পিয়নকে দিয়ে জনগণকে ধাওয়া-মারধর এসিল্যান্ডের, ভিডিও ভাইরাল - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

পিয়নকে দিয়ে জনগণকে ধাওয়া-মারধর এসিল্যান্ডের, ভিডিও ভাইরাল

নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের মনিরামপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েমা হাসানের পর নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করলেন কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদা আক্তার। অফিসের পিয়নের হাতে লাঠি তুলে দিয়ে বাজারের লোকজনকে ধাওয়া-মারধরে করিয়ে এ বিতর্ক সৃষ্টি করেন তিনি।

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সচেতন করতে গিয়ে লাঠি দিয়ে মারধর, কান ধরে উঠবস করানো কিংবা ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে শাস্তি- এসিল্যান্ডের এমনকাণ্ডে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বুড়িচং উপজেলায়। এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে।

তিন মিনিট ৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, বুড়িচং উপজেলায় করোনা সচেতনায় গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় এসিল্যান্ড অফিসের অফিস সহায়ক (পিয়ন) মো. সাইফুল ইসলাম লাঠি হাতে নিয়ে একাধিক লোককে পিটুনি, কানে ধরানো এবং ধাওয়া করাচ্ছেন। এ সময় উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদা আক্তার নিজে সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

যা হয়েছিল

গতকাল শুক্রবার দুপুরে বুড়িচং উপজেলার নিমসার ও কাবিলাসহ বেশ কয়েকটি বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন বুড়িচং উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিদা আক্তার। সেখানকার ব্যবসায়িদের মূল্য তালিকা না থাকা, মাস্ক ব্যবহার না করা ইত্যাদি কারণে জরিমানা করেন। বাজারে আসা লোকজনকে ধরেও তিনি মাস্ক না পরার কারণে জরিমানা করেন।

জানা গেছে, আটজন সাধারণ ব্যক্তিকে তিনি মাস্ক না পরায় জরিমানা করেন। যা ভাইরাল ভিডিওতেও দেখা গেছে তা। তবে এর বাইরে গিয়ে অযাচিত কাজ করে বসেন এসিল্যান্ডের পিয়ন সাইফুল ইসলাম। এসিল্যান্ডের সামনেই তিনি বাজারে আসা লোকজনকে হুমকি দেন, কাউকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন আবার কানে ধরে উঠবস করান। অনেককে আবার লাঠি নিয়ে ধাওয়াও করেন। এ সময় পুলিশও একই ভূমিকা পালন করে এসিল্যান্ডের সামনে। এসিল্যান্ডকে এ সময় সহায়তা করেন বুড়িচং থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) দেলোয়ার ও তার সঙ্গীয় ফোর্স।

ঘটনার পর স্থানীয় ব্যবসায়ী, সচেতন মহল ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকে। নিমসার ও কাবিলা বাজারের প্রান্তি ব্যবসায়িরা এ ঘটনাকে বর্বর যুগকেও হার মানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে প্রথমে অস্বীকার করেন এসিল্যান্ড তাহমিদা। পরে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখালে নিজের পিয়নকে দিয়ে জনগণকে ধাওয়া করানোর বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। বলেন, ‘বাজারে লোকসমাগম বেশি ছিল। লোকজনকে সরে যেতে বলা হয়েছিল। ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে কানে ধরানো এবং লাঠি হাতে ধাওয়ার বিষয়টি আমার চোখে পড়েনি। কারণ, সবদিকে তো আমার চোখ রাখা সম্ভব নয়।’

পিয়নকে দিয়ে লোকজনকে ধাওয়া দেওয়ানো, মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই সময় মানুষকে সরাতে এমনটি করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান বলেন, ‘লাঠি হাতে জনতাকে ধাওয়া, পেটানো এবং কানে ধরার বিষয়টি আমার জানা নেই। এসিল্যান্ড ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছেন। এ বিষয়ে তিনি ভালো বলতে পারবে।’

এর আগে মাস্ক না পরায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তিন বৃদ্ধকে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে শাস্তি দেন যশোরের মনিরামপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইয়েমা হাসান। গতকাল শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে উপজেলায়। এ ঘটনার ভিডিও এবং ছবিও তুলে রাখেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ ঘটনার একটি ছবি ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে। পরে আজ শনিবার তাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

https://www.facebook.com/amadersomoy/videos/509981886351658/

Comment here