শাহজাহান আকন্দ শুভ : শিগগিরই ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিভিন্ন পর্যায়ে শুদ্ধি অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে। থানাপুলিশ দিয়ে এ অভিযান শুরু হবে। এরই অংশ হিসেবে রাজধানীর ৫০ থানার ওসির (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) আমলনামা সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে ডিএমপি সদর দপ্তর। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, যেসব ওসির আমলনামা খারাপ পাওয়া যাবে, তাদের ওসির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। তাদের জায়গায় দক্ষ ও চৌকস ইন্সপেক্টরদের ওসি হিসেবে পদায়ন করা হবে।
সূত্র বলেছে, রাজধানীর ৫০ থানার ওসি কতদিন ঢাকাতে ওসির দায়িত্ব পালন করছেন, কে কতটি থানার ওসি হিসেবে ইতোমধ্যে দায়িত্ব পালন করেছেন, থানায় আসা মানুষের সঙ্গে কী ধরনের আচরণ করেন, কতটুকু সেবা দিচ্ছেন, সেবাপ্রত্যাশী মানুষের সঙ্গে হয়রানি করেন কিনা, কারও বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে কিনা, থানার সার্বিক দায়িত্ব পালনে কোনো গাফিলতি রয়েছে কিনা ইত্যাদি নানা বিষয় পর্যালোচনা করে দেখবে ঢাকা মহানগর পুলিশের সদর দপ্তর।
পর্যালোচনাকালে যেসব ওসির সার্বিক কাজে নেতিবাচক অবস্থান পাওয়া যাবে, তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। অন্যদিকে যাদের সার্বিক প্রতিবেদন ভালো পাওয়া যাবে, তারা থানায় বহাল থাকবেন। প্রয়োজনে কম গুরুত্বপূর্ণ থানা থেকে তাদের অপেক্ষাকৃত গুরুত্বপূর্ণ থানায় পদায়ন করা হবে।
ইতোমধ্যে পুলিশ কমিশনার হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করে সব থানার ওসিকে একগুচ্ছ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম। থানাপুলিশের কাছে সেবা নিতে আসা
কোনো মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হন, সেদিকে নজর রাখতে তিনি ওসিদের নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল রবিবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পুলিশ কমিশনার বলেছেন, এখন যারা থানায় কাজ করছেন, তাদের আচরণে যদি পরিবর্তন না আসে, তা হলে সিনিয়র অফিসাররা থানায় বসা শুরু করবেন। তিনি নিজেও থানায় ওসিগিরি করবেন। ডিসিদের থানায় বসিয়ে দেবেন। এ ছাড়া অন্তত সপ্তাহে একদিন সিনিয়র অফিসাররা থানায় বসে মানুষের কথা শুনে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করবেন বলেও উল্লেখ করেন শফিকুল ইসলাম।
জানা গেছে, ঢাকার ৫০ থানার ওসিদের একটি বড় অংশই ঘুরেফিরে এক থানা থেকে আরেক থানায় দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে। তার পরও এসব ওসি দায়িত্ব পালন করছেন। কারও কারও বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সখ্যের অভিযোগও আছে। কারও বিরুদ্ধে রয়েছে টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন দখলে সহায়তা করার অভিযোগ।
রাজধানীর নবাবপুরে টাকার বিনিময়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের তিনতলা বাড়ি দখলে সহায়তা করার অপরাধে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ ইব্রাহিম খানকে কিছু দিন আগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। অথচ একই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে বংশাল থানার তৎকালীন ওসি বর্তমানে কোতোয়ালি থানার ওসি শাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি অভিযোগের তদন্তকালেই শাহিদুর রহমানকে কোতোয়ালি থানার ওসি হিসেবে পদায়ন করা হয়।
Comment here