ক্রাইম

মিন্নি জামিন পেলেন না

বরগুনার বহুল আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় এক নম্বর সাক্ষী থেকে আসামি হওয়া তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ রোববার সকালে মিন্নির জামিন আবেদন করে মামলাটি আদালতের কার্যতালিকায় তোলা হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে তার জামিন শুনানি শুরু হয়। শুনানি শেষে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. সিরাজুল ইসলাম গাজী মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

এ সময় আদালতে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের চার জন প্রতিনিধি, ব্লাস্টে পটুয়াখালী ও বরিশাল প্রতিনিধিসহ বরগুনা আদালতের ৩০ জন আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার প্রধান আইনজীবী ও বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, ‘রিফাত হত্যা মামলায় আজকে আমরা বিস্তারিত শুনানি করেছি। যেহেতু মিন্নি এখনো রিমান্ডে ও ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন এবং রাব্বি-রিফাত ফরাজি দাবি করছে যে মিন্নি এর সঙ্গে জড়িত সে কারণে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছেন।’

এর আগে গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরসহ মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনার পুলিশ লাইনে নিয়ে যায় পুলিশ। এর পর দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া তথ্য-উপাত্ত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ ও পুলিশের কৌশলী এবং বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আটকে যান মিন্নি। বেরিয়ে আসে হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততার প্রমাণ। এর পরই মিন্নিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পরের দিন বুধবার বিকেল ৩টার দিকে বরগুনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিন্নিকে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। পরে শুনানি শেষে মিন্নির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী।

উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বেলা তিনটার দিকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিফাতের মৃত্যু হয়।

পরের দিন ওই ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে বরগুনা থানায় ১২ জনের নামে এবং চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

এ মামলায় পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এখন পর্যন্ত এজাহারভুক্ত সাতজন (ছয়জন জীবিত) ও সন্দেহজনক সাতজন আসামিসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে। এজাহারভুক্ত গ্রেপ্তার চারজন এবং সন্দেহজনক ছয়জন আসামিসহ মোট ১০ জনকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া এজাহারভুক্ত দুজন এবং সন্দেহজনক একজনসহ মোট তিন আসামিকে আদালতের অনুমতিক্রমে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে এনে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। এ ছাড়া এই মামলায় পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা করছে পুলিশ।

Comment here

Facebook Share