নিজস্ব প্রতিবেদক : বেঁচে থাকতে নিজের কর্মীদের গায়ে কাউকে আঁচড় দিতে দেবেন না হুঁশিয়ারি দিয়ে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের দলীয় সাংসদ শামীম ওসমান বলেছেন, ‘আমি বেঁচে থাকতে আমার কর্মীরা গায়ে কাউকে একটা আঁচড় দিতে দেব না। আমি বেঁচে থাকতে যদি কেউ আমার কর্মীর গায়ে আঁচড় দেয়, আর যদি মনে করে নারায়ণগঞ্জ শান্ত থাকবে, তাহলে আপনি বোকার রাজ্যে বাস করছেন। আমার জীবন থাকতে আমার কর্মীর গায়ে আঁচড় দিয়ে এই নারায়ণগঞ্জের মাটিতে শান্তিতে এক ঘণ্টাও কেউ ঘুমাতে পারবেন না।’
গতকাল শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকায় থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় এ হুঁশিয়ারি দেন শামীম।
শামীম ওসমান তার বলা কথাকে হালকাভাবে না নেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, ‘অনেক ধৈর্য ধরেছি, অনেক চুপ থেকেছি, আর নয়।’ মূলত ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর ওপর হামলার ঘটনায় নিয়াজুল নামে এক অস্ত্রধারীকে হত্যাচেষ্টা করা হয়। নিয়াজুল সেই মামলার আসামি। এ সময় মেয়র আইভীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করার ইঙ্গিত দেন শামীম।
এই সাংসদ আরও বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ এখন একটা চারণভূমি হয়ে গেছে। ওয়ান–ইলেভেন যারা এনেছিল, সেই তারা ঘন ঘন নারায়ণগঞ্জে আসছে। নারায়ণগঞ্জের বদনাম হয় র্যাবের কারণে, দুর্নীতিবাজ অফিসারদের কারণে। নারায়ণগঞ্জের মানুষ কিন্তু বদনাম করে না। বাইরে থেকে এসে বদনাম করে দিয়ে যায়। নারায়ণগঞ্জ শীতলক্ষ্যা-বুড়িগঙ্গার দিক দিয়ে যায়। এখানে খেলবেন না।’
‘দ্রুতগতিতে খেলা এগোচ্ছে, ধৈর্য ধরেন আপনারা। আর যদি ওই রকম খেলা শুরু হয়, তাহলে ফতুল্লার নেতা-কর্মীরা প্রস্তুত আছে। তখন এই নারায়ণগঞ্জের মাটি আর দেখা যাবে না। খালি মাথা আর মাথা দেখা যাবে। আমি জানি, সবাই প্রস্তুত আছে। ডাকলে সবাই আসবে’- বলেন শামীম ওসমান।
মেয়র আইভীর ওপর করা হামলার মামলায় আসামি করা হয়েছে এই সংসদ সদস্যকে। শামীম বলেন, ‘এই মামলায় আসামি করা হয়েছে আমাকে। আসামি করা হয়েছে পোড় খাওয়া আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের। এই মামলা হয়েছে একমাত্র ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে। ২২ মাস আগে মেয়রের সঙ্গে সংঘর্ষে হয়েছিল হকারদের। ওই দিনের ঘটনার সঙ্গে যুবলীগ, ছাত্রলীগের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। সেদিন সেখান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল একসময়কার তুখোড় নেতা নিয়াজুল ইসলাম। তখন তার ওপর মেয়রের লোকজন হামলা করেছিল। আজকে সে মামলায় তাকেই করা হয়েছে প্রধান আসামি।’
প্রশাসনকে তদন্ত করার তাগিদ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘যদি মনে করেন আমি সংসদ সদস্য, আমাকে ধরতে সমস্যা হবে, তাহলে এই মুহূর্তে কথা দিচ্ছি, সংসদ সদস্য পদ ছেড়ে দেব। আর আমার কারণে যদি এই ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে মূল আসামি তো আমি।’
এ সময় দাবি করে বলেন, সেদিন তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন পার্টির সেক্রেটারির কথায়।
ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদলের সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দন শীল, সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, জেলা কৃষক লীগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন প্রমুখ।
Comment here