বিশ্বব্যাপী অনেকটা নিয়ন্ত্রণে করোনাভাইরাস। ফলে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, মাস্ক পরাসহ নানা সব ধরনের বিধিনিষেধ শিথিল করার পরামর্শ দিয়েছে সরকারের করোনা বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
একইসঙ্গে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আগত যাত্রীদের বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা ও কোভিড ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট প্রদর্শনের বাধ্যবাধকতাও প্রয়োজন নেই বলে মত দিয়েছে কমিটি।
আজ রোববার রাতে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গতকাল শনিবার জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির ৬৩তম সভা হয়। সভায় আলোচনা শেষে বেশকিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় কোভিডের সর্বশেষ পরিস্থিতি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাম্প্রতিক পরামর্শ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। কোনো কোনো দেশে এখনও কোভিড সংক্রমণ বেশি থাকলেও মৃত্যুহার, আইসিইউ প্রয়োজনীয়তা ও জটিলতা অনেক কম। আমাদের দেশে কোভিড সংক্রমণ বেশ কিছুদিন ধরে নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় পরামর্শক কমিটি সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক পরাসহ কোভিড প্রতিরোধের অন্য করণীয়সমূহ শিথিল করার বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করে।
আরও পড়ুন: করোনা ও উপসর্গে যত মৃত্যুর খবর এলো
তবে কমিটি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্থান যেমন- হাসপাতাল/চিকিৎসা কেন্দ্র এবং উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের সতকর্তা হিসেবে মাস্ক ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। কমিটি মনে করে কোভিড ছাড়াও অন্য স্বাস্থ্য সমস্যা প্রতিরোধ এটা সহায়ক হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মোতাবেক জরুরি বিবেচনা না করলেও সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য বৈশ্বিক রিপোর্ট পর্যালোচনা ও দেশে সার্ভিলেন্স জোরদার করার জন্য সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআর প্রতি পরামর্শ দেওয়া হয়। ভবিষ্যতে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া, হজ্ব যাত্রীদের সৌদি আরবে প্রবেশের শর্ত মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়াও মার্স প্রতিরোধে উটের সংস্পর্শে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। অন্য দেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সেই দেশের শর্তানুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের কোভিড পরীক্ষা ও কোভিড ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট প্রদর্শনের বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়া, কোভিড ভ্যাকসিন বিষয়ে নিয়মিত বৈজ্ঞানিক তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
এর আগে, গত শুক্রবার করোনা মহামারি সংক্রান্ত বৈশ্বিক জরুরি অবস্থার অবসান ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের অন্যতম অঙ্গসংগঠন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। গত শুক্রবার সংস্থার মহাপরিচালক তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস নিজে এই ঘোষণা দিয়েছেন।
আশাবাদ ব্যক্ত করে ড. গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘বড় আশা নিয়ে আজ আমি করোনা মহামারি সংক্রান্ত বৈশ্বিক স্বাস্থ্যগত জরুরি অবস্থার অবসান ঘোষণা করছি। প্রত্যাশা করছি, আমাদের সামনের দিনগুলো সুন্দর ও নিরাপদ হবে।’
Comment here