নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আদমজী শাহী জামে মসজিদে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ সোমবার সকালে আদমজী-চাষারা সড়ক অবরোধ করে রাখে বিহারি কলোনির বাসিন্দারা। খবর পেয়ে সকাল ৯টায় ঘটনাস্থলে আসেন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপরাধ আমির খসরু। তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে তাদের মধ্য থেকে অতর্কিত পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়।
এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে প্রায় অর্ধশতাধিক টিয়ারশেল ও কয়েকশ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এরপর প্রায় ঘণ্টাব্যাপী পুলিশ ও বিহারিদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে সোয়া ১০টার দিকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সিরাজ মণ্ডল ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হন। এ সময় তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা করেন।
একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা বেলা সাড়ে ১০টায় সরে যায়। পরে পৌনে ১১টায় বিহারিরা আবার আদমজী নতুন বাজারে এসে অবস্থান নেয় এবং আবারও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। তখন নাসিক ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন। পরে তিনি বিহারিদের বুঝিয়ে আবার ক্যাম্পের ভেতরে নিয়ে যান।
এর আগে, গত শুক্রবার (১০ জুন) দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই সৈয়দ আজিজুল হক হামলার শিকার হন। এ সময় তাকে রক্ষা করতে গিয়ে মসজিদটির সভাপতি জয়নাল আবেদীন এবং সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন রবিন আহত হন।
এ ঘটনায় গত শনিবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মির্জা শহীদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ৫০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১২০-১২৫ জনকে আসামি করা হয়। ঘটনার পরদিন রোববার রাতে পুলিশ আদমজী বিহারি কলোনিতে অভিযান চালিয়ে ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, গ্রেপ্তার ৩৬ জনকে আজ আদালতে তোলা হবে। সর্বশেষ এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বেলা সোয়া ১১টায় পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলে জানান তিনি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শনিবার আদমজী শাহী জামে মসজিদে জুমার নামাজে ভারতের ঘটনার বিষয়টি উল্লেখ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই সৈয়দ আজিজুল হক একটি বক্তব্য দেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, ভারতের বিষয়টি যাতে আমাদের দেশে কোনো প্রভাব ফেলতে না পারে এবং কোনো বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি না হয়। এ বক্তব্যের জের ধরে কিছু উচ্ছৃঙ্খল তার ওপর হামলা করে।
মামলায় আরও বলা হয়, তিনি ৬ নম্বর বিট ইনচার্জ হিসেবে ওই এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরে মাদক, কিশোর গ্যাং বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আসছিলেন। মামলায় উল্লেখিত এবং অজ্ঞাতনামারা তার ওপর রাগের বশতবর্তী হয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটায়।
Comment here