ইভিএমে আগ্রহের পেছনে ভোট ডাকাতির পরিকল্পনা - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
রাজনীতি

ইভিএমে আগ্রহের পেছনে ভোট ডাকাতির পরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সিদ্বান্তকে ডিজিটাল ভোট ডাকাতির এক মহা ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি।

আজ রোববার বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির নেতাদের সঙ্গে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

একাদশ জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে নানা ত্রুটি তুলে ধরে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিএনপি মহাসচিব।

ফখরুল বলেন, ‘দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্তকে বর্তমান দলবাজ নির্বাচন কমিশন ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ভবিষ্যতে এদেশের মানুষের ভোটের অধিকারকে স্থায়ীভাবে কেড়ে নেওয়ার এক মহাষড়যন্ত্র ও দুরভিসন্ধিই মনে করে বিএনপি। এদেশের মানুষের ভোটাধিকার রক্ষার দায়িত্ববোধ থেকে বিএনপি নির্বাচন কমিশনের ইভিএম ব্যবহারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ ও বাতিলের দাবি জানায়।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘রাজনীতি থেকে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে একটি অবরুদ্ধ গণতন্ত্রহীন দুর্বিষহ পরিবেশ সৃষ্টির সুদূঢ়প্রসারী চক্রান্ত দীর্ঘদিন যাবৎ ক্রিয়াশীল রয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার ধাপে ধাপে অত্যন্ত ঘৃণ্যভাবে এ চক্রান্ত বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে ভোটহীন তথা গণতন্ত্রহীন রাষ্ট্রে পরিণত করে চলেছে। আগামী ৩০ জানুয়ারি সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রায় ৫৪ লাখ ৩ হাজার ১০৯ জন ভোটার। জাতীয় নির্বাচনের পর দেশের বৃহত্তম এই নির্বাচন আয়োজনের পূর্বে কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যে ধরনের সংলাপ, শলা-পরামর্শ বা নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করার আবশ্যিকতা, তা কিছুই করেনি।’

ফখরুল বলেন, ‘ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে হুদা কমিশনের নেতৃত্বে ইভিএম ব্যবহারের যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে তা ভবিষ্যতে সরকার পরিবর্তনের যেকোনো নির্বাচনে প্রযুক্তির মাধ্যমে ভোটাধিকার হত্যার এক নিঃশব্দ প্রকল্প বাস্তবায়নের দুরভিসন্ধি মাত্র। আমরা গভীর হতাশা ও  ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, এই চক্রান্ত বাস্তবায়নে আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তিকেও ব্যবহার করার ঘৃণ্য অপতৎপরতা চলছে। যার অংশ হিসেবে ইভিএম প্রকল্পে সেনাসদস্য নিয়োগের প্রচার চালিয়ে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার ও নির্বাচন কমিশন এক গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।’

বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘বর্তমান দলবাজ নির্বাচন কমিশনের প্রতি এদেশের মানুষের নূন্যতম আস্থা নেই।  অতএব, এদেশের জনগণ ইভিএম পদ্ধতিতে তার ভোট প্রয়োগ করবে একতরফাভাবে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোনো নৈতিক অধিকার বর্তমান নির্বাচন কমিশনের নেই। ইভিএম ভোটার বান্ধব কোনো পদ্ধতি নয়। বরং সেই তুলনায় প্রচলিত কাগুজে ব্যালট ব্যবহারেই তারা অধিকতর স্বাচ্ছন্দ বোধ করে যেখানে তারা নিজেরাই তাদের ইচ্ছেমত মার্কায় সিল মেরে সন্তুষ্ট হতে পারে যে তিনি যাকে ভোট দিতে চান তাকেই তিনি তার মূল্যবান ভোটটি দিতে পেরেছেন। অথচ ইভিএমএ ভোটার অডিট ট্রেইল না থাকায় তিনি বুঝতেই পারবেন না তিনি যাকে ভোট দিতে চেয়েছেন ভোটটি তিনিই পেলেন কি না। আর এখানেই যত শুভঙ্করের ফাঁকি।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, ড. আবদুল মঈন খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান উপস্থিত ছিলেন।

Comment here