দেশে রেমিট্যান্সের পর রপ্তানি আয়েও ধস নেমেছে। গত অক্টোবর মাসে দেশে ৪ হাজার ৩৫০ কোটি ডলার। আগের বছরের অক্টোবরের চেয়ে গত অক্টোবরে ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ কম রপ্তানি আয় এসেছে।
আজ বুধবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত রপ্তানি আয়ের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরের চতুর্থ মাস অক্টোবরে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ধরা ছিল ৫ হাজার কোটি ডলার। আয় এসেছে ৪ হাজার ৩৫০ কোটি ডলার। গত বছরের অক্টোবরে আয় হয়েছিল ৪ হাজার ৭৩০ কোটি ডলার। অর্থাৎ গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে এ বছরের একই সময়ে ৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ রপ্তানি আয় কম হয়ছে। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি আয় কমেছে ১২ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
তৈরি পোশাকের রপ্তানিকারকরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। এসব দেশের ক্রেতারা পোশাক কেনাকাটা কমিয়ে দেওয়ায় খুচরা বিক্রেতারা ক্রয়াদেশ কমিয়ে দিয়েছেন। তাছাড়া আগের অর্ডার দেওয়া পোশাকও অনেকে নিতে চাচ্ছেন না। এ জন্য এ খাতে রপ্তানি আয়ে ধস নেমেছে।
এদিকে, গত সেপ্টেম্বরের চেয়ে অক্টোবরে আরও কম এসেছে রেমিট্যান্স। অক্টোবরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৫২ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৫ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা। গত আট মাসের মধ্যে এটিই প্রবাসীদের পাঠানো এক মাসে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গত ২০২১-২২ অর্থবছরের অক্টোবর মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৬৪ কোটি ৬৮ লাখ ডলার বা ১ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে এবার ১২ কোটি ১৪ লাখ ডলার কম এসেছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে দেশে ১৫৪ কোটি (১৫৩ কোটি ৯৫ লাখ ডলার) ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। গত অর্থবছরের সেপ্টেম্বরের চেয়ে তা এক কোটি ৪১ লাখ ডলার কম।
এর আগে চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) দেশে ২ বিলিয়ন ডলার করে রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। সেপ্টেম্বর থেকে কমা শুরু হয় রেমিট্যান্স। অক্টোবর মাসে তা আরও কমল রেমিট্যান্স।
আর্থিক খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেমিট্যান্সের ওপর সরকার প্রণোদনা দিচ্ছে। রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়াতে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ অথরাইজড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) যৌথভাবে ব্যাংকগুলোকে রেমিট্যান্স কেনার জন্য দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। তাতেও নিম্নগামী হচ্ছে দেশের রেমিট্যান্স। গতকাল মঙ্গলবার থেকে নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামীতে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে।
Comment here