মোঃ হুমায়ূন কবির স্টাফ, রিপোর্টার : গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নগর হাওলা গ্রামে এক বৃদ্ধ মা তার সন্তানের নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য নিজের জীবনের ও ছোট ছেলের নিরাপত্তা চেয়ে মা নিলজান বেগম লিখিত অভিযোগ করেছেন গাজীপুর পুলিশ সুপার বরাবর।
সন্তানের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে নিজবসত ভিটা ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন ছোট ছেলের বাড়িতে।এই অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ২নং গাজীপুর ইউনিয়নের নগরহাওলা গ্রামে।। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শ্রীপুর উপজেলার ২নং গাজীপুর ইউনিয়নের নগরহাওলা গ্রামের মৃত আহাম্মদ আলীর স্ত্রী চার সন্তানের জননী নিলজান বেগম (৬৫),তার বড় ছেলে মোজাম্মেল হক (৩৫) এর বিরুদ্ধে তাকে মারধরসহ পরিবারের উপর নানা ভাবে নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন।
দৈনিক মুক্ত আওয়াজ নিলজান বেগমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, স্বামী আহাম্মদ আলী প্রায় ২৫ বছর আগে মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে তিনি অনেক কষ্টে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজকর্ম করে চার সন্তানকে লালন পালন করেন। সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কোনো জমিও বিক্রিয় করেননি। কিন্তু বড় ছেলে মোজাম্মেল হক বুঝবান হওয়ার পর এলাকায় খারাপ ও লোভী প্রকৃতি লোকদের সাথে চলাফেরা শুরু করে। মা এতে বারবার বাধা দেওয়া সত্তেও কোনো কর্ণপাত না করে বরং মাকে জমি তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য অশ্লিল গালমন্দ সহ চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। মা সন্তান ভালোভাবে থাকবে অঙ্গীকার শুনে জমি তার নামে লিখে দেওয়ার জন্য শ্রীপুর সাবরেজিষ্ট্রি অফিসে যায় কিন্তু ৫ শতাংশ জমির কথা বলে ২২ শতাংশ জমি রেজিষ্ট্রি করে তার নামে লিখিয়ে নেয়। কিছুদিন পর আবারো জমি দেওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে থাকে জমি দিতে রাজি না হওয়ায় একাধিকবার মাকে মারধর করে, এর প্রতিবাদ করায় বড় মেয়ে মোর্শেদা খাতুনকে লাঠি দিয়ে এলোপাথারি আঘাত করে হাত ভেঙ্গে ফেলে।
নিলজান বেগমের ছোট ছেলে ফজলুল হক এগিয়ে আসলে তাকেও এলোপাথারিভাবে মারধর করে। এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের জানানো হলে শালিশের মাধ্যমে মোজাম্মেল হক কে জুতা-পেটা করে তাকে জমি ফেরতসহ শোধরানোর সুযোগ দেয়। কিন্তু পরিস্থিতি তার বিপরিত হয়, দৈনিক মুক্ত আওয়াজ নিলজান বেগম এর সাথে কথা বলে আরো জানতে পারেন, বড় ছেলে মোজাম্মেল হক এর অত্যাচার ও মারধরের কারনে সেজো ছেলে মজনু মিয়া অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বিষপানে আত্তহত্যা করে। কিছুদিন পূর্বে আমার বাবার বাড়িতে ওয়ারিশ হিসেবে প্রাপ্ত জমি বিক্রি করা পাঁচ লক্ষ টাকা ছেলে মেয়ে সবাইকে সমান ভাবে ভাগ করে দিতে চাইলে সে জোর পূর্বক আমার কাছ থেকে টাকাগুলো আত্বসাৎ করে। আত্মসাৎ কৃত টাকা উদ্ধার করার জন্য অনেকের কাছে শালিশ দিয়েছে,টাকা ফেরৎ দেওয়ার জন্য এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ চাপ দিলে সে অস্বিকৃতি জানায় এবং বাড়িতে এসে বৃদ্ধ মা বোন ও ছোট ভাইকে জীবননাশের হুমকি দেয়। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন,আমার দুই ছেলে ও মেয়েকে তাদের পিতার সম্পত্তির অংশ অনুযায়ী সমহারে বন্টন করে দিয়েছি। কিন্তু সে তার অংশ নেওয়ার পর আরো আমার ও ছোট ছেলে মেয়ের জমি বাড়িঘর আত্বসাৎ করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, এ সমস্ত ঘটনা আমি প্রতিবেশিসহ আমার বড় ভাইকে জানালে তারা সকলে মিলে সতর্ক করে কিন্তু তাতেও কোনো কর্ণপাত করেনাই। কয়েকবার থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে কিন্তু পুলিশের কথাও অমান্য করে বর্তমানে আমার ও ছোট ছেলের ২৫টি টিনশেড রুমের ভাড়াটিয়াদের মারধর করে বের করে দিয়ে রুমগুলোতে তালা লাগিয়ে দিয়েছে।
জানা যায় মোজাম্মেল হক ইতিপূর্বে এলাকার কিছু ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের হাত করে তাদের পুর্ব পুরুষদের বিক্রিয় করা জমির ক্রেতা মোজাহেরুল এর নিকট ২০ লক্ষ ও আব্দুল আওয়াল এর নিকট হতে ৩লক্ষ টাকা জমি সংশোধনের নাম করে হাতিয়ে নেয়। ফলে তার এ নির্মম অত্যাচার হিংস্রতায় এলাকায় কোনো সুরাহা না পেয়ে গাজীপুর পুলিশ সুপারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। গাজীপুর পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার(পিপি এম) দৈনিক মুক্ত আওয়াজকে জানান, অভিযোগ পত্র হাতে পেয়েছি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Comment here