সারাদেশ

পাইলট তৌকিরকে শহিদ হিসেবে ঘোষণার দাবি বাবার

উত্তরায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম সাগরের শোকে স্তব্ধ তার পরিবার। ছেলের স্মৃতি মনে করে কাঁদছেন বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যরা। স্মরণীয় করে রাখতে শহিদ হিসেবে ঘোষণা ও বিমানবাহিনীর কোনো স্থাপনার নামকরণ তৌকিরের নামে করার দাবি তার বাবার।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহীর সপুরা কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হন পাইলট তৌকির ইসলাম সাগর। আজ বুধবার দুপুরে ছেলের কবরের পাশে এসে কাঁদতে দেখা যায় বাবা তহুরুল ইসলামকে।

জানা যায়, চলতি বছরই তৌকিরের পদোন্নতির সম্ভাবনা ছিল। এ নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে আলোচনাও হয়। কিন্তু সেই সফলতা আসার আগেই চির বিদায় নিলেন মেধাবী এই কর্মকর্তা। আগামী দিনে তাকে স্মরণীয় করে রাখতে বিমানবাহিনীর সহযোগিতা চান তহুরুল। ছেলেসহ উত্তরার বিমান দুর্ঘটনায় নিহত সবার জন্যই দেশবাসীর কাছে দোয়া চান তিনি।

তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম বলেন, ‘তৌকির শুধুমাত্র আমার ছেলেই ছিল না, সে ছিল আমার বন্ধুর মতো। মানুষের দোষ-ত্রুটি থাকে। কিন্তু বাবা হিসেবে আমি ছেলের কোনো দোষ বলতে পারব না। ছেলের কাছে ব্যর্থ বাবা হলাম। ছেলের লাশ আমাকে বইতে হলো, এর চেয়ে কষ্টের কিছু নাই।’

তিনি বলেন, ‘আমি প্রথমে শুনেছিলাম সে সিএমএইচে ট্রিটমেন্টে ছিল। আমি তখন বহুবার বলেছিলাম, “আল্লাহ তুমি আমার জীবনটা নাও, নিয়ে আমার ছেলের জীবনটা ফিরিয়ে দাও”।’

ছেলে সম্পর্কে বাবা বলেন, ‘আমাদের ছেলে অমায়িক। সে বিভিন্ন জায়গায় অনেক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। যশোর সিএমএইচে সাড়ে তিন মাসের একটি কোর্স করেছে, সেখানে তৌকির ফার্স্ট হয়েছে। গত ১০ তারিখে ইন্ডিয়াতে একটি ট্রেনিং করেছে, সেখানে সে গোল্ড কয়েন পেয়েছে। তৌকির ভালো ছেলে, তার কোনো দোষ ছিল না।’

তহুরুল বলেন, ‘আমরা চাই, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর তরফ থেকে শহিদ খেতাব দিয়ে তার নামে যেকোনো একটি গেট বা ব্রিজ—এই রকম স্মৃতি হিসেবে লিখনিতে থাক, ইতিহাসে পাতায়, বাংলাদেশের লিখনিতে তৌকির ইসলাম থাক। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকির ইসলাম আমার দেশের গর্ব, সে জাতিকে তার জীবন উৎসর্গ করে গেল।’

Comment here

Facebook Share