তানবির খান, বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে নানামুখী সংকটে জর্জরিত রয়েছে। ২০১২ সালে শুরু করা জাতির পিতার নামের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টি কর্মচারী আন্দোলন ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী আন্দোলন ঘোলাটে করেছে পরিস্থিতিকে। বিশ্ববিদ্যালয় চলছে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের হাত ধরে।
সর্বশেষ অনুমোদনের দাবিতে ইতিহাস বিভাগের আন্দোলন ১১ তম দিনের মত অব্যাহত রয়েছে। আজ দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সাথে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি ঝটিকা বৈঠক হয়। বৈঠকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম খুলে দেওয়ার অনুরোধ আসলে একাডেমিক কার্যক্রম চলতে দিতে রাজি হয়নি শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, “স্যাররা বলেছেন, একাডেমিক কার্যক্রম খুলে দিতে। কিন্তু আমরা শুধু প্রশাসনিক কার্যক্রম চলতে দেওয়ায় রাজি হয়েছি, স্যাররা সেটা গ্রহণ করেনি।”
আরেক শিক্ষার্থী কারিমুল বলেন, “স্যাররা বলেছেন তোমাদের অবস্থান চাইলে ধরে রাখতে পারো, কিন্ত একাডেমীক-প্রশাসনিক কার্যক্রম করতে দাও। প্রশাসনিক কাজ বলতে আমাদের জন্য পেপারস-চিঠিপত্র তৈরি ইত্যাদি। কিন্তু আমরা আর আশ্বাসে বিশ্বাস করতে চাচ্ছি না। তবে তারা চাইলে শুধু প্রশাসনিক কাজ খোলা রাখতে পারে যেমন, ভিসি দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দপ্তর এই কয় বিভাগের কাজে আমরা বাধা দেবো না।”
আন্দোলন সীমিত করতে কর্মকর্তা কর্মচারীরাও চাপ দিচ্ছেন বলে জানা যায়। কারিমুল আরো বলেন, “কিছু কিছু কর্মচারী বলেন, আন্দোলন সীমিত না করলে আমরা অ্যাম্বুলেন্স চালাবো না। হলে রান্না করবোনা।”
আন্দোলন ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উদ্যোগের ব্যাপারে রেজিস্টার প্রফেসর ড. নুরুদ্দীন বলেন, “চলমান যে সংকট এটা নিরসনে কমিটি করা হয়েছে। সময় সময় আমরা তাদের একাডেমিক-প্রশাসনিক কাজ খুলতে নানাভাবে অনুরোধ করেছি। আজ ইউজিসি থেকে একটা বার্তা ছিলো আগামী ১৮ তারিখে শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করার। এই বিষয়ে কিছু অফিস ওয়ার্ক করতে দিতে ওদের অনুরোধ করেছিলাম।”
তিনি আরো বলেন, “অস্থায়ী কর্মচারীদের আন্দোলনের বিষয়টি নিয়ে ইউজিসিকে জানানো হয়েছে। আইসিটি ইন্সটিটিউট ও বিভাগের সংকট নিরসনে ভিসি স্যার একটা কমিটি করে দিয়েছেন, কিন্তু গেটলকের জন্য আমরা কোন কাজই করতে পারছিনা।”
এদিকে আন্দোলনের জন্য পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম থমকে থাকায় কিছু কিছু শিক্ষার্থী হতাশা প্রকাশ করেন। মনোবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের লেখাপড়ায় মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। ইউজিসির উচিৎ সংকট সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া।”
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই টাকা ভাঙতি না থাকার মত তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৩য় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখ্য, ইতিহাস বিভাগে তিনটি ব্যাচ ভর্তি হলেও কাগজে-কলমে অনুমোদন না থাকায় ইউজিসি বিভাগটি বন্ধের ঘোষণা দেওয়ায় বিপাকে পড়ে বিভাগের চার শতাধিক শিক্ষার্থী। দাবি আদায়ে তারা গত ৬ তারিখ থেকে একাডেমিক-প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিভাগ অনুমোদনের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করছে।
Comment here