নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশ্নে কোনো ছাড় দেবে না বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক : নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপি কোনো কোনো ছাড় দেবে না বলে উল্লেখ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব দলের এ অবস্থান জানান।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এবং সংলাপ দুইদিক থেকে নাকচ হওয়ায় আগামী নির্বাচন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে কি না, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা তার আগে সংলাপ নাকচ করে দিয়েছি। এতে অবশ্যই এবং আগামী নির্বাচন শুধু অনিশ্চিত নয়, আওয়ামী লীগ দায়ী হবে আগামী নির্বাচনে যদি আরও খারাপ কিছু ঘটে।’

নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রশ্নে ছাড় দেওয়া হবে না জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আর ছাড় দেব না, এদেশের মানুষের এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। আমার কথা বলছি না, চলেন না বেরোই একসঙ্গে। দ্যাট গো-আউট। টক টু দ্য পিপলস, ফারমার্স, রিকসাপুলার্স। নিরপেক্ষভাবে চলে, আপনি ইনভেস্টিগেশন করেন- দেখবেন মানুষ কি বলে। পিপল ওয়ান্ট এ চেঞ্জ। দিস ইজ ট্রুথ।’

সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা অনেক কিছু করতে পারেন। এদেশে মিডিয়া যা করেছে, মিডিয়ার জন্য পরিবর্তনটা অনেক ত্বরান্বিত হয়েছে। চিন্তা করেন এরশাদের পতনের কথা। পত্রিকা বন্ধ করে দিলেন আপনারা, তারপরে সেটা (এরশাদবিরোধী আন্দোলন) অনেক এগিয়ে গেল।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সব মানুষ কি চাটুকার হয়ে যাব, সব মানুষ কি স্বার্থপর হয়ে যাবে, সব মানুষ কি আমরা নিজের স্বার্থটা আর কিছুই দেখবে না? সেলফ সেন্সরশিপ করতেই থাকব? আমরা তো মরে যাব কয়েকদিন পরে। দিস ইজ ইউর কান্ট্রি- এটা মনে রাখতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কাল আমাদের অনির্বাচিত স্বঘোষিত, প্রবল প্রতাপশালী, অহংকারী, দাম্ভিক প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘নো প্রেসার উইল ওয়ার্ক অন মি’’। তার ওপর কোনো চাপই কাজ করবে না। এখানেই বোঝা যায় তার (প্রধানমন্ত্রীর উক্তিতে) এদেশের প্রতি, এ্ই মানুষের প্রতি তার যে কোনো দায়িত্ব নেই, তার যে সন্মান নেই, তার যে কোনো রকমে জনগণের ভবিষ্যত নিয়ে এই রাষ্ট্রকে একটা সত্যিকার অর্থে কার্যকর রাষ্ট্র করার চিন্তা তার নেই।’

চাপ কেন পড়ছে ব্যাখ্যা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এর কারণ হচ্ছে গত দুইটা নির্বাচন তারা করেছেন সম্পূর্ণভাবে একতরফাভাবে। তাদেরকে ক্ষমতায় বসানো জন্য যত রকমের ভোট জালিয়াতি, যত রকমের কারচুপি, যত রকমের সন্ত্রাস, সেই সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে ভোটারদেরকে ভোট কেন্দ্রে যাওয়া বাধা দিয়ে ভোট কেন্দ্রে শূন্য করে তারা ফলাফল ঘোষণা করে বেআইনভাবে ক্ষমতায় গেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এখন আজকে যখন আবার নির্বাচন আসছে তখন তারা দেখছেন যে, জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। সত্যিকার অর্থে যদি সুষ্ঠু ভোট হয় তাহলে তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে না। এই কারণে তারা যেটা করছেন আগে থেকেই একটা অবস্থা তৈরি করছেন। সেই অবস্থাটা হচ্ছে যে, আমাদের দেশের নির্বাচনের ব্যাপারে কেউ বাইরে থেকে হস্তক্ষেপ করবে না, কেউ কথা বলবে না এবং নির্বাচনটা আমাদের মতোই করছি এবং বিদেশিরা যারাই যাচ্ছে তারাই বলছে যে, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই।’

ফখরুল বলেন, ‘সরকার বলছে যে, না সব ঠিক আছে তো। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করবে, তারা ফ্রি, যা খুশি তাই করতে পারবে। এই যে গতকালও একজন বৃটিশ মন্ত্রী দেখা করতে গেলেন, এর আগেও একজন গেলেন তাদের উনি (প্রধানমন্ত্রী) একই কথা বলছেন।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের ডাকা হয়। সংবাদ সম্মেলন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ এবং সমবায় ও কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন উপস্থিত ছিলেন।