নিজস্ব প্রতিবেদক : ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে সরকার সরাসরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা না কিনে বেক্সিমকোর মাধ্যমে কিনল কেন, তা জানতে চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘বেক্সিমকোর এখানে কত কমিশন আছে, সেটাও আমরা জানতে চাই। সরকার বেক্সিমকোর মাধ্যমে সিরাম ইনস্টিটিউটকে টাকা দিচ্ছে। সরকার সরাসরি দিচ্ছে না কেন? এসব বিষয়ে মানুষের জানার অধিকার আছে। সেই বিষয়টা আমরা জানতে চাই।’
আজ রোববার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল এসব কথা বলেন। এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে একই জায়গায় অনুষ্ঠিত দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সারমর্ম তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে আনা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা মানুষ কীভাবে পাবে, কারা পাবে এবং এর সংরক্ষণ ও বিতরণ করার বিষয়টি স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কথা বলেননি। এর একটা সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ জনগণের সামনে প্রকাশ করা উচিত।
তিনি বলেন, ‘আমরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখছি, এই বিষয়টা সরকারের সঙ্গে সরকার ডিল করছে অথবা সরকার সরাসরি সেই কোম্পানির সঙ্গে ডিল করছে।’
‘টিকা সংগ্রহ, সংরক্ষণ, বিতরণ ও পৌঁছানো একটা টেকনিক্যাল বিষয়। এটাকে জনগণের সামনে পরিষ্কার করে সরকারের রোডম্যাপ প্রকাশ করা দরকার। তারা কীভাবে এটা করতে চায় এবং জনগণকে আশ্বস্ত করা দরকার-এই টিকা তাদের কাছে কখন পৌঁছাচ্ছে’, যোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
পত্রপত্রিকার মাধ্যমে বিষয়টা জানতে পেরেছেন উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘আজকালের মধ্যেই সরকার বেক্সিমকোর মাধ্যমে ৬০০ কোটি টাকা সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছে দেবে। এরপর তারা ৬ মাসে তিন কোটি ডোজ টিকা দেবে। দেখা যাচ্ছে, প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসবে। এটা অত্যন্ত অপ্রতুল। কে কখন পাবে, এটা জানতে পারছি না।’
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, ‘আমরা শুনতে পেয়েছি, উচ্চপর্যায়ের মানুষের জন্য তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেছে। খবর পেয়েছি, গুলশান ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, উত্তরা ক্লাবসহ অন্যান্য ক্লাবে যারা সদস্য আছেন, তাদের নামের তালিকা করা হচ্ছে। আরও শুনতে পাচ্ছি, সরকারের উচ্চপদস্থদের জন্য তালিকা করা হচ্ছে, মন্ত্রীদের তালিকা করা হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ কীভাবে এই ভ্যাকসিন পাবে, কখন পাবে, সে বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য পাচ্ছি না।’
করোনাভাইরাসের টিকা সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকাল বলেছেন, ৪২৬ টাকা টিকার মূল্য পড়বে। এই মূল্য সরকার প্রদান করবে, নাকি জনগণকে দিতে হবে? সেই বিষয়টাও কিন্তু স্পষ্ট নয়। এ সময় টিকা সংগ্রহ, বিতরণ, মূল্য, কতজনকে দেওয়া সম্ভব হবে, কাদের দেওয়া হচ্ছে-এর একটা রোডম্যাপ জনগণের সামনে প্রকাশের দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচির ঘোষণা দেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানোর দাবিতে ২৭ জানুয়ারি সারা দেশের থানা পর্যায়ে মানববন্ধন করা হবে। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে ১০ জানুয়ারি সারা দেশের পৌরসভা ও মহানগরে মানববন্ধন করা হবে।
Comment here