খুলনায় ৫ আসামির ফাঁসি ব্যাংক কর্মকর্তাকে গণধর্ষণ - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
খুলনাসমগ্র বাংলা

খুলনায় ৫ আসামির ফাঁসি ব্যাংক কর্মকর্তাকে গণধর্ষণ

খুলনায় চাঞ্চল্যকর এক্সিম ব্যাংকের কর্মকর্তা পারভীন সুলতানাকে গণধর্ষণ এবং তার বাবা ইলিয়াছ আলীকে হত্যাকাণ্ডের দায়ে ৫ আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন-৩ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মহিদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

মহানগরীর লবণচরা থানার গল্লামারি বুড়ো মৌলভীর দরগা এলাকার ৩ নম্বর গলির ঢাকাইয়া হাউজ-এ.পি ভিলা নামের বাড়িতে ২০১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর নৃশংস এ খুনের ঘটনা ঘটে।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, খুলনা নগরীর লবণচরা থানাধীন বুড়ো মৌলভীর দরগা রোডের বাসিন্দা শেখ আব্দুল জলিলের ছেলে সাইফুল ইসলাম ওরফে পিটিল (৩০), তার ভাই শরিফুল ইসলাম (২৭), আবুল কালামের ছেলে লিটন (২৮), অহিদুল ইসলামের ছেলে আবু সাইদ (২৫) ও মৃত সেকেন্দার আলীর ছেলে আজিজুর রহমান ওরফে পলাশ (২৬)। তাদের মধ্যে হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই প্রধান আসামি শরিফুল (৩০) পলাতক রয়েছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের মামলায় ২২ জন ও গণধর্ষণের মামলায় ২৮ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত। আসামিদের মধ্যে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় দুজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে লোমহর্ষক এ হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা রয়েছে। চলতি বছরের ২৪ এপ্রিল খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ৩ নম্বর ট্রাইব্যুনালে মামলাটির যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) শুরু হয়।  মামলার তদন্ত চলাকালে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ছাড়াও গ্রেপ্তার করা হয় পিটিলের স্ত্রী আসমা খাতুন, নোয়াব আলি গাজী ও আসলাম মিস্ত্রি নামের একজন সন্দেহভাজনকে। তাদের মধ্যে লিটন ও সাঈদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উঠে আসে লোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।

তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানিয়েছে, ব্যাংক কর্মকর্তা পারভীন অফিসে আসা-যাওয়ার পথে তারা কু-প্রস্তাবসহ নানাভাবে যৌন হয়রানি করত। এর প্রতিবাদ করায় ঘটনার দিন রাতে বাড়ির দেয়াল টপকে ভিতরে প্রবেশ করে তারা। এরপর অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পারভীনের বাবাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পাশের রুমে থাকা পারভীনকে পাঁচজন মিলে গণধর্ষণের পর হত্যা করে সেফটিক ট্যাংকের মধ্যে পারভীন ও তার বাবার লাশ ফেলে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় লবনচরা থানায় পারভীন সুলতানার ভাই রেজাউল আলম চৌধুরী বিপ্ল¬ব বাদি হয়ে ২০১৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর হত্যা মামলা দায়ের করেন।পারভীন সুলতানাকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগে ২২ সেপ্টেম্বর আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়।

এরপর ২০১৬ সালের ৯ মে হত্যাকাণ্ডের এবং একই বছরের ২৪ মার্চ গণধর্ষণের মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কাজী বাবুল পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে খুলনার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন স্পেশাল পিপি ফরিদ আহমেদ। এ ছাড়া রাষ্ট্রপক্ষকে সহায়তার জন্য ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার পক্ষে অ্যাডভোকেট কাজী সাব্বির আহমেদ, অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট তসলিমা খাতুন ও অ্যাডভোকেট কুদরত ই খুদা।

Comment here