নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা থেকে জামালপুরগামী দেওয়ানগঞ্জ কমিউটার ট্রেনে খুনসহ ডাকাতির ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১৪)। আজ রোববার ভোরে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাৎক্ষণিভাবে গ্রেপ্তারকৃতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-১৪ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হান্নানুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুরগামী কমিউটার ট্রেনে ডাকাতি ও দুজনকে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
এর আগে গত শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টার দিকে ছুরিকাঘাতে নিহত সাগরের মা হনুফা খাতুন বাদী হয়ে ময়মনসিংহ জিআরপি থানায় অজ্ঞাত ৮/১০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে এ ঘটনায় শিমুল মিয়া (২২) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে নেওয়া হয়। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর তার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাতে ট্রেনটি ময়মনসিংহ রেলস্টেশন ছেড়ে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই ট্রেনের ছাদে ডাকাতরা হামলা চালালে দুজন নিহত হয়। পরে ডাকাতরা সেখানে লুটপাট করে। রেলওয়ে পুলিশের জামালপুর থানার (জিআরপি) উপপরিদর্শক সোহেল রানা জানান, ডাকাতির খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের জামালপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর আহত ব্যক্তি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি জামালপুর পৌর শহরের ইকবালপুরের বাসিন্দা ওয়াহেদ আলীর ছেলে নাহিদ (৪০)। অপরজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তার বয়স আনুমানিক ৪০ বছর। আর আহত অবস্থায় ইসলামপুর উপজেলার মাঝপাড়ার বাসিন্দা হিরু মিয়ার ছেলে রুবেল (২২) জামালপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই ট্রেনের যাত্রী ফারুক নামের এক যুবক জানান, ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে তারা ঢাকা থেকে কমিউটার ট্রেনের ছাদে ওঠে জামালপুরে আসছিলেন। ট্রেনটি ময়মনসিংহের গফরগাঁও রেলস্টেশন ছাড়ার পর ট্রেনের ছাদে থাকা যাত্রীদের অনেকেই ডাকাতদলের কবলে পড়েন। এ সময় চার-পাঁচজনের ডাকাতদলটি নাহিদসহ অনেক যাত্রীর কাছ থেকে মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন লুট করে ট্রেনের ইঞ্জিনের দিকে চলে যায়।
এরপর ট্রেনটি ময়মনসিংহ রেলস্টেশনে আসে। ওই স্টেশন থেকে ট্রেনটি ছাড়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই যাত্রী ফারুক ও নাহিদসহ বেশ কয়েকজন যাত্রী এক হয়ে ট্রেনের ছাদে ডাকাতদের খুঁজতে যান। তারা ডাকাতদের চিনতে পেরে কিছু বলার আগেই ডাকাতরা তাদের ওপর হামলা করে। এতে যাত্রী নাহিদ, রুবেল ও অজ্ঞাত পরিচয়ের তিনজন গুরুতর আহত অবস্থায় ট্রেনের ছাদেই পড়ে থাকেন।
পরে রাত ১০টার দিকে ট্রেনটি জামালপুর রেলস্টেশনে পৌঁছালে গুরুতর আহত তিন যাত্রীকে ছাদ থেকে নামিয়ে রেলওয়ে থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পরে তাদেরকে জামালপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে নাহিদ ও অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার মো. জাকিউল আলম খান।
Comment here