অনলাইন ডেস্ক :সারাবিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে গেছে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া মরণব্যাধী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ১৪জন শনাক্ত হয়েছেন, মারা গেঝেন একজন। চীনের পর ইতালি এ ভাইরাসে নাকাল। ধীরে ধীরে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস প্রবল আকার ধারণ করছে বিশ্বজুড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, মৌসুমি ফ্লু’র চেয়ে ১০ গুণ বেশি হন্তারক করোনাভাইরাস। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের ১৪ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর বাজে পরিস্থিতির শিকার হতে পারেন। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন, বয়োবৃদ্ধ ও শারীরিকভাবে অসুস্থ লোকজন।
বিশেষজ্ঞরা ৮টি কারণ নির্দিষ্ট করেছেন, এতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে যে কেউ। তাই বাড়তি সচেতনতার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
দৈনিক মুক্ত আওয়াজ অনলাইন পাঠকদের জন্য কারণগুলো তুলে ধরা হলো-
১. ডায়বেটিসে যারা আক্রান্ত, তাদের শরীরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি আছে সবচেয়ে বেশি। যুক্তরাজ্যের ডায়াবেটিস চিকিৎসক ডন হওয়ার্থ বলেছেন, সবচেয়ে বেশি বিপদে আছেন যারা ডায়বেটিসে আক্রান্ত। যদি কারও ডায়াবেটিস থাকে এবং কাশি হয়, শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, শ্বাসকষ্ট হয়; তাহলে ব্লাড সুগার পরীক্ষা করে দেখা দরকার।
২. যারা হার্টের সমস্যায় ভোগেন, তাদের শরীরে ইমিউন সিস্টেম এমনিতেই দুর্বল। করোনাভাইরাসে তারাও আক্রান্ত হতে পারেন যেকোনো সময়। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হলে, রোগীর শরীর শক্তিশালীভাবে তা প্রতিরোধ করতে পারবে না।
৩. ঠান্ডা, সর্দি, শুকনা কাশি করোনাভাইরাসের উপসর্গগুলোর মধ্যে বিদ্যমান। ফুসফুসের বাইরে ও ভেতরে বাতাস যাতায়াতে সাহায্য করে আস্ট্রা। অ্যাজমা রোগীরা সাধারণভাবেই এই সমস্যাগুলোর মধ্যে থাকেন। করোনায় আক্রান্ত হলে শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে তাদের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে অ্যাজমা রোগীদের ইনহেলার ব্যবহার করা উচিত। সচেতন না হলে প্রাণহানী ঘটতে পারে।
৪. ফুসফুসে সমস্যা বা যক্ষ্মা হলে করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকা কঠিন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যাদের এই সমস্যা রয়েছে, তাদের অবশ্যই নিয়ম মেনে চলা উচিৎ।
৫. ডায়বেটিস ও হার্টের সমস্যার চেয়ে বড় সমস্যা ক্যান্সার। যাদের ক্যান্সার রয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদের সেরে ওঠা বেশ কঠিন। রোগীদের শরীরে ইমিউন সিস্টেম এমনিতেই দুর্বল। তার উপর করোনাভাইরাস একজন রোগীকে সহজেই কাবু করে ফেলবে। মৃত্যু আশঙ্কাও অনেক।
৬. অনেকেই হজম সমস্যায় ভোগেন। পাকস্থলী নিয়ে বিপদে যারা আছেন, করোনাভাইরাস তাদের জীবনে যমদূত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা এ ধরনের সমস্যায় ভুগছেন, এ সময় তাদের বাড়তি সচেতন থাকা দরকার। করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার মতো ইমিউন সিস্টেম এ ধরনের সমস্যায় ভুগতে থাকা ব্যক্তিদের নেই।
৭. করোনাভাইরাস মোকাবিলার মতো কোনো ভ্যাকসিন এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। একে প্রতিরোধ করার একমাত্র উপায় ইমিউন সিস্টেম। যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল, তারা ঝুঁকিতে রয়েছেন। এজন্য প্যারাসিটামল না খাওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তারা।
৮. ধূমপায়ীদের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ঝুঁকি ১৪ গুণ বেশি। এই দুঃসময়ে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনাভাইরাসের প্রভাব এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৬৬টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রাণ হারিয়েছে ৭ হাজার ৯৮৮ জন, যার অধিকাংশই চীনের নাগরিক। সব মিলিয়ে এই ভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৬১২ জন।
Comment here