জনি রায়হান : করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ফলে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর আজ রোববার থেকে খুলেছে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মার্কেট ও দোকানপাট। তবে প্রথম দিনে ক্রেতা সমাগম অনেক কম দেখা গেছে।
করোনা সংক্রমণের মাঝে দোকান ও মার্কেটগুলো খুললেও বেশিরভাগ দোকানিই মানছেন না প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি। কেউ কেউ শুধু মাত্র হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আবার কয়েকটি বড় শপিং মলের গেটে বসানো হয়েছে থার্মাল স্কানার। ক্রেতা না থাকায় সামাজিক দূরত্ব মানা না মানার বিষয় চোখে পড়ছে না।
দোকান মালিকরা বলছেন, আজ রোববার প্রথম দিনে তারা অনেক বেশি ক্রেতা পাবেন বলে মনে করেছিলেন। কারণ দীর্ঘ দিন পর আজ মানুষ ঘর থেকে কেনাকাটা করতে বাইরে বের হওয়ার একটা সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু সেই অনুযায়ী মানুষ মার্কেটে আসেনি।
আজ রোববার সকালের দিকে রাজধানীর কিছু শপিংমল ও মার্কেটের সামনে ভিড় করতে দেখা গেছে। তবে তাদের বেশির ভাগই দোকানের মালিক, কর্মচারী ও মার্কেট ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত।
রাজধানীর মিরপুর, এলিফ্যান্ট রোড, গাউছিয়াসহ একাধিক এলাকার মার্কেটগুলোর দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
গাউছিয়া মার্কেটের অন্তু চৌধুরী নামে এক দোকানি দৈনিক মুক্ত আওয়াজ অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের ছোট দোকান, পুঁজিও অল্প। এত দিন দোকান খুলতে পারি নাই। কিন্তু আজ দোকান খোলার পর যে পরিমাণ কাস্টমার পাবো ভেবেছিলাম তার এক অংশও আসে নাই। পুরো মার্কেটই খালি।’
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বলেন, ‘সাধ্যমতো সাবান পানির ব্যবস্থার চেষ্টা করেছেন অনেকে। আসলে একেবারেই তো সম্ভব নয়। আস্তে আস্তে আমরা সবই করব।’
এলিফ্যান্ট রোডের অয়ন রহমান নামের এক জুতা দোকানি দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে বলেন, ‘আমাদের এখানে সব দোকান আজ খোলে নাই। কারণ আজ থেকে দোকান খোলার অনুমতি মিললেও তেমন ক্রেতা নেই। তাই অনেকে দোকান খোলেনই নাই।’
সরকারি স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা তো মানতেই হবে। তবে যেহেতু এখন কাস্টমার নাই। তাই ধীরে ধীরে সে গুলো চালু করা হবে।’
সুবাস্ত শপিংমলের চিত্রে একটু ভিন্নতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন শামীম আহমেদ নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী।
তিনি দৈনিক আমাদের সময় অনলাইনকে বলেন, ‘গাউছিয়া, এলিফ্যান্ট রোড কোথাও এসব স্বাস্থ্যবিধির তেমন কিছু চোখে পড়ে নাই। তবে সুবাস্তুতে গেইটে হ্যান্ড ওয়াশ ও থার্মাল স্কানার বসানো হয়েছে। যারা ভেতরে প্রবেশ করেছেন সবাইকে হ্যান্ড ওয়াশ ব্যবহার করেই যেতে হচ্ছে।’
তবে ওই মার্কেটেও ক্রেতাশূন্য ছিল বলে জানিয়েছেন শামীম আহমেদ।
অন্যদিকে, নিরাপত্তার স্বার্থে মার্কেট খোলা রাখার সরকারি সিদ্ধান্তে সাড়া দেয়নি বড় বড় শপিংমলগুলো। বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, নিউমার্কেটসহ বন্ধ রয়েছে অনেক শপিংমল ও মার্কেট।
যা বলল দোকান মালিক সমিতি
মার্কেট খোলা, ক্রেতার সংখ্যা কম ও স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে কথা হয় দৈনিক মুক্ত আওয়াজ সময় অনলাইনের।
হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আজ প্রথম দিন হওয়ায় খুব কম সংখ্যক দোকান খোলা হয়েছে। দোকানগুলোতে ক্রেতা কম। আশানুরূপ ক্রেতা একেবারেই নেই।’
স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার জানা মতে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মানার চেষ্টা করছেন এবং মানছেনও। তবে কিছু কিছু জায়গায় তা মানা হচ্ছে না। যেমন এলিফ্যান্ট রোডের দোকানগুলো মেইন রোডের ওপরে, ক্রেতারা যখন তখন ঢুকে পড়ছে। এসব জায়গায় স্বাস্থ্যবিধি মানানো একটু কষ্টকর বিষয়। তবে সকলেই তা অনুসরণের চেষ্টা করছি।’
Comment here