শত গুঞ্জনেও চুপ পরিণীতি - দৈনিক মুক্ত আওয়াজ
My title
বিনোদন

শত গুঞ্জনেও চুপ পরিণীতি

বিনোদন ডেস্ক : পরিণীতি চোপড়া এবং রাঘব চড্ডার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। বলিউডে টক অফ দ্য টাউন হয়ে উঠেছেন তারা। শোনা যাচ্ছে, খুব শীঘ্রই বিয়ে করতে চলেছেন দু’জন। সরাসরি এ নিয়ে অভিনেত্রী বা রাজনীতিক কিছু না বললেও দুই তারকা বুঝিয়ে দিচ্ছেন যে খুব শীঘ্রই তারা সুখবর দেবেন। সেই কারণেই হয়ত প্রেমের গুঞ্জনের মাঝে রাঘবের পোস্ট করা একটি ভিডিও তে লাইক দিলেন পরিণীতি।

আলিয়া ভাট, সিদ্ধার্থ মালহোত্রা, বরুণ ধাওয়ান এবং পরিণীতি চোপড়া বলিপাড়ায় প্রায় একই সময়ে পা রেখেছেন। পরিণীতির সমকালীন তারকারা সকলেই জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন। কিন্তু পরিণীতি এ বিষয়ে চুপ। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন তবে কি নায়িকা চুপিচুপি সবকিছু সেরে ফেলবেন? আম আদমি পার্টির নেতা রাঘব চড্ডার সঙ্গে কি বাগদান সেরে ফেলেছেন অভিনেত্রী?

রাঘব এবং পরিণীতির সম্পর্ক নিয়ে বলিপাড়ায় গুঞ্জন অনেক দিনের। কিন্তু অভিনেত্রী মুখে কুলুপ এঁটেছেন। সম্পর্ক নিয়ে, বাগদান নিয়ে এমনকি কবে বিয়ে করছেন— তা নিয়েও মুখ খুলতে রাজি নন তিনি। তবে, এই আচরণ নতুন কিছু নয়। পরিণীতিকে এই রূপে এর আগেও দেখেছে বলিউড।

ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে বরাবর নিশ্চুপ থেকেছেন পরিণীতি। বলিপাড়ার জনপ্রিয় দুই পরিচালকের সঙ্গে বহু বছর সম্পর্কে থাকার পরেও তা আড়ালে রেখেছিলেন অভিনেত্রী। এমনকি, তাকে নিয়ে গুঞ্জন ছড়ালেও প্রতিক্রিয়াহীন থেকেছেন সব সময়।

অভিনয়ের মাধ্যমে নয়, পরিণীতির সঙ্গে বলিউডের যোগাযোগ অন্য সূত্রে। প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার তুতো বোন হিসাবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। অনেকেই অনুমান করেছিলেন যে, দিদির পদাঙ্ক অনুসরণ করে পরিণীতিও একদিন অভিনয়ে নামবেন। কিন্তু বলিপাড়ায় তিনি কাজ শুরু করেছিলেন অন্য ভাবে।

পড়াশোনা শেষ করার পর যশরাজ ফিল্মসের সঙ্গে যুক্ত হন পরিণীতি। সংস্থার মার্কেটিং বিভাগে কাজ করতেন তিনি। নিজের কাজে এতটাই দক্ষ ছিলেন যে, সকলের ভরসার পাত্রি ছিলেন তিনি। সেই সূত্রেই পরিণীতির আলাপ হয় বলি পরিচালক মণীশ শর্মার সঙ্গে।

যশরাজ ফিল্মসের সঙ্গে পরিচালক হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন মণীশ। অন্য ধাঁচের গল্প বুনতে পারতেন বলে আদিত্য চোপড়া তার সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিলেন। ২০১০ সালে ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’ সিনেমাটি মুক্তি পায়। এই সিনেমার পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন মণীশ।

‘ব্যান্ড বাজা বারাত’ সিনেমাতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের জন্য নতুন মুখ খুঁজছিলেন আদিত্য এবং মণীশ। অভিনেতার চরিত্রে রণবীর সিংহকে পছন্দ হলেও নায়িকার চরিত্রে কে অভিনয় করবেন- তা নিয়ে মণীশের মত আলাদা ছিল। আনুষ্কা শর্মাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়ার আগে আদিত্যকে অন্য এক নায়িকার নাম জানিয়েছিলেন মণীশ।

একই জায়গায় কাজ করার কারণে পরিণীতির সঙ্গে মণীশের বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল। মণীশ জানতেন যে, পরিণীতি অভিনয়ের জন্যই তৈরি হয়েছেন। তাই ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’ সিনেমায় নায়িকার জন্য আনুষ্কা নয়, বরং পরিণীতির কথা জানিয়ছিলেন আদিত্যকে।

কিন্তু মণীশের প্রস্তাব খারিজ করে দেন আদিত্য। তিনি ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’ সিনেমার জন্য রণবীর এবং আনুষ্কাকেই বেছে নেন। কিন্তু পরিণীতির কথা ভোলেননি তিনি। ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’ সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার এক বছরের মধ্যেই মুক্তি পায় ‘লেডিজ ভার্সেস রিকি বহেল’ সিনেমাটি। যশরাজ ফিল্মস প্রযোজিত এই সিনেমাটির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন মণীশ।

‘লেডিজ় ভার্সেস রিকি বহেল’ সিনেমার জন্য রণবীর সিংহকে আবার অভিনেতা হিসাবে বেছে নেন আদিত্য এবং মণীশ। চিত্রনাট্যের খাতিরে এই সিনেমাতে চার জন নায়িকার প্রয়োজন ছিল। আনুষ্কা শর্মাকে আবার রণবীরের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা গেলেও বাকি দুই অভিনেত্রীর মধ্যে ছিলেন পরিণীতিও। এ ছাড়া দীপান্বিতা শর্মা এবং অদিতি শর্মা এই সিনেমাতে অভিনয় করেছিলেন।

বন্ধুত্বের খাতিরে পরিণীতিকে অভিনয়ের সুযোগ দিয়েছিলেন মণীশ, এমনটাই অনুমান করেছিলেন বলিপাড়ার একাংশ। ‘ব্যান্ড বাজা বারাত’ সিনেমাতে কাজ করার পর আদিত্য তার পরবর্তী সিনেমাতে অভিনেত্রীর ভূমিকায় বেছে নেন পরিণীতিকে।

যশরাজ ফিল্মস প্রযোজিত ‘ইশকজাদে’ সিনেমাতে পরিণীতির বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন অর্জুন কাপূর। কানাঘুষো শোনা যায় যে, এই সিনেমাতে পরিণীতিকে নায়িকার চরিত্রে নেওয়ার জন্য আদিত্যকে অনুরোধ করেছিলেন মণীশই। মণীশের কারণেই অভিনেত্রী হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন পরিণীতি।

‘ইশকজাদে’ মুক্তি পাওয়ার এক বছর পর মণীশের পরিচালনায় মুক্তি পায় ‘সুদ্ধ দেশি রোম্যান্স’। এই সিনেমাতেও পরিণীতিকে অভিনয় করতে দেখা যায়। মণীশের সঙ্গে যে পরিণীতির শুধুমাত্র বন্ধুত্বের সম্পর্ক নেই, তা তখনই আঁচ পেয়েছিলেন আদিত্য।

এমনকি বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায় যে, মণীশের সঙ্গে সম্পর্কে এসেছিলেন পরিণীতি। কিন্তু দু’জনের কেউই প্রকাশ্যে তাদের সম্পর্কের ব্যাপারে কিছু জানাননি। পরিণীতি এবং মণীশকে কোনও অনুষ্ঠান বা শুটিং সেটের বাইরে কোথাও একসঙ্গে দেখাও যায়নি।

শোনা যায়, নিজেদের সম্পর্ক লুকিয়ে রাখতে দেশের বাইরে ঘুরতে যেতেন পরিণীতি এবং মণীশ। কাজ নিয়ে হাজারো ব্যস্ততা থাকলেও তার ফাঁকে দু’জনে সময় বার করে ঘুরতে যেতেন।

আরও শোনা যায়, ‘ফ্যান’ সিনেমার শুটিং চলাকালীন পরিণীতির সঙ্গে কথা বলারও বিশেষ সময় পাননি মণীশ। তাই শুটিংয়ের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যাওয়ার পর রোমে লম্বা ছু়টি কাটাতে গিয়েছিলেন দু’জন।

কিন্তু মণীশ এবং পরিণীতির সম্পর্কে ছেদ পড়ে। ২০১৭ সালে যশরাজ ফিল্মস প্রযোজিত ‘মেরি প্যারি বিন্দু’ সিনেমার শুটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন পরিণীতি। সিনেমাটি বক্স অফিস থেকে আশানুরূপ সাড়া না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন অভিনেত্রী। বলিপাড়ার একাংশের অনুমান, তার পরেই মণীশের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায় পরিণীতির।

মণীশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে পরিণীতিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এক সাক্ষাৎকারে জানান, মণীশ তার ভালো বন্ধু। মণীশের সঙ্গে তার নাম বিভিন্ন ক্ষেত্রে জড়িয়েছে, সে খবর অভিনেত্রীর কানে এসেছে। কিন্তু তিনি এই ব্যাপারে উদ্বিগ্ন নন।

শুধুমাত্র মণীশের ব্যাপারেই নয়, বলিপাড়ার আরও এক পরিচালকের সঙ্গে সম্পর্কে এসেছিলেন পরিণীতি। সেই বিষয়েও প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি অভিনেত্রী। বলিপাড়ায় গুঞ্জন শোনা যায়, মণীশের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর চরিত দেসাইয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি।

বলিউডে সহকারী পরিচালক হিসাবে কাজ করেন চরিত। প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে নিক জোনাসের বিয়ের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন তিনি। পরিণীতির সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে বলিপাড়ায় গুঞ্জন শোনা যায়।

বলিপাড়ার একাংশের অনুমান, ২০১৬ সালে ‘ড্রিম টিম ট্যুর’-এ যাওয়ার সময় চরিতের সঙ্গে পরিণীতির আলাপ হয়। এই অনুষ্ঠানে পরিণীতি, আলিয়া ভাট, সিদ্ধার্থ মালহোত্রা, বরুণ ধাওয়ান, আদিত্য রায় কাপূরের মতো তারকারা আমেরিকার বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠান করেছিলেন। এই অনুষ্ঠান চলাকালীন তারকাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপ ‘বিহাইন্ড দ্য সিনস’ শুট করার দায়িত্বে ছিলেন চরিত। সেখান থেকেই পরিণীতির সঙ্গে তার বন্ধুত্ব হয় এবং সেই বন্ধুত্ব অবশেষে প্রেমে গড়ায়। কিন্তু স্বভাববশত পরিণীতি তার সঙ্গে চরিতের সম্পর্ক নিয়েও মুখ খোলেননি।

এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি কিছু অস্বীকার করছি না। আবার কিছু মেনেও নিচ্ছি না। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কথা বলা একদম পছন্দ করি না আমি। বরং আমার জীবনের এই অংশটুকু সকলের কাছে রহস্য হয়ে থাকুক।’ সূত্র: আনন্দবাজার

 

Comment here