চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় সাবেক প্রেমিকের হাতে জাহিদা আক্তার মিশু নামে এক গৃহবধূ খুন হয়েছেন।এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
সোমবার (২৯ জুলাই) উপজেলার রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের চর মহুয়া গ্রামে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।
নিহত মিশু ওই এলাকার মৃত সেলিম মিয়ার মেয়ে এবং ফরিদগঞ্জ উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের প্রবাসী সোহেলের স্ত্রী। এ ঘটনায় স্থানীয়রা শোহেব খান নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশে সোপার্দ করেছেন।
নিহত মিশুর মা সালেহা বেগম জানান, প্রায় তিন বছর আগে ফরিদগঞ্জ উপজেলার সন্তোষপুর গ্রামের সালামত উল্লাহর ছেলে সোহেলের সঙ্গে তার মেয়ের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের আগে একই এলাকার আবুল বাশারের ছেলে সুজন খানের সঙ্গে মিশুর প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং তাদের মোবাইলে কথাবার্তা হত। বিয়ে হওয়ার পর আর দুজনের মধ্যে যোগাযোগ নেই।এতে সুজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। স্বামী কাতার প্রবাসী হওয়ায় মিশু বাবার বাড়ি আসলে সুজন খান তাকে বিরক্ত করতো এবং তার সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার কথা বলত।
তিনি আরও জানান, তার কথা না শোনায় সুজন কয়েকজনকে নিয়ে সোমবার ভোরে বসতঘরে ঢুকে মিশুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। এ সময় তিনি এগিয়ে আসলে সুজন তাকেও কোপাতে অগ্রসর হয়। পরে মিশুকে উদ্ধার করে আড়াইশ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। ঢাকায় নেয়ার পথে মিশুর মারা যান।
এ বিষয়ে নিহত মিশুর চাচা ও স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার সেকান্দার দায়ী করেন মিশুর শ্বশুর বাড়ীর লোকদের।তারা বলেন, এ হত্যাকাণ্ড মিশুর শশুরবাড়ির লোকজনই পরিকল্পিতভাবে করিয়েছে। কারণ মিশুর বিয়ে হওয়ার কয়েক মাস পরই তার স্বামী কাতার চলে যায়। ওই সময় তারা তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য আর্থিক সহযোগিতা করেন। পরবর্তীতে আরও সহযোগিতার জন্য তাদের কাছ থেকে অনেক টাকা-পয়সা দাবি করে মিশুর শশুরবাড়ির লোকজন। তাদের দাবি পূরণ না করায় স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে এলাকার ওই বখাটে ছেলেদের মিশুর পেছনে লেলিয়ে দেয়। এ হত্যাকাণ্ডেরে সঙ্গে আবুল বাশারের ছেলে সুজন খান, শোহেব খান এবং মিশুর স্বামীর দুই ভাই হোসেন এবং জুয়েল জড়িত রয়েছে। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।
ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের (ওসি) আব্দুল রকিব জানান জানান, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্থানীয় লোকজন শোহেব নামে একজনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
Comment here