পরীক্ষায় প্রশ্ন সাজানো (মডারেশন), কমন না পড়া এবং এই ব্যাপারে হলেই ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী ইমরান রনির একটি মন্তব্য, এরই জের ধরে গত ১৩ই ডিসেম্বর কারন দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। বায়োটেকনোলজি ও জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ও বিভাগীয় সভাপতি আব্দুল্লাহ আল জোবায়েরের পদত্যাগসহ কয়েকদফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে।
আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থীর বক্তব্য:
আমাদের ভিতরে আগের থেকেই অনেক অনিয়ম অভিযোগ নিয়ে ক্ষোভ ছিল। অনেক ভিতরের ঘটনা ছিল। সর্বশেষ বিনা কারনে শোকজ (কারন দর্শানো) নোটিশ দিল, এক পর্যায়ে আমরা সহ্য করতে না পেরে আন্দোলনে নেমেছি। ১৩ তারিখ পরীক্ষায় হলের ভিতর প্রশ্ন মডারেশন নিয়ে একটু টুকটাক কথা হয়েছে। একজন তখন বলে ওঠে, স্যার (সভাপতি) প্রশ্ন সিলেবাসের মধ্যে হলেও ক্লাসের পঠিত টপিক্সের বাহির থেকে আসছে। তখন স্যার বলে, “প্রশ্ন বাহিরের থেকে মডারেশন (সাজানো) হয়েছে। এভাবেই পরীক্ষা দিতে হবে। সিলেবাসের ভিতর থেকেই হহয়েছে। মডারেশনে আমাদের কোন হাত নেই।” ইমরান (শিক্ষার্থী) বলে যে, “তাহলে তো এটা স্যারদের প্রবলেম। সিলেবাসে থাকলেও টপিক্স ক্লাসে পড়ানো হয়নি।” পরে স্যার ইমরানকে একটু ধমকায়। এবং পরে নোটিশ দেয়, “পরীক্ষারর হলে পরিদর্শকের সাথে অসদাচরণ করার জন্য কেন পরীক্ষা বাতিল করা হবেনা।” কিন্ত স্যার আসছিল ঠিক, কিন্ত লিস্টে চারজন পরিদর্শকের নামের মধ্যে তার নাম ছিল না। আর এখানে কোন অসদাচরণও হয়নি। এছাড়াও ওনার স্বেচ্ছাচার, বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, ছাত্রবান্ধব না, ল্যাব ঠিকঠাক না নেওয়া, রেজাল্ট দিতে দেরি করা ব্যক্তিগত আক্রোশে রেজাল্টে প্রভাব ফোলানো ইত্যাদি কারনে ওনার বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করছি। আমরা জানি ল্যাবের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা কিছু আছে, কিন্ত আন্তরিকতার ঘাটতিও রয়েছে।
আন্দোলন প্রসঙ্গে বিভাগীয় চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল জোবায়েরের বক্তব্য:
তারা যখন আন্দোলন শুরু করে, আমরা শিক্ষকরা আন্দোলনের কারনটি জানানোর আহ্বান জানাই, আসলে অভিযোগ কি, এবং যারা বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তার মন্তব্য কি। তারা বিভাগে কোন অভিযোগ বিভাগে বা আমাদের জানায়নি এবং বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সুযোগ দেয়নি।
পরীক্ষার হলে মডারেশন একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়। মডারেট হয়ে যাওয়ার পরে শিক্ষকরা সেটা অনুসরণ করতে বাধ্য থাকে। যারা মডারেশন করেন, তার অবশ্যই বিজ্ঞ। কিন্ত ব্যাপারটি নিয়ে হলে এক শিক্ষার্থী অসদাচরণ করলে কারন জানতে চাওয়া হয়। কিন্ত তারা কারন না জানিয়ে আন্দোলন শুরু করে।
আর পরীক্ষার ফলাফল নির্ণয়ও হয় একটি ৩ ধাপের প্রক্রিয়ায়। পরীক্ষার খাতায় বা ফলাফলে কাউকে কম দেওয়া বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের প্রভাব ফেলানোর কোন সুযোগ নেই। ল্যাবের ব্যাপারে আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও চেষ্টার কোন ত্রুটি নাই। আমরা ধাপে ধাপে সমস্যা সামনে রেখে, সম্পদের লোকবলের অপ্রতুলতার মধ্যেও সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছি। উন্নয়ন একটি চলমান প্রক্রিয়া। নতুন বিভাগ, তাই ধাপে ধাপে আগাতে হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থী সংখ্যাও বেশী। তারপরও মোটামুটি শৃঙ্খলার মধ্যেই সবাইকে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তো সমস্যা যা তারা সম্মুখীন হচ্ছে, যদি আমাদের সাথে বসে আলোচনা করে, তাহলে সমাধানের কোন না কোন পথ বের হয়। এক্ষেত্রে ছাত্রশিক্ষক সম্পর্কের যে ব্যাপারটা থাকে, দুটো পাশকেই আন্তরিক হতে হবে। নয়ত, সমাধান আশা করা যায়না। আমরা তাদের সাথে, তাদের বিভিন্ন বিষয়ে সমাধানের চেষ্টা। শিক্ষার্থীর তুলনায় শিক্ষকের অনুপাতও কম। নতুন বিশ্ববিদ্যালয়, নতুন সময়েরও একটু দরকার আছে। আশা করছি আস্তে আস্তে সম ঠিক হবে।
রেজিস্টারের বক্তব্য:
এ ব্যাপারে রেজিস্টার ড. নূরউদ্দিন আহমেদ জানান, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে উপাচার্যের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
Comment here