কেউ যেন দেশের ক্ষতি করতে না পারে, সে জন্য সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপির ভয়ংকর অগ্নিসন্ত্রাসের রূপ আবারও দেখলো দেশবাসী। বাংলাদেশে যেন এই ধরনের সন্ত্রাসীরা ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য সকলের কাছে আমার আহ্বান থাকলো।’
আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে আরও ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) ইসলাম ধর্মের নামে রাজনীতি করে কিন্তু ধর্মীয় কাজে কোন আন্তরিকতা ছিল না। যা ছিল তা শুধু দেখানো। এরা সন্ত্রাসী, অগ্নিসন্ত্রাস করে। গতকালও দেখেছেন, কতগুলো বাস পুড়িয়েছে। এর আগে জীবন্ত মানুষগুলোকে কিভাবে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। কোন মানুষ এভাবে পেট্রোল বোমা দিয়ে, আগুন দিয়ে, চলন্ত বাস, গাড়ি, ট্রেন, লঞ্চ, অফিস, স্কুল কোন কিছু তারা বাদ দেয়নি। ২০১৩/১৪-তে এগুলো যেমন পুড়িয়েছে, গতকালও সেই ভয়ংকর অগ্নিসন্ত্রাসের রূপ আমরা আবার দেখলাম। বাংলাদেশে যেন এই ধরনের সন্ত্রাসীরা ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য সকলের কাছে আমার আহ্বান থাকলো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের হজ ব্যবস্থাপনা অত্যান্ত চমৎকারভাবে করে দিচ্ছি। আরও সুবিধা আমরা করে দিচ্ছি। যেমন- মেট্রোরেল তৈরি হচ্ছে। সারা বাংলাদেশের সঙ্গে আমরা রেল যোগাযোগ বাড়াচ্ছি। আমাদের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে যাচ্ছে। আমাদের রাস্তাগুলো আমরা উন্নত করে দিচ্ছি। বিমানবন্দর স্টেশন থেকে আন্ডারপাস করে দিচ্ছি, যাতে যাত্রীরা সহজে সেখান থেকে যেতে পারে।’
আরও পড়ুন: আরও ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের দেশটা আরও এগিয়ে যাক। ২০১০ সালে আমি ক্ষমতায় এসে ইমাম মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করে দিয়েছিলাম। যাকাত তহবিল ব্যবস্থাপনা আইন ২০২৩ আমরা প্রণয়ন করেছি।’
আলেম ও মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সমাজে নানা ধরণের অপকর্ম হয়, এগুলো থেকে যেন মানুষ বিরত থাকে সে দিকে সজাগ থাকতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেন।
ইসলামের সঠিক বাণী মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। তার অংশ হিসেবে আজ রোববার পঞ্চম পর্বে এ মডেল মসজিদগুলো উদ্বোধন করা হয়।
মডেল মসজিদ এবং ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাসহ ওযু ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে। এছাড়া মসজিদে হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র ও ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, দাফনের আগে আচার ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, হিফজখানা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা ও ইসলামিক কনফারেন্স রুম থাকবে।
সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড এবং ইসলামী দাওয়াত, ইসলামী বই বিক্রয় কেন্দ্র, মসজিদের সাথে দেশী-বিদেশী অতিথিদের জন্য বোর্ডিং সুবিধাও থাকবে এই মসজিদে।
ইতোমধ্যে, ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর ১ম পর্যায়, ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি ২য় পর্যায় এবং ২০২৩ সালের ১৬ মার্চে ৩য় পর্যায় এবং ২০২৩ সালের ১৭ এপ্রিল ৪র্থ পর্যায় ৫০টি করে মোট দুইশত টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে।
Comment here