নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে চলমান পরিস্থিতিতে দেশের সব মসজিদের ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিন ও মুতাওয়াল্লিদের ছয়টি পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির ও দারুল উলুম হাটহাজারীর মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ আনাস মাদানী প্রেরিত এক বিবৃতিতে এ পরামর্শ দেওয়া হয়। ছয়টি পরামর্শ হলো-
১. আমাদের দেশের জনগণ করোনাভাইরাস ইস্যুতে এখনো পরিপূর্ণ সচেতন নন। এমন নাজুক পরিস্থিতিতেও ধর্মীয় ও রাষ্ট্রীয় বিধিনিষেধ তোয়াক্কা করছেন না। অথচ এ পরিস্থিতিতে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন আল্লাহমুখী হওয়া। কারণ তওবা ইসতেগফার ও কান্নাকাটির মাধ্যমে আল্লাহ-তায়ালার আজাব ও গজব থেকে আমরা বাঁচতে পারবে। তাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে বিশেষ মুনাজাত করুন। তওবা ইসতেগফার করুন। সুন্নাতসম্মত দোয়ার আমল করুন।
২. বাংলাদেশে লকডাউন ঘোষণা হলে ইমাম মুয়াজ্জিন ও খাদেমগণ মিলে হলেও নামাজের জামাত কায়েম করতে হবে। মসজিদ বন্ধ করা যাবে না। তবে সুন্নত ও নফল নামাজ ঘরে আদায় করার প্রতি মুসল্লিদের তাকিদ দিন। আর সতর্কতার সঙ্গে প্রয়োজনীয় সব আমল চালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
৩. দেশের চলমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন দিনমজুর ও সমাজের নিম্নবিত্তের মানুষ। তাই ইমাম খতিব, মুয়াজ্জিন ও মসজিদ কমিটির দায়িত্বশীলগণ তাদের সহায়তায় এগিয়ে আসুন। সমাজের বিত্তশালীদের সঙ্গে পরামর্শ করে অসহায় মানুষদের হাতে চাল, ডাল, তেল, আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দিন।
৪. মসজিদে মসজিদে অজুর আগে হাত ধোয়ার জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করুন। ফরজ নামাজ ও জুমার বয়ানে সংক্ষিপ্ত আকারে করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আলোচনা করুন। গুজব, কানকথা, ভিত্তিহীন ও তথ্যহীন আলোচনা থেকে বিরত থাকুন। বিদেশফেরত ও অসুস্থ ব্যক্তিদের মসজিদে না এসে ঘরে নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিন।
৫. প্রত্যেক মহল্লার ইমাম ও সচেতন উলামায়ে কেরাম প্রত্যেকেই নিজ দায়িত্বে দোয়া ইউনুস, কোরআন খতম ও রোগমুক্তির জন্য বিশেষ দোয়ার আমল করুন।
‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনজ জালিমিন।’ এই আয়াত সবাইকে বেশি বেশি পড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করুন এবং ঘর থেকে বের হওয়ার আগে ‘বিসমিল্লাহিল্লাজি লা ইয়াদুররু মাআস মিহি শাইউন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামায়ি ওয়া হুওয়াস সামিউল আলিম।’ দোয়াটি নিয়মিত পড়তে বলুন।
৬. কোনো ব্যক্তি মারা গেলে তার কাফন-দাফনের ব্যবস্থা ও জানাজা পড়ানোর ব্যাপারে গাফিলতি করবেন না। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে যথেষ্ট সম্মান দিয়ে নিয়মমাফিক সবকিছুর আঞ্জাম (শেষ করা) দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
Comment here