বিএনপির বৈঠক আজ, চাওয়া হতে পারে শপথের ব্যাখ্যা - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
রাজনীতি

বিএনপির বৈঠক আজ, চাওয়া হতে পারে শপথের ব্যাখ্যা

গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক আজ। শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল শুক্রবার দলের চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান দৈনিক আমাদের সময়কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, বৈঠকে দেশের চলমান রাজনীতি, দলের আন্দোলন কর্মসূচি, দল পূনর্গঠন, জোট সম্প্রসারণ ও ছাত্রদলের মধ্যকার চলমান অস্থিরতায় দলের কার ইন্ধন আছে ও এর সমাধান কী হতে পারে ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

তবে, প্রত্যাখ্যান করা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের নির্বাচিত চারজনের শপথ নেওয়া এবং মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের শপথ না নেওয়ার ব্যাখ্যা চাওয়া হতে পারে এই বৈঠকে।

এর আগে, গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রায় প্রতি সপ্তাহর শনিবার স্থায়ী কমিটির বৈঠক বসতো। কিন্তু দলের নির্বাচিত শপথ গ্রহণকে কেন্দ্র করে প্রায় দেড় মাস ধরে কোনো বৈঠকই হয়নি। যদিও বিএনপি নেতারা বৈঠক না বসার পেছনে যুক্তি দেখায়, যেহেতু রমজান মাসে কারাবন্দি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকতেন না; সেকারণেই গত দেড় মাসে স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়নি।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গত দেড় মাসে বৈঠক না বসার পেছনে ভিন্ন ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে। সর্বশেষ চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক বসেছিল। ওই বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দল থেকে নির্বাচিতদের শপথ নেওয়ার বিষয়ে স্থায়ী কমিটির নেতাদের কাছ থেকে একক ক্ষমতা চেয়ে নিয়েছিলেন।

তখন তাকে স্থায়ী কমিটির নেতারা বলেছিলেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, দলের চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। সেক্ষেত্রে, এটা চাওয়ায় স্থায়ী কমিটির নেতারা বিব্রত বোধ করেছিলেন। বৈঠকের পরেরদিন ২৯ এপ্রিল তারেক রহমান দলের নির্বাচিতদের শপথ গ্রহণের সিদ্ধান্ত দেন। কিন্তু মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়া অন্যরা শপথ নেন। এই ঘটনায় স্থায়ী কমিটির নেতারা চরম ক্ষুব্ধ হন।

এর কয়েক দিন পর স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডেকেও পরে তা বাতিল করতে বাধ্য হয় বিএনপি। জানা গেছে, স্থায়ী কমিটির বেশ কয়েকজন নেতা ওই বৈঠকে বসতে অস্বীকৃতি জানানোর কয়েক ঘন্টার মধ্যে ওই বৈঠক বাতিল করা হয়েছিল।

নয়াপল্টনে স্কাইপের মাধ্যমে কথা বলে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের ক্ষোভ প্রশমনে দলের স্থায়ী কমিটির সস্য গয়েশ্বর চন্দ্রকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেন গয়েশ্বর।

এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা বলেন, ‘সিনিয়র নেতারা এখন সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিতে চান। এজন্য তারা কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির অপেক্ষায় থাকবেন। এখন সরে গেলে দেশের মানুষ হয়ত বেঈমান ভাববেন।’

যদিও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত ছিল, শপথ না নেওয়ার। যেহেতু বিএনপি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে পুনঃনির্বাচনের দাবি করেছে। সেহেতু শপথ নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এই নিয়ে দলের স্থায়ী কমিটির নেতারা প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানায়। যদিও অনেকের ধারণা ছিল, পর্দার অন্তরালে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কোনো সমঝোতার কারণেই হয়ত তারেক রহমান শপথ নেয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।

কিন্তু স্থায়ী কমিটির এক নেতা জানিয়েছেন, তার তারেক রহমানের সঙ্গে এই কথা হয়েছে, তার কথায় মনে হয়েছে তিনি স্বেচ্ছায় শপথ নেয়ার সিদ্ধান্ত দেননি। তাকেও বাধ্য করা হয়েছে।

ওই সময়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘কারাবন্দি অসুস্থ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা, মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের অংশ হিসেবে সংসদে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেছিলেন, ‘দলের সিদ্ধান্ত সংসদে না যাওয়ার। দলের সিদ্ধান্ত যদি শপথ নেওয়ারই হতো তা হলে তো মহাসচিব শপথ না নিয়ে দলের সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করেছেন।

শপথ গ্রহণের পর হারুনুর রশীদ বলেন, ‘তারেক রহমানের নির্দেশেই তারা শপথগ্রহণ করেছেন। সংসদে তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে সোচ্চার থাকবেন।’

Comment here