বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে দেয়া হলো প্রহসনের শাস্তি - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগে দেয়া হলো প্রহসনের শাস্তি

সুকান্ত সরকার,বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান মোঃ আক্কাস আলীর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেছে ঐ বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের দুজন ছাত্রী। গত বৃহস্পতিবার একটি ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।

এ বিষয়ে দেশ সংবাদের পক্ষ থেকে অভিযোগকারী ছাত্রীদের যোগাযোগ করলে তারা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযয়ী চতুর্থ বর্ষে তাদের থিসিস পেপারের কার্যক্রম শুরু হয় এবং তাদের সুপারভাইজার হিসেবে আক্কাস আলী দায়িত্ব পান। থিসিসের কাজ শুরুর পর থেকেই আক্কাস আলী তাদেরকে বিভিন্ন সময় তার ডিপার্টমেন্টের চেম্বারে এবং বাসায় দেখা করতে বলতেন। এমনকি কখনো কখনো শুক্রবার ও দেখা করতে বলতেন এবল তার নির্দেশ অনুযায়ী না চললে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়ার হুমকি দিতেন। অভিযোগকারী এক শিক্ষার্থী জানান তিনি ২৫ জানুয়ারী (শুক্রবার) থিসিসের বিষয়ে কথা বলতে আক্কাস আলীর নির্দেশ অনুযায়ী তার চেম্বারে দেখা করতে যান। তার গ্রুপের অপর দুই সদস্য বাড়িতে থাকায় তাকে একাই যেতে হয় এবং আক্কাস আলীর রুমে প্রবেশ মাত্র আক্কাস আলী দরজা বন্ধ করে দিয়ে ঐ ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনে চেষ্টা করেন। এসময় ছাত্রীর প্রচন্ড বাধার মুখে আক্কাস আলী বলেন ” আমি কিছু করবো না, শুধু একটু ধরতে দাও”।

এছাড়াও ওই সময় আক্কাস আলী এমন সব প্রস্তাব দেয় যা প্রকাশযোগ্য নয় বলে জানায় ঐ শিক্ষার্থী। এর আগে ২৪ জানুয়ারি তার গ্রুপের আরো এক সদস্যকে অসৎ উদ্দেশ্যে দেখা করার প্রস্তাব দেন এবং দেখা করলে বেশি নম্বর দেয়ার প্রলোভন দেখান বলে জানান ঐ শিক্ষার্থী। এ ঘটনার পরে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দুই শিক্ষার্থী তাদের বিভাগের শিক্ষকদের কাছে লিখিত অভিযোগ প্রদান করে এবং শিক্ষকদের পক্ষ থেকে তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানানো হয়। এ বিষয়ে অভিযুক্ত আক্কাস আলীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে আনা এ অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন। তিনি তার বিরুদ্ধে আনা এসকল অভিযোগকে ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত করেছেন এবং সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোঃ জামাল উদ্দীনকে এই ষড়যন্ত্রের জন্য দায়ী করেছেন। তবে সহকারী অধ্যাপক মোঃ জামাল উদ্দীন আক্কাস আলীর এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং তিনি এ বিষয়ে জড়িত নন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরাও সহকারী অধ্যাপক মোঃ জামাল উদ্দীন এর জড়িত না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এসময় এ দুই শিক্ষার্থী এটাও নিশ্চিত করেন যে তারা কারো দ্বারা প্ররোচিত হয়ে অভিযোগ করেন নি।

অভিযোগ সম্পর্কে এই দুই শিক্ষার্থী বলেন ” আমরা একটি ভয়ানক এবং লজ্জাজনক পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছি, বাবা মায়ের পরেই যাদের স্থান সেই শিক্ষকরাই যদি আমাদের নির্যাতন করে তাহলে কোথায় আমরা নিরাপত্তা পাবো? আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই তা না হলে আরো আক্কাস আলীর জন্ম হবে এবং নির্যাতনের স্বীকার হবে আরো অসংখ্য শিক্ষার্থী” এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আশিকুজ্জামান ভুঁইয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এধরণের কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানান তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন এ ধরনের একটি অভিযোগ পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন এবং অভিযোগটি পাওয়া মাত্র তিনি ঐ দুই ছাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সমস্যা সমাধানে ছাত্রীদের জন্য নারী শিক্ষকদের সুপারভাইজার হিসেবে নিযুক্তকরণসহ কোনো পুরুষ শিক্ষক যাতে কোনো ছাত্রীকে একা দেখা করার নির্দেশ না দেয় এবং ছুটির দিনে যাতে না ডাকে তা নিশ্চিত করেন বলে জানান।

Comment here