বছর ঘুরে এসেছে পবিত্র ঈদুল আজহা, যা কোরবানির ঈদ হিসেবে পরিচিত। কোরবানির ঈদ মানেই টেবিলে গরু আর খাসির মাংসের বাহারি পদের ছড়াছড়ি। গরু বা খাসির মাংসকে রেড মিট বা লাল মাংসও বলা হয়ে থাকে। স্বাস্থ্যের খাতিরে চিকিৎসকের যতই বিধিনিষেধ থাকুক না, চোখের সামনে মাংসের বাহারি পদ দেখলে লোভ সামলানো দায়।
লাল মাংসে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি উপাদান থাকে। কিন্তু তাই বলে অতিরিক্ত লাল মাংস খাওয়া একদম অনুচিত। কারণ এতে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য-ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি, হৃদরোগের সমস্যা আছে, তাদের জন্য অতিরিক্ত মাংস খাওয়া তো একদমই উচিত না।
ঈদের সময় এলেই অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে- কতটুক লাল মাংস খাওয়া শরীরের জন্য নিরাপদ? বাংলাদেশ মাল্টিকেয়ার হাসপাতাল ও ইবনেসিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারের ক্লিনিক্যাল ডায়াটিশিয়ান ও নিউট্রিশন কনসালটেন্ট ফাতেমা সিদ্দিকী ছন্দা জানান, একজন পূর্ণবয়স্ক এবং সুস্থ মানুষ নিজ শরীরের প্রতি কেজির জন্য ০.৮ থেকে ১ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন গ্রহণ করতে পারবেন। অর্থাৎ কারোর ওজন যদি ৬০ কেজি হয়, তাহলে তিনি খেতে পারবেন ৪৮ থেকে ৬০ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন। তবে গর্ভাবস্থা, অথবা মাংসপেশি (মাসল) বাড়াতে চাইলে এর পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
ব্যক্তি-ভেদে ও রোগ অনুযায়ী প্রতিদিন একজন মানুষ দুই থেকে তিন টুকরো মাংস খেতে পারবেন। বিশেষ কোনো রোগ থাকলে অবশ্যই পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী মাংস খেতে হবে। যেমন কিডনি রোগীর ক্ষেত্রে মাংসের পরিমাণ হতে পারে এক টুকরো। যাদের রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি, তাদের জন্য গরুর মাংস না খাওয়াই ভালো। আবার হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ কিংবা কোলেস্টেরলের রোগীদের জন্যও গরুর মাংস এড়িয়ে যাওয়া শ্রেয়।
অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার ক্ষতিকর দিক
গরুর মাংসে প্রচুর পরিমাণ সোডিয়াম থাকে। ফলে অতিরিক্ত মাংস খেলে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
গরুর মাংসে থাকা কোলেস্টেরল শিরায় জমে রক্ত চলাচলে বাধা দেয়। এতে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
অতিরিক্ত গরুর মাংস খেলে ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা অ্যালার্জিজনিত জটিলতা দেখা দিতে পারে।
অতিরিক্ত গরুর মাংস খেলে ক্যানসারের মতো রোগের ঝুঁকিও বেড়ে যায়।
Comment here