এস এম আল আমিন পঞ্চগড় প্রতিনিধি : গ্রামীণ বাংলার জন জীবনে সাধারণ মানুষের অন্ধকার দূর করার একমাত্র অবলম্বন ছিল হারিকেন। আর এই হারিকেন জ্বালিয়েই বাড়ি উঠানে কিংবা বারান্দায় পড়াশোনা করতো ছাত্রছাত্রীরা ।
হারিকেন জ্বালিয়ে করা হত পরিবারের নানা ধরনের কাজ। আর এই হারিকেনের কেরোসিন তেল আনার জন্য প্রতি বাড়িতেই রশিতে ঝুলানো ছিল এক ধরনের বিশেষ কাঁচের বোতল। প্রতি হাটবারে সেই রশিতে ঝুলানো কাচের বোতল হাতে নিয়ে গেরস্থ রওনা হয় হাটে। প্রাচীন বাংলার এই অপরুপ দৃশ্য এখন শুধুই স্মৃতি । কালের বির্বতনে কুপি বাতি ও হারিকেন এখন যেন রূপকথার গল্প।ক্রমেই বিলীন হয়ে যাওয়া কপি ও হারিকেন গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যময় এই নির্দশনটি এক দশক আগেও রাতের আধারে রাস্তা পারাপার থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজে অপরিহার্য্য ছিল। তখন গ্রামে গঞ্জে প্রায় প্রতিদিনই হারিকেন মেরামত করা মিস্ত্রীদের ডাক শোনা যেত ।
কিন্তু আজ সেটা বিলিনের পথে। গ্রামে গ্রামে ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে হারিকেন মেরামত করতো। পল্লী বিদ্যুতায়নের যুগে এখন আর এমন দৃশ্য দেখা যায় না বললেই চলে । যার দরুণ গ্রাম বাংলার প্রতিটি ঘরের অতি প্রয়োজনীয় জিনিস ছিল হারিকেন। আজ এই হারিকেন প্রায় বিলুপ্তির পথে। গ্রাম বাংলার এই কুপি ও হারিকেনগুলো ছিল বাহারি ডিজাইনের। এর মধ্যে মাটি, লোহা, কাঁচের বোতল আবার পিতলের তৈরি কুপিও ছিল। নিজ নিজ সামর্থ অনুযায়ী লোকজন কুপি ও হারিকেন কিনে সেগুলো ব্যবহার করতেন। গ্রাম বাংলার আপামর লোকের কাছে কুপি ও হারিকেনের কদর হারিয়ে গেলেও এখনও অনেকে আকড়ে ধরে আছেন কুপি ও হারিকেনের স্মৃতি।
তথ্য প্রযুক্তির আধুনিকতা ছোঁয়া আর উন্নত জীবন-যাপন প্রণালীর কারণে দিনদিনই মানুষের মাঝে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকের ধারনা করছেন এই কুপি বাতি ও হারিকেন দেখতে যেতে হবে যাদুঘরে। তবে এই নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী নিদর্মনটি টিকিয়ে রাখার দাবি জানাচ্ছেন অনেকে । নয়ত এক সময় চিরতরে বিলুপ্ত হবে হারিকেন।
Comment here