বৈশাখের চড়া দাম ইলিশের - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

বৈশাখের চড়া দাম ইলিশের

বৈশাখ দিয়ে শুরু হয় বাংলা পঞ্জিকার মাস গণনা। এ জন্যই এর প্রথম দিনটি বাঙালিরা উদ্‌যাপন করতে চায় একটু ভিন্নভাবে। আর এই ভিন্নতায় সাম্প্রতিক সংযোজন পান্তা ইলিশ। বৈশাখের প্রথম প্রহরে খাবারের তালিকায় মানুষ চায় এক টুকরো ইলিশ ভাজির সঙ্গে এক থালা পান্তা।

ইলিশের এই সংযোজন চৈত্রে মাছের বাজারে সবার বাড়তি নজর টানে। সবাই চায় একটা ভালো আকারের ইলিশ কিনতে। ফলে বাজারে চাহিদা যায় বেড়ে। অন্যদিকে এখন মৌসুম না হওয়ায় ইলিশের সরবরাহ কমে যায়। এতে অর্থনীতির স্বাভাবিক সূত্রে ইলিশের দামটা হু হু করে বেড়ে যায়।

দেশের অন্যতম বড় ইলিশ সরবরাহের আড়তগুলোর কয়েকটি পটুয়াখালীতে। এমন একটি আড়ত পটুয়াখালীর মহিপুরের আকন মৎস্য আড়ত। ওই আড়তের মালিক মো. মালেক আকন জানান, কিছুদিন আগেও সাগর থেকে ট্রলার ভর্তি করে ইলিশ নিয়ে আসতেন জেলেরা। প্রতিদিন প্রায় ৫০০ থেকে ৮০০ টন ইলিশ আসত এখানে। কিন্তু এখন ইলিশ আসে না বললেই চলে। বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২ টনের মতো ইলিশ আসছে।

পটুয়াখালীর মাছের বাজারে ঘুরে প্রথম আলোর প্রতিনিধি জানাচ্ছেন, মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে ইলিশের দাম দুই গুণের ওপর বেড়েছে। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) পটুয়াখালী শহরের নিউমার্কেট, লঞ্চঘাট ও মহিপুর মৎস্য বন্দরে ইলিশের আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পেয়েছেন তিনি।

ওই বাজারে ইলিশের বড় ব্যবসায়ী মো. মনির হাওলাদার। তিনি বলেন, পয়লা বৈশাখ সামনে রেখে প্রতিদিনই ইলিশের চাহিদা বাড়ছে। তবে চাহিদা অনুযায়ী বাজারে ইলিশ আসছে না। তিনি বলেন, গতকাল চারটি ইলিশে এক কেজি হলে তা বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকা দরে। দুটি ইলিশে এক কেজি হলে বিক্রি হয়েছে ৯০০ টাকা দরে। এক কেজির একটু কম ওজনের প্রতি কেজি ১ হাজার ৫০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে এক কেজির থেকে বড় ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর এর থেকে বড় হলে সেই ইলিশ কেজিপ্রতি প্রায় ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

মো. শহিদুল ইসলাম একজন সরকারি চাকরিজীবী। তিনি পটুয়াখালী বাজারে এসেছিলেন ইলিশ কিনতে। দাম শুনে হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘ছেলেমেয়েরা আবদার করেছিল পয়লা বৈশাখে ইলিশ লাগবে। দুই দিন ধরে বাজারে আসছি। কিন্তু দাম এত বেশি যে কিনতে পরছি না।’

এদিকে ইলিশ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে দাম বেড়ে যাওয়ার আরও একটি কারণ জানা গেছে। তাঁরা বলেন, একে ইলিশ কম ধরা পড়ছে। তারপর আবার বড় সাইজের ইলিশ মহাজনেরা কিনে মজুত করে রাখছেন। পরে পাঠিয়ে দিচ্ছেন ঢাকা-চট্টগ্রামে।

পটুয়াখালী সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, চৈত্র ও বৈশাখ মাসে আবহাওয়ার কারণে ইলিশ কম ধরা পড়ে। অন্যদিকে জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি রয়েছে। মৎস্য বিভাগ থেকে নিয়মিত নদীতে অভিযান চালানো হচ্ছে। ফলে নদীতে জেলেরা কম নামছেন। এ জন্য বাজারে তেমন একটা ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না।

Comment here