নিজস্ব প্রতিবেদক : নিজ বিভাগের প্রধানের অনুমতি ছাড়া কোনো সরকারি কর্মচারী সংবাদমাধ্যমে কথা বলতে কিংবা অনলাইনে বক্তব্য, মতামত বা নিবন্ধ প্রকাশ করতে পারবেন না। বিষয়টি মেনে চলতে সরকারি কর্মচারীদের নির্দেশ দিতে মন্ত্রণালয়ের সচিব/জ্যেষ্ঠ সচিবদের কাছে চিঠি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালায় থাকা এমন বিধান মনে করিয়ে দিয়ে তা প্রতিপালনের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে গত মঙ্গলবার এ চিঠি দেয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ওই বিধিমালার ২২ নম্বর বিধির ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোনো কোনো সরকারি কর্মচারী বিভাগীয় প্রধানের অনুমোদন ছাড়া কিংবা প্রকৃত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্র ছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে বেতার ও টেলিভিশনের সংবাদ, টকশো, আলোচনা অনুষ্ঠান, পত্র-পত্রিকা বা অনলাইন মাধ্যমে বক্তব্য বা মতামত বা নিবন্ধ বা পত্র প্রকাশ করছেন। সরকারের নীতি-নির্ধারণী অনেক বিষয়েও তারা বক্তব্য বা মতামত দিচ্ছেন
এতে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারীরা বিভাগীয় প্রধানের অনুমোদন ছাড়া কিংবা ‘প্রকৃত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্র’ ছাড়া বেতার কিংবা টেলিভিশনের সম্প্রচারে অংশগ্রহণ করতে অথবা কোনো সংবাদপত্র বা সাময়িকীতে নিজ নামে অথবা বেনামে অথবা অন্যের নামে কোনো নিবন্ধ বা পত্র লিখতে পারবে না। এ ধরনের ক্ষেত্রে অনুমোদন দেওয়া হবে যদি ওই সম্প্রচার বা নিবন্ধ বা পত্র সরকারি কর্মচারীর ন্যায়পরায়ণতা, বাংলাদেশের নিরাপত্তা অথবা বিদেশি রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত না করে অথবা জনশৃঙ্খলা, শালীনতা, নৈতিকতার বিঘ্ন না ঘটায় অথবা আদালত অবমাননা, অপবাদ বা অপরাধ সংগঠনের প্ররোচনা হিসেবে গণ্য না হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ওই সম্প্রচার, নিবন্ধ বা পত্র যদি পুরোপুরি শিল্প-সাহিত্যধর্মী অথবা বিজ্ঞানভিত্তিক অথবা ক্রীড়া সম্পর্কিত হয়, তাহলে আগে থেকে অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন হবে না। এ ছাড়া বিভাগীয় কমিশনার অথবা জেলা প্রশাসক অথবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যদি সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করার জন্য সম্প্রচারে অংশ নেন, তাহলেও বিভাগীয় প্রধানের অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না।
উল্লেখিত বিষয়গুলো মনে করিয়ে দিয়ে চিঠিতে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালার ২২ নম্বর বিধি অনুসরণ করার জন্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং অধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর বা সংস্থার কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে সচিবদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চিঠির বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘অনেক কর্মকর্তা ফেসবুকে এমনভাবে লিখছেন, যার ফলে মাঝে মধ্যেই বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে, অনেক সময় ওইসব লেখা নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়। এসব বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে সতর্ক থাকেন তাই আগের বিধিমালাটি মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
Comment here