‘রাতারাতি’ বিপুল সম্পদের মালিক হন কাউন্সিলর রাজিব - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
ক্রাইম

‘রাতারাতি’ বিপুল সম্পদের মালিক হন কাউন্সিলর রাজিব

আদালত প্রতিবেদক : ‘রাতারাতি বিপুল সম্পদের মালিক বনে যান’ বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব (৩৮)। অস্ত্র মামলায় আদালতে দাখিলকৃত চার্জশিটে র‌্যাব-২ এর এসআই (নিরস্ত্র) প্রণয় কুমার প্রামাণিক এমন তথ্যই দিয়েছেন।

রাজিবের বিরুদ্ধে গত ২২ নভেম্বর আদালতে এ চার্জশিট দাখিল হয়। আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিমের মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ দিয়েছেন।

চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে, প্রকাশ্যে ও গোপন তদন্তে জানা যায় যে, তারেকুজ্জামান রাজিব দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্ত্র নিজের কাছে রেখে তার সহযোগিদের সহযোগিতায় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করে ভূমিদস্যুতা, চাঁদাবাজি, অবৈধ দখলদারিত্ব এবং মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আসামি অত্যন্ত ধূর্ত ও চালাক প্রকৃতির। ভয়ে তার কেউ বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস করে না।

তদন্তে আরও জানা যায় যে, রাজিবের নামে মোহাম্মদপুর, চাঁদ উদ্যান, রায়েরবাজার বেড়ীবাঁধ এলাকায় নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি (জায়গা, ফ্ল্যাট) রয়েছে। তিনি একাধিক নতুন নতুন ব্র্যান্ডের যানবাহন ব্যবহার করেন, যা মূলত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর রাতারাতি এসব সম্পদ অর্জন করেন। স্থানীয় তদন্তে আসামির স্বভাব-চরিত্র সন্দেহজনক বলে জানা যায়।

এর আগে গত ১৯ অক্টোবর রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাড়ি থেকে তারেকুজ্জামান রাজিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন র‌্যাব-১ এর ডিএডি মিজানুর রহমান। র‌্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের উপস্থিতিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। রাজিবের দখলে ও নিয়ন্ত্রনে থাকা অস্ত্র ও গুলি এবং অবৈধ মাদক উদ্ধার করা হয়। অস্ত্রের মধ্যে একটি অবৈধ পিস্তলসহ তিন রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগজিন ছিল।

মামলাগুলোয় গত ২১ অক্টোবর রাজিবের সাত দিন করে ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ৪ নভেম্বর রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর অস্ত্র আইনের মামলায় গত ১১ নভেম্বর ফের চার দিন এবং ১৫ নভেম্বর মাদক মামলায় ফের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর গত ১৯ নভেম্বর রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।

প্রসঙ্গত, রাজীব ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। তিনি মোহাম্মদপুর থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। এক মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে তিনি আবার ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হন। সে নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন। তার বাবা রডের মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন। তার চাচা ছিলেন রাজমিস্ত্রি। কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই রাজীবের পরিবর্তন শুরু হয়।

Comment here