মেট্রোরেল আজ থেকে পল্লবীতে থামবে - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
সারাদেশ

মেট্রোরেল আজ থেকে পল্লবীতে থামবে

নিজস্ব প্রতিবেদক : উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত দূরত্ব পৌনে ১২ কিলোমিটার। এ পথ পাড়ি দিতে মেট্রোরেলের সময় লাগছে ১০ মিনিটের মতো। আজ বুধবার থেকে মিরপুরের পল্লবী স্টেশনে থামা শুরু করবে মেট্রোরেল। উত্তরা ও আগারগাঁওয়ের মধ্যবর্তী স্টেশন পল্লবী থেকে যাত্রী ওঠানামা করতে পারবে। আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য স্টেশনে মেট্রোরেল থামানো হবে বলে জানিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।

উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেলের স্টেশন আছে ৯টি। উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ভাড়া ৬০ টাকা। মাঝখানে পল্লবীর ভাড়া ৩০ টাকা। অর্থাৎ উত্তরা বা আগারগাঁও যে কোনো গন্তব্য থেকে পল্লবী পর্যন্ত যাতায়াত করলে ভাড়া দিতে হবে ৩০ টাকা। একক যাত্রার ও স্থায়ী কার্ড দুভাবেই টিকিট কাটা যাচ্ছে। স্থায়ী কার্ড করতে নিবন্ধন করতে হয়। তবে একক যাত্রার টিকিটে নিবন্ধন লাগে না। স্থায়ী কার্ডে সময় সময় টাকা ভরতে হয় (রিচার্জ)। স্টেশনে রাখা ভেন্ডিং মেশিনে যাত্রী নিজেও টিকিট কাটতে পারেন। আবার টিকিট বিক্রির জন্য স্টেশনে কর্মীও আছেন।

গত ২৮ ডিসেম্বর দেশের প্রথম মেট্রোরেলের চলাচল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরদিন থেকে সাধারণ যাত্রীরা টিকিট কেটে চড়তে পারছেন। তবে এতদিন মেট্রোরেল উত্তর ও আগারগাঁওয়ের মাঝখানে কোনো স্টেশনে থামানো হয়নি।

মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে আছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। সংস্থাটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আজ থেকে মেট্রোরেলের চলাচলের সময়েও কিছু পরিবর্তন আসবে। সকাল আটটায় স্টেশনের গেট খোলা হবে। তখন যাত্রীরা ভেতরে প্রবেশ করে টিকিট কাটবেন। এরপর ট্রেন ছাড়া হবে সকাল সাড়ে আটটায়। শুরু থেকে সকাল আটটায় গেট খোলার সঙ্গে সঙ্গেই ট্রেন চলাচল করে আসছে। এ ছাড়া কাল থেকে মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ হবে দুপুর ১২টার পরিবর্তে সাড়ে ১২টায়।

ডিএমটিসিএল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যাত্রীদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রেন চলাচল শুরুর আধা ঘণ্টা আগে গেট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুরু থেকে মেট্রোরেল দিনে চার ঘণ্টা চলাচল করছে। শুধু বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে ২২ জানুয়ারি সকাল আটটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল করেছে।

ডিএমটিসিএল সূত্র জানায়, আগামী মাসে আরও নতুন দু-একটি স্টেশনে মেট্রোরেল থামানোর পরিকল্পনা আছে। এ ক্ষেত্রে কোন স্টেশনে আগে থামানো হবে, এটা এখনো ঠিক হয়নি। তবে পরবর্তী সময়ে মিরপুর ১০ নম্বরে থামানো হতে পারে। বর্তমানে মেট্রোরেলের স্টেশনে স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করা স্কাউটরা যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের আবাসস্থল ও গন্তব্য জানার চেষ্টা করছেন। এর মাধ্যমে কোন স্টেশন থেকে যাত্রী বেশি হতে পারে, এর একটা ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করছে কর্তৃপক্ষ। তবে এ ক্ষেত্রে যারা শখের যাত্রা বা দেখতে এসে চড়ছেন, তাদের মতামত আমলে নেওয়া হচ্ছে না। নিয়মিত যাত্রী ও মেট্রোরেলের লাইনের আশপাশের বাসিন্দাদের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

সরকার চলতি বছরের শেষদিকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালুর ঘোষণা দিয়েছে। কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেল চালুর পরিকল্পনা আছে ২০২৫ সালে। পুরো পথের দূরত্ব ২১ কিলোমিটার বেশি। এ পথে স্টেশন থাকছে ১৭টি। এটি এমআরটি লাইন-৬ নামে অভিহিত করেছে ডিএমটিসিএল।

এদিকে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি মেট্রোরেল লাইন ১-এর নির্মাণকাজ উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পূর্বাচলে জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে নির্মাণকাজের উদ্বোধন ও একটি ফলক উন্মোচন করবেন। এর মধ্য দিয়ে লাইন ১-এর ডিপোর কাজ শুরু হবে। লাইন ১-এর দুটি অংশ। প্রথমটি কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত। এই অংশ হবে পাতাল পথে। অন্য অংশটি নর্দ্দার যমুনা ফিউচার পার্কের কাছ থেকে পূর্বাচলের পথে। এটির শেষ স্টেশন ও ডিপো হবে পূর্বাচলের পিতলগঞ্জে। এই অংশ হবে উড়ালপথে। এমআরটি ১-এর মোট দৈর্ঘ্য ৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার। কমলাপুর থেকে বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল পর্যন্ত দূরত্ব ১৯ দশমিক ৮৭২ কিলোমিটার। এ পথে স্টেশন হবে ১২টি। অন্যদিকে নর্দ্দা থেকে পূর্বাচল পথের দূরত্ব ১১ দশমিক ৩৬৯ কিলোমিটার। এই অংশ সম্পূর্ণ উড়াল ও স্টেশন থাকবে নয়টি।

 

Comment here