নিজস্ব প্রতিবেদক : ইন্টারপোলের রেড নোটিশের তালিকায় ৬২ বাংলাদেশির নাম রয়েছে। তালিকায় যাদের নাম আছে তাদের প্রত্যেকের অপরাধের ধরন, ঠিকানা, বয়স ও ছবি দেয়া আছে। তবে সেখানে সম্প্রতি আলোচনায় আসা পুলিশ পরিদর্শক খুনের আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের নাম নেই।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার পর্যন্ত সংস্থাটির ওয়েবসাইটে আরাভ খানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: আরাভ খানের নামে ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিশ’
এর আগে সোমবার চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করেছে বলে জানান পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
তিনি বলেন, ‘আরাভ খানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করার জন্য ইন্টারপোলের কাছে পুলিশের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছিল। কিছুক্ষণ আগে জানতে পেরেছি, সেটা ইন্টারপোল করেছে।’
আরও পড়ুন: ১৩ অপরাধে হাত পাকিয়েছে আরাভ
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আরাভ খান ঢাকায় পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম, যিনি ভারতীয় পাসপোর্টে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই গেছেন। এখন তাকে ইন্টারপোলের সহায়তা নিয়ে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের সূত্র বলছে, আরাভ খান ভারতীয় নন, তবে তিনি ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করেছেন যেটি অবৈধ প্রক্রিয়া। বাংলাদেশ প্রথমে বিষয়টি প্রমাণ করবে। এতে করে দুবাই যাওয়ার ক্ষেত্রেও তিনি জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন, সেটি প্রমাণিত হবে।
একজন যদি জালিয়াতির মাধ্যমে অন্য দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করে দুবাই যান, তবে তিনি সেখানেও বড় ধরনের অপরাধে যুক্ত হতে পারেন। এ বিষয়েই কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে বার্তা দেওয়া হবে। তারপর সমঝোতার ভিত্তিতে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হবে বলে জানায় পুলিশ সূত্র।
এদিকে আরাভ খানের নামে রেড নোটিশ জারি হলে দুবাই থেকে তাকে ফেরানোর প্রক্রিয়া সহজ হবে না বলেই মনে করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। পুলিশ সদর দপ্তরের একটি সূত্র জানায়, দুই প্রক্রিয়ায় কোনো অপরাধীকে দেশে ফিরিয়ে আনা যায়। একটি হলো- কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। অন্যটি হলো- পুশব্যাক (কোনো দেশ নিজেদের উদ্যোগেই যদি ফেরত পাঠায়)।
আরও পড়ুন: বিয়ে করে ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নিতেন আরাভ
কূটনৈতিক প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি পারস্পরিক বোঝাপড়ার বিষয়। এটি নির্ভর করে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক ও বোঝাপড়া কেমন। এ ক্ষেত্রে বন্দী বিনিময় চুক্তি না থাকলেও অপরাধীকে ফেরানো যায়। তবে বন্দী বিনিময় চুক্তি থাকলে দুই দেশের মধ্যে এক ধরনের বাধ্যবাধকতা থাকে। এতে অপরাধীকে ফিরিয়ে আনা তুলনামূলক সহজ। তবে সেই চুক্তি না থাকলে অপরাধী ফিরিয়ে আনার বিষয়টি দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে।
জানা গেছে, হত্যা মামলা মাথায় নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে দুবাইয়ে পাড়ি জমানো আরাভ এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে দুবাইয়ে ‘আরাভ জুয়েলার্স’ নামে একটি গোল্ড শোরুমের সম্প্রতি উদ্বোধন করেছেন তিনি। এ ছাড়া বাড়ি-গাড়ি রয়েছে তার।
আরও পড়ুন: ইন্টারপোলের রেড নোটিশের খবরে ‘খোলা চিঠি’, যা লিখলেন আরাভ
Comment here