চলতি সপ্তাহে ইম্পেরিয়াল ভ্যাকসিনের মানব-পরীক্ষা শুরু - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

চলতি সপ্তাহে ইম্পেরিয়াল ভ্যাকসিনের মানব-পরীক্ষা শুরু

অনলাইন ডেস্ক : ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের বিজ্ঞানীরা এই সপ্তাহেই একটি সম্ভাব্য করোনভাইরাস ভ্যাকসিনের ওপর মানব–পরীক্ষা শুরু করবেন। মোট ৩০০ জন সুস্থ লোককে এই ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ দেওয়া হবে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভ্যাকসিনটি প্রাণীর ওপর পরীক্ষার সময় উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবডি তৈরি করতে পারে, এমন প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছেন গবেষকেরা। প্রথম পর্যায়ে মানুষের ওপর পরীক্ষায় যদি এটি নিরাপদ বলে প্রমাণিত হয়, তবে এ বছরের শেষ দিকে ৬ হাজার মানুষের ওপর ভ্যাকসিনটি পরীক্ষা করা হতে পারে।

ভ্যাকসিনটি তৈরির উদ্যোগের জন্য ইতিমধ্যে ৪ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার সরকারি ও ৫০ লাখ ডলার দাতব্য সহযোগিতা পেয়েছে। অক্সফোর্ডের তৈরি ভ্যাকসিনটির পর এটি যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় ভ্যাকসিন হিসেবে মানব–পরীক্ষায় যাচ্ছে।

ইম্পেরিয়ালের গবেষণার নেতৃত্ব দানকারী অধ্যাপক রবিন শ্যাটক বলেন, ‘দীর্ঘ মেয়াদে একটি ভ্যাকসিন সর্বাধিক দুর্বলদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় এবং লকডাউনের সীমাবদ্ধতা কমিয়ে মানুষকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করবে। তাদের সম্ভাব্য ভ্যাকসিন এখনো একটি কার্যকর ইমিউন প্রতিক্রিয়ার উত্সাহজনক লক্ষণ দেখিয়েছে।’

অক্সফোর্ড ভ্যাকসিনসহ মানব–গবেষণা নিয়ে বর্তমানে প্রায় এক ডজন সম্ভাব্য ভ্যাকসিন রয়েছে। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন নিয়ে সম্প্রতি ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে একটি উন্নত পরীক্ষা শুরু হয়েছে। অন্যান্য ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বায়ো এন টেক, জনসন অ্যান্ড জনসন, মডার্না, সানোফি ও ক্যানসিনো বায়োলজিকস।

অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনসহ বেশ কিছু ভ্যাকসিন নিয়ে ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর ওপর তুলনামূলক পরীক্ষা করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ভ্যাকসিন তৈরিতে সাধারণত কয়েক বছর সময় লাগে। বর্তমানে যেসব ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে, তা যথেষ্ট কার্যকর ও নিরাপদ হবে কি না, এ নিয়ে সংশয় থাকছে।

ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের বিজ্ঞানীরা আত্মপরিবর্ধনকারী আরএনএ প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে করোনারোধী ভ্যাকসিন তৈরি করছেন। তারা ভ্যাকসিন সরবরাহে বিশেষ কোম্পানি তৈরি করছেন, যাতে তাদের ভ্যাকসিন সফল হলে গরিবদের কাছে সহজে তা পৌঁছে দেওয়া যায়।

ইম্পেরিয়াল কলেজ ও হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মর্নিংসাইড ভেঞ্চার্সের উদ্যোগে তৈরি ভ্যাকুইটি গ্লোবাল হেলথ এ ভ্যাকসিন তৈরি করছে। ইম্পেরিয়াল কলেজের বিজ্ঞানীদের তৈরি আরএনএ ভ্যাকসিন মূলত পেশিকোষে জিনগত নির্দেশ পাঠায়, যাতে কোষ স্পাইক প্রোটিন তৈরি করতে পারে। এ প্রোটিনের উপস্থিতি রোগ প্রতিরোধী সক্ষমতাকে প্ররোচিত করে, যাতে কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা তৈরি হয়।

প্রথম ধাপের পরীক্ষা সফল হলে ছয় হাজার মানুষকে নিয়ে আগামী অক্টোবরে দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষার পরিকল্পনা করেছেন বিজ্ঞানীরা। তারা আশা করছেন, আগামী বছরের শুরুতেই যুক্তরাজ্য ও বিশ্বের অন্যান্য দেশে ভ্যাকসিন দিতে পারবেন তারা।

Comment here