও মাহমুদুল হাসান, ডাকসুর স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি রবিউল হাসান রানা, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক উপসম্পাদক নিয়ামত উল্লাহ তপন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হাসিবুল হোসেন শান্ত, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক সিফাতুজ্জামান খান, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল সংসদের জিএস মেহেদী হাসান মিজান, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফেরদৌস আলম, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বাবু, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা ইবনুল হাসান উজ্জ্বল ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক স্কুলছাত্রবিষয়ক উপসম্পাদক খাজা খায়ের সুজন।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিলন খান, কবি জসীমউদদীন হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক হৃদয় হাসান সোহাগ, ছাত্রলীগ নেতা মো. উজ্জ্বল, আরিফুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেত্রী ফাতিমা রিপা, মঞ্চের একাংশের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ও আইনুল ইসলাম মাহবুব, নেতা মেহেদী হাসান নিবিড়, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল সংসদের জিএস মেহেদী হাসান শান্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জীবন রায়।
Comment here