অনলাইন ডেস্ক : দেশের সবচেয়ে বড় যৌনপল্লিতে সাবেক এক কর্মীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত স্থানটিতে গত বৃহস্পতিবার হামিদা বেগম (৬৫) নামে এক নারীকে দাফনও করা হয়েছে ইসলামি নিয়ম অনুসরণ করে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, মাত্র ১২ বছর বয়সে জোরপূর্বক হামিদা যৌন পেশায় যুক্ত হয়েছিলেন।
হামিদা বেগমের মেয়ে লক্ষ্মী। তিনিও একজন যৌনকর্মী। মায়ের মৃত্যুর পর তার দাফন-কাফনের সুযোগ পেয়ে সন্তুষ্ট তিনি। জানান, তিনি স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি তার মায়ের কপালে সম্মানজনক বিদায় জুটবে। শেষপর্যন্ত তার মা মানুষের মতো সম্মান পেল।
ঝুমুর বেগম নামে যৌনকর্মীদের একটি দলের প্রধান জানান, তারা কোনো সময় মৃত কর্মীর দেহ মাটিকে পুঁতে ফেলতে সকালবেলা বের হলে স্থানীয়রা বাঁশ লাঠিসোঁটা নিয়ে তাদের তাড়া করত।
নিলি বেগম নামে এক বয়স্ক যৌনকর্মীর ভাষ্য, ‘মনে হতো কোনো মানুষ নয়, একটি কুকুর মারা গিয়েছে।’
স্থানীয় পুলিশ প্রধান আশিকুর রহমান বলেন, ‘ইমাম প্রথমে জানাজার নামাজ পড়াতে রাজি ছিলেন না। তখন আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ইসলাম ধর্ম একজন যৌনকর্মীর জানাজায় নিষেধাজ্ঞা আছে কী না। তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি।’
আশিকুর জানান, অন্তত ২০০ জন মানুষ হামিদা বেগমের জানাজায় অংশ নেন এ ছাড়া ৪০০ জন নারী-পুরুষ জানাজা পরবর্তী দোয়ার আয়োজন ও তবারক গ্রহণ করতে উপস্থিত ছিলেন।
ওই যৌনকর্মীর দাফন-কাফন করতে দৌলতদিয়ার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, জনপ্রতিনিধি এবং পুলিশ প্রশাসন ব্যাপক সহায়তা করেন। এরপর থেকে স্থানটিতে ইসলামি শরিয়া অনুসারে জানাজা ও দাফন অব্যাহত থাকবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
দৌলতদিয়ার যৌনপল্লিটিতে কোনো নারীকর্মী মারা গেলে তাদের নদীতে ফেলা দেওয়া হতো বা রাতের অন্ধকারে মাটিতে পুঁতে ফেলা হতো। কারণ, যৌনপেশা ইসলামি বিধি অনুসারে অনৈতিক ও অবৈধ। সে কারণে স্থানীয় ধর্মীয় নেতারা এতদিন যৌনকর্মীদের জানাজা পড়ানোর অনুমতি দিত না।
Comment here