নিজস্ব প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার নতুন করে পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়তে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) আজ দুপুর ১২টায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দেবে।
বিইআরসি সূত্রে জানা যায়, পিডিবি চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব জমা দেয়। এর পর ১৮ মে তাদের প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি হয়েছে। গত ১৩ অক্টোবর দাম না বাড়ানোর ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। ওই সময় কমিশন দাম না বাড়ালেও ঘোষণায় ছিল, এ সিদ্ধান্তের বিপক্ষে চাইলে পিডিবি রিভিউ করতে পারবে। পরে পিডিবি গত সপ্তাহে আবারও দাম বাড়াতে রিভিউ আবেদন করে। তাদের আবেদন যাচাই-বাছাই করে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিইআরসি। এক মাস
এদিকে পাইকারি বিদ্যুতের দাম বাড়লে যৌক্তিক কারণে খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়বে। একাধিক বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্ততি গ্রহণ করছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান আমাদের সময়কে বলেন, পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়লে অবশ্যই খুচরা দামও বাড়াতে হয়। পাইকারি দাম কতটা বাড়ল, সেটা দেখার পর আমরা খুচরা দাম বাড়ানোর বিষয়টি বিশ্লেষণ করব।
সর্বশেষ, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদ্যুতের পাইকারি দাম ইউনিটপ্রতি ৫ দশমিক ১৭ টাকা নির্ধারণ করে। বিপিডিবি ইউনিটপ্রতি বর্তমান দর ৫ দশমিক ১৭ টাকা থেকে ৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৫৮ টাকা করার আবেদন করেছিল। সেই প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি হয় গত ১৮ মে। আর ১৩ অক্টোবর বিপিডিবি দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব নাকচ করে দেন বিইআরসি।
বিপিডিবির পাইকারি দাম বৃদ্ধির আবেদনে বলেছিল, চাহিদামতো গ্যাস সরবরাহ না পাওয়ায় তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গিয়ে খরচ বেড়ে গেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিদ্যুতের গড় উৎপাদন খরচ ছিল ২ দশমিক ১৩ টাকা, ২০২০-২১ অর্থ বছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ১৬ টাকায়। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, কয়লার মূসক বৃদ্ধির কারণে ২০২২ সালে ইউনিটপ্রতি উৎপাদন খরচ দাঁড়াবে ৪ দশমিক ২৪ টাকায়। পাইকারি দাম না বাড়লে ২০২২ সালে ৩০ হাজার ২৫১ কোটি ৮০ লাখ টাকা লোকসান হবে। বিপিডিবি বিদ্যুতের একক পাইকারি বিক্রেতা।
এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের সূত্রগুলো জানায়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে এবার বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি খাতের ভর্তুকি কমানোর জন্য দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সাম্প্রতিক ঢাকা সফরে বিদ্যুৎ জ্বালানি বিভাগ, বিডিবি, বিপিসি, পেট্রোবাংলা এবং বিইআরসির সঙ্গে বৈঠক করে। ওই বৈঠকগুলোতে আইএমএফ মূলত ভর্তুকি নিয়ে আলোচনা করেছে।
Comment here