নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারই বিএনপির একমাত্র দাবি বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি, এই নির্বাচন কমিশন নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। মাথাব্যথা নির্বাচনকালীন সরকারে কারা থাকবে। যদি আওয়ামী লীগ সরকারে থাকে নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন কোনো নির্বাচন হবে না। কারণ, তারা আবার তাদের মতো করে একই কায়দা নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে। আর আমরা বসে বসে দেখব। আমরা সেই নির্বাচনে অংশ নেব না।’
আজ রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য ফ্রন্টের উদ্যোগে ‘কেরানীগঞ্জের ওসি আব্দুস সালামের সাম্প্রদায়িক উক্তি এবং অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীর ওপর হামলার প্রতিবাদে’ এ সভা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার অথবা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন তৈরি করে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান করে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
সংগঠনের আহ্বায়ক গৌতম চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও সদস্য দেবাশীষ রায় মধুর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ড, নির্বাহী কমিটির সদস্য রমেশ দত্ত, সুশীল বড়ুয়া প্রমুখ।
সরকারের ‘অপশাসন, দমনীতি ও ফ্যাসিবাদী’ শাসনের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রিকশাওয়ালা, ফল বিক্রেতা, মাছ বিক্রেতাসহ সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসা করেন- তারা বলে এই আওয়ামী লীগের হাত থেকে আমরা কবে মুক্তি পাব। গোটা সমাজকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে, সমাজের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করেছে। যেখানে যাবেন ভাগ ভাগ ভাগ। চাকরি পাবেন না যদি আওয়ামী লীগের ছাপ না থাকে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয় বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রকামী, তাদের ইতিহাস গণতন্ত্রের পক্ষে সংগ্রাম করবার ইতিহাস। কিন্তু বর্তমান সরকার আমাদের সমস্ত অর্জনগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে।
ওসির সাম্প্রদায়িক বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, নিপুন রায়কে অপমান করা কোনো সুনির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে অপমান নয়; বাংলাদেশকে অপমান, গণতন্ত্রকে অপমান। পুলিশ এই কথা বলার সাহস কোথা থেকে পায়। কারণ পুলিশকে সরকার রাতে ভোট করার কাজে ব্যবহার করেছে। র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের জন্য লজ্জার বলেও উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি এমন জায়গায় গিয়ে ঠেকেছে যে মানুষ খেতে পায় না-এগুলো বাস্তব এবং সত্য কথা। অথচ কোনো প্রতিবাদ নেই। আমরা রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিবাদ করছি, চেষ্টা করছি, মানুষ বেরিয়ে আসছে না কেন। মানুষকে বেরিয়ে আসতে হবে। এখানে একটা ফ্যাসিবাদি সরকার বসে আছে। ফ্যাসিবাদের চরিত্র হচ্ছে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হবে যে কেউ ভয়ে কথা বলতে পারবে না। দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
Comment here