নিজস্ব প্রতিবেদক : জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির জেরে চলমান পরিবহন ধর্মঘটের কোনো সুরাহা হয়নি। এ সুযোগে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। গতকাল শনিবার সরকারি অফিস-আদালত বন্ধ থাকার কারণে স্বাভাবিক দিনের চেয়ে মানুষের চলাচল অনেকটা কম ছিল। তার পরও বাইক-রিকশা-অটোরিকশার কারণে রাস্তায় যানজট ছিল প্রকট। সড়কে বের হওয়া মানুষকে এসব বাহনে উঠে গুনতে হয়েছে দুই-তিনগুণ অতিরিক্ত ভাড়া। নিরুপায় হয়ে অনেকেই গন্তব্যে রওনা হয়েছেন হেঁটেই।
গতকাল রাজধানীর মিরপুর, ধানমন্ডি, আসাদগেট, শ্যামলী, আগারগাঁও, মিরপুর-১০, ফার্মগেটসহ বেশকিছু এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় গণপরিবহন না থাকায় প্রাইভেট কার, বাইক, অটোরিকশার চেয়ে দাপট ছিল ব্যাটারিচালিত রিকশার। দূরের গন্তব্যের মানুষও চলাচল করে এই রিকশায়। গন্তব্যে যেতে রিকশাচালকরা হাঁকছেন অতিরিক্ত ভাড়া। আর এক একটি সিএনজি অটোরিকশা দেখলে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন যাত্রীরা। এ সুযোগে বেশি ভাড়া চাইছেন সিএনজিচালকরাও। একই অবস্থা ভাড়ায় চালিত মোটরবাইকগুলোরও।
শ্যামলী থেকে উত্তরায় অফিস করেন বেসরকারি একটি পোশাক কারখানায় কর্মরত শুভ। উত্তরায় নামার পর তিনি জানান, সকালবেলা বাসা থেকে বের হয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা রাস্তায় অপেক্ষা করেছি। সবশেষ অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে একটি সিএনজি ঠিক করলাম। শ্যামলী থেকে ৭০০ টাকা দিয়ে উত্তরা এলাম। বাস চলাচল বন্ধের সুযোগে যে যেভাবে পারছে- এই সুযোগের অপব্যবহার করে চলেছে।
সকালে মেরুল বাড্ডা থেকে হাজিপড়ায় বেটার লাইফ হাসপাতালে অসুস্থ বাবাকে নিয়ে এসেছিলেন শরিফুল গাজী। রিকশা ভাড়া দিয়েছেন দেড় শ টাকা। তিনি বলেন, রাস্তায় প্রচুর রিকশা। কিন্তু ভাড়া নিচ্ছে দ্বিগুণেরও বেশি। মেরুল বাড্ডা থেকে এইখানে (বেটার লাইফ হাসপাতাল) ভাড়া বড়জোর ৮০ টাকা। সিএনজি পাচ্ছিলাম না। যাও দু-একটা পাইছি, ভাড়া চাইল আড়াই শ টাকা। পরে রিকশায় আসলাম।
মিরপুরে ব্যবসায়ী সাইফুল জানান, বাস চলাচল বন্ধ থাকায় সিএনজি এবং রিকশাচালকরা অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে, এগুলো নজরদারির জন্য কী কেউ নেই। কল্যাণপুর থেকে প্রতিদিনই আমাকে কাজের জন্য মিরপুরের দিকে যেতে হয়। রিকশায় প্রতিদিন যেখানে ৪০ টাকা করে যেতাম, বাস বন্ধের পর গত দুদিন ধরে সেখানে আমাকে যেতে হচ্ছে ৮০ টাকায়।
মালিবাগ চৌধুরীপাড়া থেকে মহাখালী যেতে অটোরিকশাচালক নূর ইসলাম ভাড়া চাইলেন ৩৮০ টাক। সাড়ে তিন শর নিচে যাবেন না। রাস্তায় যানজট নেই, তার পরও ভাড়া বেশি চাইছেন কেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব দিন কি আর বেশি চাই? আইজকা একটু বেশি লাগবোই। কেন ‘বেশি লাগবোই’ তার সদুত্তর দিতে না পারলেও উদাহরণ দিলেন, এই মাত্র চাইর শ টাকা দিয়া বনানী গেছে।
Comment here