বৈমানিক পারভেজ সানজারির সঙ্গে অভিনেত্রী নওশীনের অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে ফেসবুকে ভিডিও প্রকাশ করলেন পপ সংগীতশিল্পী মিলা। এবার তার অভিযোগ সংবাদমাধ্যম কর্মীদের বিরুদ্ধে। মিলার বক্তব্য, নওশীন নয় বরং তিনি বিচার চান এটা খবরের শিরোনাম হওয়া উচিত ছিল।
গতকাল বুধবার রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে পপশিল্পী মিলা তার সাবেক স্বামী বৈমানিক পারভেজ সানজারি, তার পরিবার এবং ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ন্যায় বিচারের দাবি করেন। এ সময় অভিনেত্রী নওশীনসহ অনেক মেয়ের সঙ্গে আমার সাবেক স্বামীর অবৈধ সম্পর্কের তথ্য ফা্ঁস করেন তিনি। আর এরপরই সংবাদমাধ্যমগুলোতে নওশীনকে জড়িয়ে খবরের শিরোনাম করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মিলা।
মিলা ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া এক ভিডিওতে বলেন, ‘আজকের আমি এতগুলো কথা বলেছি, আমার বাবা-মার এতগুলো কষ্টের কথা নিয়ে। আমার আজকে শিরোনামটা তো হওয়া উচিত ছিলো ‘আমি বিচার চাই’। এইটা হওয়া উচিত ছিলো আমার আজকে শিরোনাম, নওশীন নয়।’
১০ মিনিটের ভিডিওতে তিনি আরও বলেন, ‘নওশীন একটা, আরও ১০টা মেয়ের নাম বলেছি তাদের মধ্যে সে একজন। ওদের সাথে জড়িত হয়ে গেছে। ওর নামটা এ জায়গার মধ্যে আসছেই না। নিউজগুলা আসছে, “মিলা মিথ্যা বলছে, নওশীন বলেছে মিলা মিথ্যা বলেছে।” আমি এত বড় একটা যুদ্ধ করছি। এই রকম জায়গার মধ্যে, সংবাদ সম্মেলনের মধ্যে দাঁড়িয়ে আমার একটা শব্দও মিথ্যা বলাতো মানে, আমি যদি একটা শব্দও মিথ্যা কথা বলি, যেই কষ্ট আমার ওপর দিয়ে যাচ্ছে।’
সাংবাদ মাধ্যমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে এই পপশিল্পী আরও বলেন, ‘একটা শব্দও মিথ্যা প্রমাণিত হওয়া মানেই তো আমার পুরো মামলাটাই তো মিথ্যা। তার মানে আমি সবই মিথ্যা বলি। এত বড় একটা কাজ কি আমি করবো? করার মেয়ে আমি? এত কষ্ট পাচ্ছি আমি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এতগুলো ঘটনার মধ্যে আমি আর একটা মিথ্যা বলে বসবো না। আপনারা (সংবাদ মাধ্যম) যারা বক্তব্য দিচ্ছেন, নওশীন বলেছে মিলা মিথ্যা বলছে। এটাই বা আপনারা কীভাবে দিচ্ছেন? আপনাদের তো একবার আমার সাথে কথা বলা উচিত ছিলো।’
“আমার এই দুঃসময়ে এই মহিলাকে নিয়ে আমার অবশ্যই মিথ্যা বলার কথা না। আরে এই ছেলের (সানজারি) মধ্যে দোষের অভাব নেই। একে দোষে ফেলার জন্য আমার নওশীনকে নিয়ে কেন মিথ্যা কথা বলতে হবে? এইটাতো কোনো অপশনই না।”
মিলা বলেন, ‘আপনার যেকোনো সন্দেহ থাকলে আপনি মোস্ট ওয়েলকাম। আপনি যাকে নিয়ে আসার নিয়ে আসেন। পুরোপুরি সবকিছু সামনে নিয়ে কথা বলবো। তার আছে বুকে কলিজা? ওই ছেলেকে নিয়ে আসেন।
‘আমার মধ্যে সত্য ব্যাপারগুলো না থাকলে আমি আজকে ভাই-বোনদের ডাকতাম না। দুই বছর ধরে আমি যুদ্ধ করতেছি। আমার মধ্যে যদি সত্য ব্যাপারগুলো না থাকতো আমি তাদের ডাকতাম না। আমার একটা কলিগকে যে আরেকজন কলিগের স্ত্রী, তাকে কখনই আমি না জেনে অসম্মানিত করার মতো মেয়ে আমি নই’ আরও যোগ করেন এই শিল্পী।
তিনি বলেন, ‘আমি আরেকটা কথা বলতে চাই, নওশীন অস্বীকার যদি করে থাকে তাহলে গত এক সপ্তাহ ধরে এই মহিলার জন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তা কেন আমাকে বার বার অনুরোধ করছে। আমি যেদিন প্রথম লাইভে আসলাম সেদিনের কথা বলি। নওশীন গিয়েছে থানায় আমার নামে অভিযোগ করতে, সেখানের এক পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে ডেকেছে। তার সামনের চেয়ারে বসা তখন নওশীন। তিনি (পুলিশ কর্মকর্তা) আমাকে বার বার অনুরোধ করছেন আমি যাতে নওশীনের বিষয়টা ফাঁস না করি। আমি যাতে কাউকে না জানাই। আমি তখন তাকে বললাম “ভাইয়া, আপনি স্পিকারে দেন। আমি কথা বলি। আমি এই মহিলাকে কি ক্ষমা করবো?” তখন পুলিশ আমাকে বলেন, “নওশীন তো আপনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। সে ক্ষমা চাচ্ছে। আপনাকে সরি বলছে।”’
নওশীনকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, ‘তুমি সরি বলতে থানায় গেছ কেন? তুমি অন্যায় করেছো। তুমি আমার কাছে এসে সরি বলো। তুই আমাকে এসে সরি বলো।’
নওশীন তার নামে আইসিটি আইনে মামলা করার চেষ্টা করেছেন বলেও জানান মিলা।
ভিডিওর শেষে দিকে মিলা অভিযোগ করেন, ‘সংবাদ সম্মেলনে আমি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছি। সেখানে আপনারা একটা বিচ্ছিরি জিনিসকে নিয়ে কথা বলছেন। আমার তো মনে হচ্ছে, আপনারা এটাকে একটা চটপটি-গরমাগরম নিউজ বানিয়ে ফেলতেছেন। এটা আশা করা যায় না আসলে। নওশীন কীভাবে এত হেডলাইন হয়ে যাইতেছে? একটা সম্মেলন ডেকে এত বড় বড় কথা বললাম আমি। যেই জায়গাগুলো নিয়ে আপনার কাজ করার কথা। যেগুলো আমাদের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার কথা সেই গুরুত্বপূর্ণ কথা না লিখে আপনারা যদি নওশীনকে আমার শিরোনাম বানিয়ে দেন তাহলে তো হলো না। আমিতো এই কারণে আপনাদের ডাকিনি।
Comment here