ধর্ষণের পর স্কুলছাত্রীর সন্তান প্রসব, মেয়েকে নিতে চাচ্ছেন না বাবা-মা! - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

ধর্ষণের পর স্কুলছাত্রীর সন্তান প্রসব, মেয়েকে নিতে চাচ্ছেন না বাবা-মা!

নিজস্ব প্রতিবেদক ; সন্তান প্রসবের পর ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীকে নিতে চাচ্ছেন না তার বাবা-মা। এ কারণে তাকে রাখা হচ্ছে রাজশাহী শিশু ও কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রে (সেফহোম)।

নানা-নাতির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর করা হয় ডিএনএ পরীক্ষা। কিন্তু ডিএনও প্রতিবেদনে দেখা যায়, ওই নানা-নাতির ডিএনএ‘র সঙ্গে স্কুলছাত্রীর জন্ম নেওয়া সন্তানের ডিএনএ মিলছে না। এর ফলে বগুড়ার ধুনট উপজেলার ওই স্কুলছাত্রীর সন্তানের পিতৃপরিচয় মিলছে না। তাই ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও ভুক্তভোগীকে নিয়ে বিপাকে পড়েছে পুলিশ।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ভুক্তভোগীর বাবা উপজেলার চিকাশি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য। বিয়েবিচ্ছেদের পর তার স্ত্রী জীবিকার তাগিদে ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। স্কুলছাত্রীর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে গ্রামের বাড়িতে বসবাস করেন। যে কারণে ওই স্কুলছাত্রী তার নানা রশিদ মণ্ডলের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানে থেকে একটি স্কুলে পড়াশোনা করত সে।

এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, স্কুলে যাতায়াতের পথে পাশের গ্রামের বকুল হোসেনের (২৩) সঙ্গে ওই স্কুলছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২০১৮ সালের ১৫ এপ্রিল বিকেলে বকুল ওই স্কুলছাত্রীর ঘরে আসে। দুজনের শারীরিক সম্পর্কের সময় মেয়েটির নানা ঘরে ঢুকে তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন। পরে এ ঘটনা প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে নিজের নাতনিকে ধর্ষণ করেন রশিদ মণ্ডল। পরে ওই মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা হলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।

ওই ঘটনায় ২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর বাদী হয়ে বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন ওই ছাত্রীর বাবা। মামলায় বাদীর শ্বশুর রশিদ মণ্ডল ও তার নাতি বকুল হোসেনকে আসামি করা হয়।

২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি ছেলে সন্তানের জন্ম দেয় ওই স্কুলছাত্রী। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ রশিদ মণ্ডল ও বকুল হোসেনের ডিএনএ পরীক্ষা করে। তবে জন্ম নেওয়া শিশুটির সঙ্গে তাদের ডিএনএ মেলেনি। এ ঘটনায় মামলার তদন্ত ও ভুক্তভোগীকে নিয়ে বিপদে পড়েছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, নানা-নাতির ডিএনএ’র সঙ্গে শিশুটির ডিএনএ মিলছে না। এ ছাড়া এ ঘটনায় আরও কয়েকজন জড়িত আছে। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।

মামলার আসামি রশিদ মণ্ডল ও বকুল হোসেন বগুড়া জেলা কারাগারে আটক রয়েছেন। এ ছাড়া ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীকে তার মা-বাবা হেফাজতে নিতে রাজি হয়নি। যে কারণে তাকে রাজশাহী শিশু ও কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রে (সেফহোম) রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘ধর্ষণে জন্ম নেওয়া স্কুলছাত্রীর সন্তানের পিতৃপরিচয় শনাক্ত করতে রশিদ মণ্ডল ও বকুল হোসেনের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু তাদের ডিএনএন পরীক্ষার প্রতিবেদনের সাথে সন্তানের পিতৃপরিচয় মিলছে না। এরপর ওই স্কুলছাত্রী আরেক যুবকের নাম প্রকাশ করেছে। তদন্তের স্বার্থে তার নাম প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে স্কুলছাত্রীর সন্তানের পিতৃপরিচয় জানতে ওই যুবককে আটকের চেষ্টা চলছে।’

Comment here