বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি তার প্রমাণ আমার পাসপোর্ট না দেওয়া : ভিপি নুর - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
রাজনীতি

বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি তার প্রমাণ আমার পাসপোর্ট না দেওয়া : ভিপি নুর

নিজস্ব প্রতিবেদক : পাসপোর্ট চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ভিপি) নুরুল হক নুরের করা রিট আবেদনের ওপর শুনানির সুনির্দিষ্ট দিন ধার্য না করে ২০২০ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে শুনানির জন্য রেখেছেন হাইকোর্ট। পাসপোর্টের জন্য করা আবেদনের শুনানি করতে গেলে আজ রোববার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

পরে পাসপোর্ট না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে ভিপি নূর সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেশে যে বিচার এতে আমার কাছে স্পষ্ট প্রতিয়মান যে, সরকার হয়তো আদালতকে প্রভাবিত করেছে আমার পাসপোর্ট না দেওয়া জন্য। যে কারণে আদালত আমার পাসপোর্ট দেয়নি। কারণ ডাকসুর ভিপি হিসেবে আমার মেয়াদ হচ্ছে আগামী বছরের ১১ মার্চ পর্যন্ত। সেই কারণেই এ পর্যন্ত আমার পাসপোর্ট না দিয়ে পাসপোর্টটিকে এখন আবার জানুয়ারি পর্যন্ত একটা ডেট দেওয়া হলো। বলেছে শুনানি হবে, তখন হয়তো দেখা যাবে আবার তারিখ পেছাবে।’

ads

তিনি বলেন, ‘দেশে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে তার প্রমাণ আমার পাসপোর্ট না দেওয়ার বিষয়টি। বিচারকরা স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না সরকারের নগ্ন হস্তক্ষেপের কারণে। এতে বিচার বিভাগের ওপর মানুষের আস্থাহীনতার সৃষ্টি হচ্ছে। এটা বিচার বিভাগের চিত্র হতে পারে না। এটা সরকারের কর্মকাণ্ড হতে পারে না।’

ভিপি আরও বলেন, ‘আদালতের প্রতি সম্মান করে বলব, জনগণের আস্থার শেষ আশ্রয়স্থল। আপনারা সরকারের হস্তক্ষেপে নয়, বিবেকের দ্বারা পরিচালিত হয়ে জনকল্যাণে রায় দেবেন সেটাই প্রত্যাশা করি।’

রোববার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে ভিপি নুর তার এই প্রতিক্রিয়া জানান। এ সময় তার সঙ্গে থাকা আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদও এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ভিপি নূর বলেন, ‘আমি ডাকসু ভিপি হয়েও এ পর্যন্ত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দ্বারা চারবার হামলার শিকার হয়েছি। এ কারণে আমি শারীরিকভাবে আহত। চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য আমাকে বিদেশে যাবার পরামর্শ দিয়েছেন। সে কারণে আমি পাসপোর্টের জন্য গত ২৩ এপ্রিল পাসপোর্ট অধিদপ্তরে আবেদন করিছি। পাসপোর্ট অধিদপ্তর গত ২ মে তাকে পাসপোর্ট দেবার দিন নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু পাসপোর্ট দেয়নি রহস্যজনক কারণে। কিন্তু তারা নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট না পেয়ে গত পহেলা আগস্ট আদালতে রিট আবেদন করেন তিনি।

নুর আরও বলেন, ‘পাসপোর্ট না পেয়ে আমি আদালতের শরনাপন্ন হই। পহেলা আগস্ট আদালতে রিট আবেদন করি। দীর্ঘদিন আদালত বন্ধ ছিল। এ কারণে শুনানি হয়নি। আজ আমার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ শুনানির জন্য দিন ধার্য করার আবেদন জানান। কিন্তু আদালত শুনানির দিন ধার্য করতে রাজি হননি। কবে শুনানি হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।’

এই ছাত্র নেতা আরও বলেন, ‘পাসপোর্ট পাওয়া একজন মানুষের মৌলিক অধিকারেরই অংশ। একজন ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে আমার অন্য দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য বিদেশ যেতে হতে পারে। যেমন পাসপোর্ট না থাকার কারণে নেপালে একটি অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি। অক্সফোর্ড ছাত্র ইউনিয়নের একটি অনুষ্ঠানেও যেতে পারছি না।’

এ সময় অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ বলেন, ‘বিষয়টি মৌলিক অধিকারের সঙ্গে জড়িত। এই শুনানিটা জরুরি করা উচিত ছিল। আমিও বিষয়টির নিন্দা জানাই। সাত দিনে বা ১০ দিনে শুনানির দিন ধার্য করে সরকারের বক্তব্য শুনে একটা সিদ্ধান্ত দিত। এখন পর্যন্ত যদি আমাকে সুনির্দিষ্ট একটা তারিখই না দেয়, শুনানির দিনই নির্ধারণ না করে, তাহলে সরকার এসে বলবে আবারও সময় দেন। আদালতকে বোঝা উচিত কোন বিষয়টা জরুরি আর কোনটা জরুরি নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘জানুয়ারিতে যদি আবার সরকার সময় চায়, আদালত যদি সময় দেয় তাহলে হয়তো ভিপি নুরের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে।

Comment here