ঈদ যাত্রায় সড়কে গাড়ির চাপ থাকলেও যানজট নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি পশুবাহী গাড়ি ও পশুর হাট যত্রতত্র বসিয়ে যেন জনদুর্ভোগ না বাড়ে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের যথাযথ দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানী ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন এবং নির্দেশনা দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাস্তার কারণে যানজট হবে এমন পরিস্থিতি নেই। বাংলাদেশে সর্বকালের সবচেয়ে ভালো সড়ক এখন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সরকারের আমলে হয়েছে। পশুর গাড়ি এবং পশুর হাটের কারণে কিছু যানজট হয়। পশুবাহি গাড়ি এবং পশুর হাট যত্রতত্র বসিয়ে যেন জনদুর্ভোগ না বাড়ানো হয় সে ব্যাপারে যাদের কাছে দায়িত্ব রয়েছে তারা যথাযথভাবে সে দায়িত্ব পালন করবেন। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ এড়ানো কঠিন। দায়িত্ব পালনে মনোযোগ দিতে হবে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানি না ঘটে সেজন্য মনিটরিং বাড়াতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের দেশে দেশে মূল্যস্ফিতী। বাংলাদেশেও উদ্বেগের কারণ এই মূল্যস্ফিতী। সরকার এখানে কোন কিছুই চাপা দিয়ে সত্যকে আড়াল করে কিছুই করেনি। বাজেট বাস্তবতার আলোকে ভারসাম্যমূলক। অনেকদিন ধরে দীর্ঘ চিন্তাভাবনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই বাজেট সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে একসময় ইউরোপেও উদ্বেগ ছিল। প্রায় ১০ শতাংশ ছিল মুদ্রাস্ফীতি। আর্জেন্টিনার মত দেশে মুদ্রাস্ফীতি ৩০০ শতাংশ। বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাবশালী দেশ তুরস্কে ৭৩ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানসহ আশপাশের দেশেও মুদ্রাস্ফীতির অবস্থা ভালো নয়।’
এ সময় বিএনপি’র দুর্নীতি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দুর্নীতিবাজরাই দুর্নীতির বিরুদ্ধে আজকে কথা বলে। বিএনপি টপ টু বটম দুর্নীতিবাজ। দুর্নীতির বরপুত্র দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাকে ভালো মানুষ সাজাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম একটা বিবৃতি দিয়েছেন। মির্জা ফখরুল তার হুমকিতে অনেক কিছুই করেন। এখন বলছে তাকে সাজা দেওয়া যাবে না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারেক রহমানের শাস্তি তো হয়েছে। এখন তাকে দেশে ফিরে এনে শাস্তি ভোগ করাতে হবে- এটাই প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। তারেক রহমান যতদিন বিএনপির নেতৃত্বে থাকবে ততদিন বিএনপি স্বাধীনতা নিয়ে রাজনৈতিকভাবে আত্মপ্রকাশ ঘটাবে এটা সম্ভব না। বিএনপি নির্বাচনে আসলে আগের মতো খরা হতো না। সার্বিক পরিস্থিতিতে তাদের সেই সুযোগ ছিল। তারেক রহমানকে ভালো মানুষ সাজানোর চেষ্টা করার কোন কারণ নেই। হঠাৎ করে সাত ধারা বাদ দিয়েছে কলমের এক খোচায়। বিএনপির সাত ধারা অনুযায়ী দণ্ডিত এবং দুর্নীতিবাজ কেউ দলটির নেতা হতে পারবেনা।’
এসময় এমপি আনার হত্যাকাণ্ডে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের রিমান্ড প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মামলা হওয়ার আগে, শাস্তি ঘোষণার আগে কাউকে অপরাধী বলা ঠিক নয়- এটাই নিয়ম। জেলা সেক্রেটারি রিমান্ডে এমন উদাহরণ কি বিএনপি এবং জেনারেল এরশাদের আমলে আছে? আওয়ামী লীগের বিচার করার সৎ সাহস আছে।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দিলীপ কুমার রায়ের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম রিপোর্ট হচ্ছে, মহানগর নেতৃবৃন্দ বলেছেন হাইকমান্ড সিদ্ধান্ত দিলে তারা ব্যবস্থা নিবেন এই বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন ‘আদালত স্বাধীন দুদক স্বাধীন, তারা যদি মনে করে ইনভেস্টিগেশন অভিযোগ পাওয়া গেছে সেখানে আমরা তাদের হস্তক্ষেপ করবো কেন? আমি শুধু এইটুকু বলব বিচার করার স্বাধীনতাও বিচার বিভাগের আছে।’
বর্তমান সরকার বিএনপি’র শত্রু -মির্জা ফখরুলের এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এদেশে বিএনপি’র বন্ধু হতে পারে সেই সরকার যে সরকার নির্বাচনে বিএনপিকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজয়ের নিশ্চয়তা দিবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দি, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাপা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, উপদপ্তর সম্পাদক এডভোকেট সায়েম খান সহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
Comment here