বিএনপির ১০ দফায় যা আছে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
রাজনীতি

বিএনপির ১০ দফায় যা আছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকার পতনের আন্দোলনে এবার সমমনা দলগুলোকে নিয়ে রাজপথে নামছে বিএনপি। দলটির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে একমত হয়েছে সরকারবিরোধী অধিকাংশ দল। আজ গোলাপবাগে ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে কী আছে এই ১০ দফায়?

আজ শনিবার রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে আয়োজিত গণসমাবেশে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ কারাবন্দি নেতাদের মুক্তি, দলীয় কার্যালয়ে হামলা এবং গুলিতে নিহত নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে আগামী ১৩ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরসহ প্রতিটি জেলা-মহানগরে বিক্ষোভ ও গণমিছিল কর্মসূচি পালন। এ ছাড়া ১০ দফা আদায়ে আগামী ২৪ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় গণমিছিলের কর্মসূচি।

এ সময় খন্দকার মোশাররফ হোসেন বিএনপির ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন।

১০ দফা

১. বর্তমান অনির্বাচিত অবৈধ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করে ভোটবিহীন, গণতন্ত্রহরণকারী, লুটেরা ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।

২. ১৯৯৬ সালে সংবিধানে সংযোজিত ধারা ৫৮-খ, গ ও ঘ-এর আলোকে দলনিরপেক্ষ একটি অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করতে হবে।

৩. নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার বর্তমান অবৈধ নির্বাচন কমিশন বাতিল করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। এই কমিশন অবাধ নির্বাচনের অনিবার্য পূর্বশর্ত হিসেবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আরপিও সংশোধন, ইভিএম পদ্ধতি বাতিল ও পেপার ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ব্যবহার বাতিল করতে হবে।

৪. দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সব বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী, পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনকারী সব মানবাধিকার কর্মী ও সাংবাদিক এবং আলেমদের সাজা বাতিল, সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সব রাজনৈতিক কারাবন্দিকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। দেশে সভা-সমাবেশ ও মতপ্রকাশে কোনো বাধা সৃষ্টি না করা; সব দলকে স্বাধীনভাবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনে প্রশাসন ও সরকারি দল কর্তৃক কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ বা বাধা সৃষ্টি না করা; স্বৈরাচারী কায়দায় বিরোধী কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করার লক্ষ্যে নতুন কোনো মামলা ও বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা যাবে না।

৫. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮, সন্ত্রাস দমন আইন-২০০৯ এবং বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪সহ মৌলিক মানবাধিকার হরণকারী সব কালাকানুন বাতিল করতে হবে।

৬. বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাস, সার ও পানিসহ জনসেবা খাতে মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী সরকারি সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে।

৭. নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে এবং নিত্যপণ্যের বাজারকে সিন্ডিকেটমুক্ত করতে হবে। মুদ্রাস্ফীতির আলোকে শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা, শিশুশ্রম বন্ধ করা ও কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে।

৮. গত ১৫ বছর ধরে বিদেশে অর্থপাচার, ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত ও শেয়ারবাজারসহ রাষ্ট্রীয় সকল ক্ষেত্রে সংঘটিত দুর্নীতি চিহ্নিত করার লক্ষ্যে একটি কমিশন গঠন করতে হবে।

৯. গত ১৫ বছরে গুমের শিকার সব নাগরিককে উদ্ধার করতে হবে এবং বিচারবহির্ভূত হত্যা ও রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের প্রতিটি ঘটনার আইনানুগ বিচারের ব্যবস্থা করে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, উপাসনালয় ভাঙচুর ও সম্পত্তি দখলের জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে বিচারিক প্রক্রিয়ায় শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

১০. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের উপযোগী করার লক্ষ্যে সরকারি হস্তক্ষেপ পরিহার করে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।

 

Comment here