ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের শঙ্কায় ঠাকুরগাঁওয়ে এক বাড়ির মালিক পুলিশের এক কর্মকর্তার পরিবারকে ফ্ল্যাট ছাড়াতে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার রাতে এ অভিযোগ করেন ঠাকুরগাঁও সদর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নাজমুল হক।
শুধু তিনি নন, ওই বাড়িতে কনেস্টবল আলমগীর ও এএসআই জসিমও পরিবার নিয়ে বাস করতেন। তাদেরকেও হয়রানি করে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করেছেন ওই বাড়ির মালিক রতন।
পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল হক জানান, গত ১১ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও পৌরসভার জমিদার পাড়ার বাসিন্দা রতন নামের এক ব্যক্তির বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ফ্ল্যাট ভাড়া নেন তিনি। তখন থেকে তিনি সেই বাড়িতে দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে বাস করছেন।
‘বাড়ি ভাড়া নেওয়ার পর থেকে বাড়ির মালিক রতন ও তার স্ত্রী আমাদের সাথে ভালোই ব্যবহার করতেন। দেশে করোনাভাইরাস মহামারিতে রূপ নেওয়ার পর থেকে ফ্ল্যাট ছেড়ে দেওয়ার জন্য নানাভাবে হয়রানি করতে শুরু করেন রতন’ যোগ করেন ওই পুলিশ।
নাজমুল হক বলেন, ‘শনিবার দুপুরে গোসল শেষে আমার স্ত্রী ছাদে কাপড় শুকাতে গিয়ে দেখে দরজায় তালা বন্ধ করে রেখেছে। শুধু এটা নয়, কিছুদিন আগে আমার পাঁচ বছরের মেয়ে নোভা বাড়ির ছাদে ফুলের চারা লাগাবে বলে বায়না ধরে। নোভাকে নিয়ে ছাদে তিনটি ফুলের টব রাখতে গেলে বাড়ি মালিক অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে আর ফুলগাছ লাগানো হয়নি।’
এ ছাড়াও অনেক সময় তার ফ্ল্যাটের দরজার সামনে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ ময়লা ফেলে রাখে বলেও অভিযোগ করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।
নাজমুল হক আরও বলেন, ‘করোনা কালে আমাকে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে হয় সবসময়। কাজ শেষে বাড়িতে ফিরলে শুনতে হয় বাড়ি মালিকের অকথ্য ভাষায় কথা এবং বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার চাপ। বাড়ি মালিক রতন ও তার স্ত্রী মনে করেন আমি বাড়িতে করোনাভাইরাস নিয়ে এসেছি। এ কারণে তারা আমাদের চাপ প্রয়োগ করছে বাড়ি ছেড়ে দিতে। ‘
‘পুলিশ বলে কি বাড়ির মালিকরা আমাদের মানুষ মনে করে না,’ যোগ করেন নাজমুল হক।
তবে সম্প্রতি বাড়ি ছেড়ে দেওয়া পুলিশ কনেস্টবল আলমগীর বলেন, ‘করোনার আগে বাড়ির মালিক রতন ও তার স্ত্রী আচরণ ভালোই ছিল। করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার পর থেকেই ঘর ছেড়ে দিতে মালিকপক্ষ নানা হয়রানি করে। বাধ্য হয়ে ঘর ছেড়ে দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম বলেন, ‘কিছুদিন আগেও ওই বাড়ির মালিক দুই পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের ঘরছাড়া করেছিলেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।’
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বাড়ির মালিক রতনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
Comment here