বিনোদন ডেস্ক : ঢাকা বোট ক্লাবের ঘটনা ও গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে ভাঙচুরে অভিযোগ- সব কিছু নিয়ে এখন ‘টায়ার্ড’ হয়ে পড়েছেন বলে জানিয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। আজ বুধবার রাতে বনানীতে নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি। বলেন, ‘এতদিক থেকে এত চাপ। আমি সত্যিই এখন অনেক টায়ার্ড। আমাকে ব্লেম করা হচ্ছে নানা দিক থেকে। যেটা আসলে ভিত্তিহীন। চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক রকম চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে আমার উপর। সত্যি তো সত্যিই। একদিন পর হোক বা দুদিন এটা তো আসেই সবার সামনে। চলেন আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করি, আসলে ঘটনাটা কী।’
গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠার পর সেটিকে ‘চক্রান্ত’ বলেও মন্তব্য করেন চিত্রনায়িকা পরীমনি। ঘটনাটিকে ‘মানসিক আক্রমণ’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। পরীমনি বলেন, ‘কীভাবে আক্রমণটা করসে দেখসেন? মানসিকভাবে এটা কিন্তু একটা আক্রমণ। এতদিন যা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে কিন্তু আমার একটা মানসিক প্রস্তুতি ছিল। চারদিন ধরে সবাই আমাকে সে প্রস্তুতিটা দিয়ে দিচ্ছিল যে তোমার দিকে ব্লেম করা হবে। তোমার দিকে আঙুল তোলা হবে।’
রাত ১০টায় নিজের বাসায় সংবাদ সম্মেলনে আবেগ তাড়িত হয়ে কেঁদে ফেলেন এই নায়িকা। সংবাদিকদের কাছেই সত্য সন্ধানের আহ্বান জানান ও পাশে থাকতে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, , ‘তারা এতদিন কেন চুপ করে ছিল? এতদিন পর আমি যখন কমপ্লেইন করলাম, বিষয়টা সবার সামনে আনলাম, তখনই কেন তারা আমার বিরুদ্ধে লাগছে? এটা তো স্পষ্ট, বোঝাই যাচ্ছে।’ এ সময় কেঁদে ফেলেন পরীমনি।
সাংবাদিকরা পরীমণিকে ওই ক্লাবে যাওয়ার কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি স্বীকার করে বলেন, ‘জ্বী আমি গিয়েছি। আর সিসিটিভিতে কী আছে, তা তো আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন। তাহলে কেন ৮ দিন পর আসলো?’ এ সময় ফের কান্না করেন অভিনেত্রী। সাংবাদিকদের সামনে দুইহাত জোড় করে কান্না করতে করতে তিনি বলেন, ‘প্লিজ আপনারা পাশে থাকেন। একটা সত্যিকে সামনে আসতে দেন।’
এর আগে সন্ধ্যায় পরীমনির বিরুদ্ধে গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে বলে জানান অল কমিউনিটি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট কে এম আলমগীর। এ ঘটনাকে চক্রান্ত মন্তব্য করে পরীমনি আমাদের সময়কে বলেন, ‘এটা ফালতু অভিযোগ। আমার বিরুদ্ধে কোনো জিডি হয়নি। আমাকে নিয়ে অন্যরকম একটা চক্রান্ত চলছে।’
গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম আজ সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে বলেন, গত ৭ জুন গভীর রাতে ৯৯৯-এ একটি কলে গুলশান থানা-পুলিশের একটি দল অল কমিউনিটি ক্লাবে যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, কথা-কাটাকাটির জেরে ক্লাবে গ্লাস ভাঙচুর করেন পরীমনি।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে অল কমিউনিটি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট কে এম আলমগীর বলেন, ‘ক্লাবের কিছু নিয়মকানুন আছে। কোনো মেল (পুরুষ) যদি ক্লাবে আসে, তাকে ড্রেস কোড মেইনটেইন করতে হয়। কিন্তু সেই মেল ভদ্রলোক হাপপ্যান্ট ও স্যান্ডেল পরে এসেছেন। তখন বেরিয়ে যাচ্ছিলেন আমাদের ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ডিরেক্টর এবং ক্লাবের অ্যাডমিন। উনারা ওটা দেখে বলেছেন, আপনি তো ক্লাব রুল ভায়োলেট করেছেন। আপনি তো হাফপ্যান্ট পরে আসতে পারেন না। তো উনারা ক্ষিপ্ত হয়ে যান। ক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়ায় উনাদের আচার-আচরণ গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় উনারা (ক্লাব কর্তৃপক্ষ) বলেন, রাত হয়েছে আপনারা চলে যান। কিন্তু উনারা চলে যাচ্ছিল না দেখে আমাদের পরিচালকই ক্লাব থেকে চলে যান।‘
কে এম আলমগীর আরও বলেন, ‘এরপরে ওই সদস্য যার মাধ্যমে উনারা এসেছিলেন, উনিও উনাদেরকে চলে যাওয়ার জন্য অনেক অনুরোধ করেন। কিন্তু উনারা চলে যাচ্ছিল না দেখে ওই সদস্যও চলে যান। তারপর উনারা অকস্মাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে যান। চেঁচামেচি শুরু করেন এবং গ্লাস, অ্যাস্ট্রে ছুড়ে মারতে থাকেন। একপর্যায়ে উনারা ৯৯৯-এ কল করে পুলিশ কল করেন। পুলিশ আসার পরে উনারা দেখতে পান উনি (পরীমনি) এগুলো ছুড়ে মারছেন।’
ঢাকার বোট ক্লাবের ঘটনায় আলোচনায় আসেন পরীমনি। এ ঘটনায় আবাসন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ, অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়ের করেন এই চিত্রনায়িকা। মামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
Comment here