নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস জয় করলেও এখনো ঝুঁকিমুক্ত নন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তবে এই অসুস্থ শরীর নিয়েই আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বনানী কবরস্থানে যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় বনানী কবরস্থান জামে মসজিদে মোহাম্মদ নাসিমের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে মোহাম্মদ নাসিমকে বনানী কবরস্থানে তার মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়। তার আগে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে রাজধানীর সোবহানবাগ মসজিদে নাসিমের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
বনানীতে মোহাম্মদ নাসিমের দ্বিতীয় জানাজায় অংশ নিয়ে তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এ সময় তার সঙ্গে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দপ্তর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মোহাম্মদ নাসিমের মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর বনানী কবরস্থানে ইতিপূর্বে সমাহিত ব্যক্তিদের জন্য দোয়া ও মোনাজাত করেন।
ডা. মহিবুল্লাহ খন্দকার দৈনিক মুক্ত আওয়াজকে জানান, গতকাল শনিবার রাতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী যখন জানতে পারেন যে তিনি করোনামুক্ত হয়েছেন, তখনই তিনি মোহাম্মদ নাসিমের জানাজায় অংশ নেওয়ার প্রবল ইচ্ছা পোষণ করেন। তখন তিনি বলেন, ‘আমি যদি মোহাম্মদ নাসিমের জানাজায় গিয়ে মারাও যাই, তবুও আমি তার জানাজায় যেতে চাই।’
জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু জানান, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বনানী কবরস্থান থেকে ১১টা ৩০ মিনিটে সরাসরি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে কেবিনে চলে আসেন। তিনি করোনামুক্ত হওয়ায় মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করেন।
উল্লেখ্য, গতকাল শনিবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটের দিকে টানা ৯ দিন ধরে লাইফসাপোর্টে থাকা নাসিমকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। তার বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। তিনি স্ত্রী ও তিন সন্তান রেখে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর জাতীয় চার নেতার অন্যতম ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর ছেলে মোহাম্মদ নাসিম।
তার আগে গত ১ জুন শ্বাসকষ্ট নিয়ে রাজধানীর এই হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। পরে তার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে তিনি করোনা থেকে মুক্তি পেলেও ৫ জুন স্ট্রোক করেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে দ্রুত অস্ত্রোপচার করে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। তার চিকিৎসায় গঠন করা হয় মেডিকেল বোর্ড। তবে একপর্যায়ে তিনি চলে যান গভীর কোমায়। তার পরিবার বিদেশে নিতে চাইলেও তার সেই অবস্থাও ছিল না বলে চিকিৎসকরা জানান। গভীর কোমা থেকে শত চেষ্টায়ও তাকে আর ফেরাতে পারেননি চিকিৎসকরা।
Comment here