নিজস্ব প্রতিবেদক : আবু বক্কার ও সবুজ ইসলাম নাহিদ, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙচুরের কথা স্বীকার করেছেন। রোববার বিকেলে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসেন তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
কুষ্টিয়া জর্জ কোর্টের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। দুপুরে আবু বক্কার ও সবুজ ইসলাম নাহিদকে আদালতে তোলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক নিশি কান্ত সরকার।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দেলোয়ার হোসেন দুই ছাত্র আবু বক্কার ও নাহিদের জবানবন্দি নেন বলে জানায় পুলিশ। বিকেল পাঁচটার দিকে পুলিশের কড়া পাহারায় প্রিজন ভ্যানে করে তাদের ফের কারাগারে পাঠানো হয়।
জবানবন্দিতে যা বলেছেন আবু বক্কার ও নাহিদ-
হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের বয়ান তাদের ভালো লাগে। সম্প্রতি দেশে মূর্তি ও ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে নানা বয়ান হয়। গত বৃহস্পতিবার তারা শহরের কেনাকাটা করতে এসে দেখে পাঁচ রাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বানানো হচ্ছে। পরদিন জুমার নামাজে একটি মসজিদে বয়ানে তারা শুনতে পায় ভাস্কর্য ও মূর্তি ইসলামে হারাম। এরপর তারা দু’জনে সিদ্ধান্ত নেয় পাঁচ রাস্তার মোড়ে ভাস্কর্য ভেঙে ফেলবে। ওই দিন রাত ১২টার দিকে দুই রাকাত নামাজ শেষে মাদ্রাসা মিস্ত্রিদের রেখে যাওয়া দুটি হাতুড়ি নিয়ে রওনা হয়। রাস্তায় পুলিশের গাড়ি দেখে তারা মূল সড়ক দিয়ে না এসে ভেতরের সড়ক হয়ে মজমপুর গেটে এসে রেল লাইন ধরে হেটে থানামোড় হয়ে পাঁচ রাস্তার মোড়ে আসে। সেখানে মই বেয়ে উপরে উঠে ৭ থেকে ৮ মিনিটের বেশি সময় ধরে ভাস্কর্যের কিছু অংশ ভেঙে চলে যায়। মাদ্রাসায় ফেরার পর আবদুল্লাহ নামের এক ছাত্র দেখে ফেলে। তার মাধ্যমে সকলে জেনে যায়। পরে শিক্ষকদের পরামর্শে তারা বাড়ি চলে যায়।
গত ৪ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত ৫ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা মামলায় দুই শিক্ষক ও দুই ছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত শনিবার অপর আসামি দুই মাদ্রাসাশিক্ষক আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।
Comment here