নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা ভাইরাসের প্রভাবে এপ্রিলে লে-অফ বা বন্ধ থাকা পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ৬০ ভাগ বেতন পাবেন। আর যেসব কারখানায় অল্পকিছু দিন কাজ হয়েছে, যেগুলোর শ্রমিকরা পাবেন পুরো মাসের বেতন। একই সঙ্গে ঈদের আগে আর কোনো ছাঁটাই হবে না। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে শ্রমভবনে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের নেতৃত্বে ত্রিপক্ষীয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠক সূত্র জানায়, শুরুতেই শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের বিষয়ে আলোচনা হয়। পরবর্তীতে মার্চ ও এপ্রিল মাসের বেতন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয় দীর্ঘক্ষণ।
মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সব শ্রমিকই আগে-পরে বেতন পাবেন। তবে এপ্রিল মাসে লে-অফ ও বন্ধ থাকা কারখানার শ্রমিকদের মোট বেতনের ৬০ ভাগ দেওয়া হবে।
আর শ্রমিকনেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, অন্যায়-অযাচিতভাবে কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাই করা হচ্ছে। এটি বন্ধ করতে হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঈদের আগে আর ছাঁটাই হবে না বলে অঙ্গীকার করেন মালিক প্রতিনিধিরা।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাবেক এফবিসিসিআই সভাপতি সাংসদ শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি সাংসদ আব্দুস সালাম মুর্শেদী, বিকেএমইএ সভাপতি সাংসদ সেলিম ওসমান ও জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক, বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, সাবেক বিজিএমইএ সভাপতি আনোয়ার উল আলম পারভেজ।
অন্যদিকে শ্রমিকদের প্রতিনিধি হিসেবে বৈঠকে যোগ দেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুল আহসান, জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, শ্রমিকনেতা ডা. ওয়াজেদ প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, ‘এপ্রিলে ৬০ শতাংশ বেতন দেওয়ার সিদ্ধান্তটি অমানবিক। শ্রমিকরা মাসে আর কত টাকা বেতন পায়? বাসা ভাড়া, বাকির দোকান, ওষুধপত্রসহ পরিবারের অন্যান্য খরচ কীভাবে মেটাবে? আসলে শ্রমিকসংশ্লিষ্ট কারও সঙ্গে আলোচনা না করেই শ্রম মন্ত্রণালয় ও মালিকরা একেক সময় একেকটি সিদ্ধান্ত নেয়, যা কখনই শ্রমিকদের কল্যাণে আসে না।’
শ্রমিকনেতা মোশরেফা মিশু আমাদের সময়কে বলেন, ‘পোশাকশিল্প যদি বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করে, তা হলে তারা শ্রমিকদের এক মাসের বেতন দিতে পারে না কেন? এটা কোন ধরনের অমানবিক কাজ? শ্রমিকদের প্রতি মালিকদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই? সেটাই যদি থাকে, তা হলে এপ্রিল মাসের বেতন কেন ৬০ ভাগ দেওয়ার কথা বলছে। সরকার নতুন করে মালিকদের ঋণ দিচ্ছে। তার পরও শ্রমিকদের প্রতি মালিকরা কেন এমন বিচার করবে?’
Comment here