পতিত হাসিনা সরকারের আমলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ছিল দুর্নীতির আখড়া। রাষ্ট্রায়ত্ত এ প্রতিষ্ঠানের উড়োজাহাজ, যন্ত্রাংশ থেকে শুরু করে সব রকম ক্রয়েই ছিল অনিয়ম। শুধু তাই নয়। নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস, ফ্লাইটে খাবার সরবরাহে অপকর্ম, নতুন সফটওয়্যার ক্রয়ে নিয়ম ভঙ্গ করার পাশাপাশি এসব কা-ে জড়িতদের যথাবিচারের মুখোমুখি না করে বরং দায়মুক্তির নজিরও রয়েছে ভূরি ভূরি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের বিমানের খরচে বাড়তি সুবিধা দিতে গিয়ে অসংখ্যবার আর্থিক অনিয়ম করা হয়েছে। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসায় বিমানের ডাক্তারকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয় কোনো নিয়মনীতি না মেনেই। তৎকালে দায়িত্বে থাকা বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শফিউল আজিমের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অনেক অভিযোগ রয়েছে। বলা হচ্ছে, দোষীদের ছাড় ও অপকর্মে প্রশ্রয় দিতেন তিনি। এক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটাতেন। সামাজিক মাধ্যমে নিজেকে ‘শেখ হাসিনাস ম্যান’ হিসেবে জাহির করতেন শফিউল আজিম।
তার ফেসবুক আইডির প্রোফাইল পিকচারেও আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়েও দেখা গেছে হাসিনার ছবি ও তার পাশে ‘শেখ হাসিনাস ম্যান’ স্লোগান। তাই তার অপকর্মের বিরুদ্ধে ওই
সরকারের আমলে কেউ মুখ খোলার সাহস পর্যন্ত পেতেন না। ক্ষমতার পালাবদলের পর, এখন একে একে বেরিয়ে আসছে তার যত অপকর্ম; মুখ খুলতে শুরু করেছেন বিমানের কর্মকর্তারা। বর্তমানে তিনি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সচিব হিসেবে কর্মরত আছেন।
শফিউল আজিমের মুখে একটি সংলাপ প্রায়ই শোনা যেত- ‘ফেইলিউর ইজ নট অ্যান অপশন’। তার পদ-পদবি বাগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে এটিই সত্যি। উন্নতির ধাপে ধাপে কখনও কোথাও ফেল করেননি তিনি, ছলে-বলে-কৌশলে ঠিকই এগিয়ে গেছেন। প্রশাসনের ১৫তম বিসিএস ব্যাচের এ কর্মকর্তা সবাইকে ‘ম্যানেজ’ করে সচিব হন এবং দায়িত্ব পান নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের। তার ব্যাচে তিনিই প্রথম এ পদে উন্নীত হন। তিনি যেখানে যখন দায়িত্বে ছিলেন, সেখানেই তার বিরুদ্ধে রয়েছে স্বজনপ্রীতি, প্রভাব বিস্তার ও অন্যায়ভাবে প্রশ্রয়দানের বিস্তর অভিযোগ। যদিও এসব অভিযোগ তিনি বরাবরই অস্বীকার করছেন। এর আগে, ব্রুনাইয়ে থাকাকালে বাংলাদেশের প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর শফিউল আজিমের নির্যাতন চালানোর একটি ভিডিও ফুটেজও ফাঁস হয়েছে, যা আমাদের সময়ের হাতেও এসেছে। কথিত আছে, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা পরিচয়ও তার প্রভাব বিস্তারে ভূমিকা রেখেছিল।
অভিযোগ প্রসঙ্গে লিখিতভাবে শফিউল আজিম জানান, তিনি কখনোই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। নিজের পেশাদারত্ব ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বর্তমান অবস্থানে এসেছেন। তবে ‘শেখ হাসিনাস ম্যান’ প্রসঙ্গটি কৌশলে তিনি এড়িয়ে গেছেন।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সুবিধা দিতেই ব্যস্ত থাকতেন বিমানের তৎকালীন এমডি ও সিইউও শফিউল আজিম। ২০২৩ সালের ২৩ জানুয়ারি ও ১৬ ডিসেম্বর এবং চলতি বছরের ১১ জুন সিঙ্গাপুরে নিয়মিত চিকিৎসার জন্য যান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কাদেরকে এক্ষেত্রে তিন-তিনবার অনৈতিক সুবিধা দিয়েছে বিমান, সঙ্গে বিমানের পক্ষ থেকে একজন চিকিৎসকও দেওয়া হয়। এটি আর্থিক অপচয়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইনেরও লঙ্ঘন। কারণ কোনো যাত্রী বিমানে চড়ার পর যদি অসুস্থ হয়ে পড়েন কিংবা কোনো যাত্রীর চিকিৎসক প্রয়োজন কিনা, সেটি বিবেচনা করবেন সংশ্লিষ্ট বিমান ক্রু। একে বলা হয় জেনারেল ডিক্লারেশন। কিন্তু কাদেরের ক্ষেত্রে এসবের কিছুই মানা হয়নি। প্রাপ্ত তথ্য বলছে, কাদেরের সঙ্গে যাওয়ার সময় বিমান মেডিক্যাল সেন্টারের মেডিক্যাল অফিসার ডা. আব্দুর রহমানের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ দেখানো হয়েছে ফ্লাইটসংক্রান্ত নথিতে। ভিআইপি সফরসঙ্গীদের তালিকায় তার ঠিকানায় উল্লেখ আছে- সুকতাইল গোলাপাড়া, গোপালগঞ্জ; এনআইডি নম্বর : ১৯৯৩১০২২০০৪০০০১৩৪। অথচ এই এনআইডির ঠিকানা হচ্ছে- গ্রাম : চরসূত্রাপুর জহুরুল পাড়া, বগুড়া সদর। প্রভাবশালী মন্ত্রীর সফরসঙ্গীর এমন তথ্য গোপনের কা- রাষ্ট্রায়ত্ত এ সংস্থাটির সার্বিক নিরাপত্তার প্রশ্নেও অশনিসংকেত বটে।
এ অন্যায়ের সাফাই গাইতে গিয়ে তৎকালীন এমডি শফিউল আজিম বলেন, অসুস্থ ভিআইপি যাত্রীদের ভ্রমণকালীন চিকিৎসক প্রেরণের বিষয়টি ম্যানুয়াল অনুযায়ী বিমানের স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক নির্ধারণ হয়ে থাকে। এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি তার দায় এড়ানোর চেষ্টা করেছেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিমানের টিকিট বিক্রিতে অনিয়মের খবর পুরনো। বিমানের সার্ভার হ্যাক, তথ্য চুরির মতো ঘটনা ঘটলেও ধামাচাপা দেওয়া হয় গত সরকারের আমলে। বিমান তা অস্বীকার করে তখন। সে সময় ‘সেবার’ নামে ত্রুটিপূর্ণ অ্যাপ চালু করে সংস্থাটি। এ প্রতিষ্ঠানটিকে কাজ পাইয়ে দিতে অনিয়ম হয়েছে বলে তদন্তে বেরিয়েছে। ওই সফটওয়্যারের কারণে আর্থিক ক্ষতি, অডিট রিপোর্ট এবং দুদকের প্রতিবেদন পেয়েও তৎকালীন বিমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। টিকিট নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদনে এমডির রেফারেন্স উল্লেখ করা আছে। একদিকে আসন খালি থাকা, অন্যদিকে একই সময় কৃত্রিমভাবে টিকিটের সংকট সৃষ্টি করে চড়া দামে বিক্রির বিষয়ে এমডি হিসেবে তিনি কী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, এ নিয়েও প্রশ্ন জেগেছে। অভিযোগ আছে টিকিটকা-ে জড়িত বিপণন বিভাগের সংশ্লিষ্ট পরিচালকের চুক্তি বৃদ্ধিতেও তার হাত ছিল।
এসব অভিযোগের বিষয়ে বিমানের সাবেক এই এমডি আমাদের সময়কে বলেন, টিকিট বুকিং সিস্টেম অটো জেনারেটেড হয় এবং যার নামে বুকিং হয়, তার পাসপোর্টের কপি দিতে হয়। বুকিংকালীন মোবাইল নম্বরে একটি ওয়াম টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) আসে। টিকিট সিস্টেম বিশ^খ্যাত ‘সেবার’ সিস্টেমের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এক্ষেত্রে এমডির সুপারিশে টিকিট বুকিং রাখার সুযোগ নেই। পরিচালকের চুক্তি বাড়াতে তার হাত ছিল, এমন অভিযোগও অস্বীকার করেছেন তিনি।
২০২২ সাল থেকে বিমানের প্যাসেঞ্জার সার্ভিস সিস্টেম (পিএসএস) বাস্তবায়ন করছে ‘সেবার গ্লোবাল ইনকরপোরেশন’। বিমানের স্বার্থ বিবেচনা না করে চুক্তি করা হয় প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে। অডিট রিপোর্টে বলা হয়- প্রতিযোগিতা সীমিত করে ও প্রকৃত হিসাব গোপন করে চুক্তিবদ্ধ হয় বিমান। আবার সম্পাদিত চুক্তিতে অনেক চার্জ যুক্ত করা হয়েছে, যা সেবার কর্তৃক প্রদত্ত আর্থিক প্রস্তাবে উল্লেখ নেই। এ ছাড়া ৩ বছর পর প্রতিটি সেবার গ্লোবালের বিপরীতে ২ শতাংশ হারে মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি আর্থিক প্রস্তাবে উল্লেখ করা হলেও আর্থিক মূল্যায়নকালে তা হিসাবে না নেওয়ায় মূল্যায়িত দর কম প্রদর্শিত হয়েছে। চুক্তিতে দেখানো হয়েছে, ১০ বছরে বিমানকে পরিশোধ করতে হবে ২ কোটি ৬৮ লাখ ৬৪ হাজার ৭০৮ ডলার। ফলে এ সময়ে বিমানকে অতিরিক্ত আরও ৫৩ লাখ ৯৪ হাজার ৪৯৬ ডলার পরিশোধ করতে হবে। অথচ বিমান পরিচালনা পর্ষদ ২ কোটি ৬৮ লাখ ৬৪ হাজার ৭০৮ ডলারের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান সেবার গ্লোবাল কর্তৃক প্রদত্ত ফাইন্যান্সিয়াল অফার, সম্পাদিত চুক্তির সব কমপোনেন্ট এবং তার সংশ্লিষ্ট দর ধরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতার দর হিসাব করলে র্যাংকিং পরিবর্তনের সম্ভাবনা আছে। ভুল হিসাবের ভিত্তিতে প্রস্তুতকৃত আর্থিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন সঠিক প্রতীয়মান হয় না। বিমান পরিচালনা পর্ষদে ওই ভুল আর্থিক মূল্যায়ন প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয় এবং বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হয়। এ নিয়ে নিরীক্ষার সুপারিশ উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির মাধ্যমে প্রকিউরমেন্ট আইন ও বিধি লঙ্ঘন জালিয়াতিপূর্ণ চুক্তি সম্পাদনের বিষয়ে দায়দায়িত্ব নির্ধারণ এবং অবিলম্বে বিমানের স্বার্থ পরিপন্থি ওই চুক্তি বাতিল করা আবশ্যক। এ ঘটনায় চলতি বছরের ২৭ মে তদন্ত শুরু করে দুদক। বিমানের মহাব্যবস্থাপক মিজানুর রশিদকে নিয়ে দুদকের তদন্ত চলছে। অথচ ২০২৩ সালের ২১ আগস্ট মিজানুর রশিদকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির নথিতে সই করেন তৎকালীন এমডি শফিউল আজিম।
এদিকে কোনো রকম সমীক্ষা ছাড়াই ঢাকা-রোম-ঢাকা এবং ঢাকা-নারিতা-ঢাকা ফ্লাইট চালু করে বিমান। এখন রুট দুটিতে লোকসান গুনতে হচ্ছে। ঢাকা-রোম উদ্বোধনী ফ্লাইটে বিলাসী সফর ছিল বিমানের। সেখানে বিপুল অঙ্কের অর্থ অপচয় হয়েছে অন্তত ৭০ জনকে সফরসঙ্গী করার কারণে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ আমলের এমপি, গোপালগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিভা ম-লও ছিলেন সেখানে। সাবেক এমপি অপরাজিতা হক ও তার স্বামী মোজাম্মেল বাবুও ঘুরেছেন বিমানের খরচে। এমন যাত্রীও ছিলেন ওই ফ্লাইটে, যার একাধিক মেয়ে বাবার সঙ্গে সফরসঙ্গী হন। বিমানের ব্যবস্থাপনায় তাদের ভিসাও জোগাড় করা হয়। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে যাত্রী করার বিষয়টি অস্বীকার করেন বিমানের সাবেক এমডি শফিউল আজিম। অথচ খোদ বিভা ম-লই স্বীকার করেছেন যে, তিনি ওই ফ্লাইটে ছিলেন।
বর্তমানে বিপুল অঙ্কের টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে রুট দুটি চালুর পর থেকে। বিমানের জন্য এয়ারবাস কেনা নিয়েও বিস্তর অভিযোগ আছে। অর্থ ঘাটতির মধ্যেও এয়ারবাস কিনতে রাজি হয় বিমানের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। প্রথমে সংস্থাটি দেখতে পায়, দুটি এয়ারবাস (এ৩৫০) কিনলে তাদের বড় ধরনের লোকসান হবে। এরপর নতুন একটি কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয় বিষয়টি মূল্যায়নের। তিন দিনের মাথায় নতুন কমিটি এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, এয়ারবাসের উড়োজাহাজ লাভজনক হবে। এ জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়। চারটি এয়ারবাসের প্রতিটির দাম পড়বে প্রায় ১৮০ মিলিয়ন ডলার। বিমানের দাবি, কেবিন ফ্যাক্টর ৯২ শতাংশ হলে লাভজনক হবে অর্থাৎ গড়ে ৯২ শতাংশ আসন পূরণ হলে তা লাভজনক হবে। কিন্তু বিমান কখনোই তা অর্জন করতে পারেনি। এ ছাড়া গত সময়ে বিমানের যন্ত্রাংশ কেনা নিয়ে ভুয়া রসিদ দেখানোর ঘটনাও ঘটেছে। এতে ১৮ কোটি টাকা ক্ষতির খবর মিলেছে।
শফিউল আজিমের সময়কালে বিমানের ফ্লাইটে জয় বাংলা সেøাগান দিতে বাধ্য করা হয় কেবিন ক্রুদের। এ নিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে বাগ্বিত-াও ঘটে। এ ছাড়া শোক দিবসের পাশাপাশি শিশু দিবস, শেখ কামাল দিবস, ফজিলাতুন্নেসা দিবস অর্থাৎ আওয়ামী সরকার গৃহীত যত দিবস, সেগুলো পালন করতে বাধ্য করা হতো বিমানকে। এতে অপারেশনাল কার্যক্রমের ব্যাঘাত ঘটলেও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ ছিল না ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের। এ নিয়ে শফিউল আজিম তার বক্তব্যে বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পরিপত্র অনুযায়ী এ নির্দেশনা জারি হয়েছিল। আর অপ্রচলিত দিবস পালনের বিষয়টি আদৌ সত্য নয়।
বিমান এমডি হিসাবে ১০ বছরের জন্য যুক্তরাজ্যের ভিসা নিয়েছেন শফিউল আজিম। অথচ এটি অনৈতিক। এত দীর্ঘ সময়ের জন্য তার ভিসা নেওয়ার যৌক্তিকতা নেই। এ বিষয়ে তিনি বলেন, লন্ডন কার্যালয় বিমানের গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন। লন্ডন কার্যালয় নিজস্ব ভবন সংস্কার কার্যক্রম তদারকি ও বুঝে নেওয়াসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষের সঙ্গে চুক্তি করতে জরুরিভিত্তিতে লন্ডন যাতায়াতের দাপ্তরিক প্রয়োজনে তিনি দীর্ঘমেয়াদি ভিসা নিয়েছিলেন।
বিমানের পোলট্রি কমপ্লেক্সে ১ কোটি টাকার লোকসান হয় ভুল ওষুধ ও খাবার প্রয়োগের কারণে। এটি বিমানের অভ্যন্তরীণ তদন্তে প্রমাণিত হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিমান। এ ছাড়া প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় ওই সময়ে। খবরে বেরিয়েছে- প্রতিটি প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে। এরপর তৎকালীন বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পরিবর্তন হয়। দায়িত্ব পান শফিউল আজিম। তার সময়েও ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
ব্রুনাইয়ে কর্মরত শ্রমিকদের শফিউল আজিমের মাধ্যমে শারীরিকভাবে নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, ব্রুনাইয়ে কাউন্সিলর (শ্রম) হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে দূতাবাসের মধ্যে শ্রমিকদের লাথি ও লাঠিপেটা করছেন তিনি। এ বিষয়ে লিখিতভাবে আজিম জানান, ওই সময়ের ঘটনার ভিডিওটি খ-িতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। মূলত তৎকালীন ব্রুনাইয়ে মানবপাচারকারী ও দালালচক্রের অত্যাচারে সাধারণ শ্রমিকরা অসহায় ছিলেন। অতিষ্ঠ শ্রমিকরা নিরুপায় হয়ে দূতাবাসের সাহায্য কামনা করতেন। ওই প্রভাবশালী দালালচক্র ক্ষিপ্ত হয়ে দূতাবাসে প্রবেশ করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর চড়াও হয়। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং তাদের গ্রেপ্তার করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
সার্বিক বিষয়ে বক্তব্য জানতে বিমানের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. শাফিকুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Comment here