ক্রাইম পেট্রল দেখে দিনের বেলায় চুরি করতো সোহান - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
খুলনাসমগ্র বাংলা

ক্রাইম পেট্রল দেখে দিনের বেলায় চুরি করতো সোহান

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বিদেশি পিস্তল, গুলি ও চোরাই মালামালসহ এক সুকৌশলী চোরকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগ। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি পল্লবী থানার শহীদবাগ কালাপানি এলাকা হতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতের নাম- মো. সোহান। পরবর্তী সময়ে তার দেওয়া তথ্যমতে তার শয়ন কক্ষ হতে বিভিন্ন চোরাই মালামাল উদ্ধার করা হয়।

আজ রোববার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী।

ডিসি গুলশান জানান, সোহানের বাসা থেকে একটি ৭.৬২ বিদেশি পিস্তল, একটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, এক রাউন্ড পিস্তলের গুলি, ৩০০ গ্রাম গাঁজা, নগদ ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, একটি স্টেইনলেস স্টিলের চাকু, একটি স্টেইনলেস স্টিলের খুর, মোবাইল ১১টি, একটি কোডাক কোম্পানির ক্যামেরা, একটি ক্যানন কোম্পানির ক্যামেরা, দুটি স্ক্রু ড্রাইভার, লোহার তৈরি ছয়টি র্যাথ, স্টেইনলেস স্টিলের রেঞ্জ দুটি, ঘড়ি পাঁচটি, ছোট স্ক্রু ড্রাইভার চারটি, স্টিলের সন চারটি, তালার চাবি ২২টি, নাইফ দুটি, একটি ম্যাগনিফাইং গ্লাস, একটি ট্যাব, মানিব্যাগ একটি, একটি ফেভিকল সুপার গ্লু, বিভিন্ন ধরনের ইমিটেশন চুড়ি পাঁচটি, ইমিটেশন আংটি পাঁচটি, ইমিটেশন গলার হাড় ছয়টি, ইমিটেশন গলার চিক একটি, পাথর সংযুক্ত কানের দুল দুটি, ইমিটেশনের কানের দুল চার জোড়া, ইমিটেশনের ব্রেসলেট দুটি, এক জোড়া রূপার পায়ের নুপুর (যার ওজন ১৫ আনা), একটি কালো রংয়ের রিচার্জেবল টর্চ লাইট ও একটি লাল রংয়ের বড় সাইজের হাতলযুক্ত ব্যাগ উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে সুদীপ কুমার চক্রবর্তী জানান, সোহানের চুরির কৌশল ছিল অভিনব। সোহান বিভিন্ন চ্যানেলে নিয়মিত ক্রাইম পেট্রল দেখার মাধ্যমে চুরির কাজে লিপ্ত হয়। সময় হিসেবে দিনের বেলাকে সে বেছে নিতো। প্রথমে তার সহযোগী আসামিদের নিয়ে চুরি করলেও পরবর্তী সময়ে সে একাই চুরি করে। যে সকল বাসায় লাইট এবং ফ্যান বন্ধ থাকে এবং যে বাসায় সিকিউরিটি গার্ড থাকে না সে সকল বাসায় চুরি করার জন্য টার্গেট করে।

পরবর্তী সময়ে সে তার টার্গেটকৃত বাসায় রেঞ্জ, স্ক্রু ড্রাইভার, হেসকো ব্লেড, টেস্টার, ডুপ্লিকেট চাবিসহ চুপিসারে প্রবেশ করে তালা খুলে/ভেঙে এবং বাসায় ডোরলক থাকলে দরজায় পিঠ লাগিয়ে সজোরে ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে চুরি করে। তার টার্গেটকৃত বাসায় দারোয়ান থাকলে তার গতিবিধি লক্ষ্য করে সুযোগমতো বাসায় প্রবেশ করে।

নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডিসি বলেন, ‘আপনারা বাসায় মূল্যবান জিনিস ভালো করে তালাবদ্ধ করে রাখবেন। প্রয়োজনে মূল্যবান জিনিসের নিরাপত্তায় ব্যাংকের ভল্ট ব্যবহার করতে পারেন। বাড়িতে নিরাপত্তা ডিভাইস ও সিসি ক্যামেরা লাগাতে পারেন। আপনার ঘর নিরাপত্তা দিতে পুলিশের দায়িত্ব রয়েছে। পাশাপাশি আপনাদেরও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

পুলিশ জানায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি সকালে অজ্ঞাতনামা চোর ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকার আমিনুল ইসলামের বাসার দরজার তালা ভেঙে বাসায় প্রবেশ করে। তার বাসা থেকে নগদ ৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, এক জোড়া স্বর্ণের হাতের বালা, দুটি স্বর্ণের ব্রেসলেট, তিনটি স্বর্ণের গলার চেইন, দুটি স্বর্ণের গলার হার, তিন জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, আনুমানিক ১০ ভরি ওজনের আটটি স্বর্ণের হাতের আংটি চুরি করে।

সেই ঘটনায় রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় সোহানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আগেও পল্লবী থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

Comment here